
কলকাতা: এসএসসির নতুন পরীক্ষা ঘিরে আশঙ্কার মেঘ। অযোগ্যের সংখ্যা নিয়ে দ্বন্দ্ব এবার সুপ্রিম কোর্টেও। ১৮০৬ নয়, সংখ্যাটা বাড়বে- সুপ্রিম কোর্টে দাবি আইনজীবীদের। ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, যাঁদের নাম দাগি তালিকায় রয়েছে, তাঁরা এসএসসি-র ফ্রেস সিলেকশন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। অর্থাৎ তালিকা অনুযায়ী পরীক্ষায় বসতে পারবেন না এই ১৮০৬ জন। তবে যদি আরও অযোগ্য থেকে থাকে তাহলেই বিপদ। মামলাকারী আইনজীবীদের মতে, যদি সংখ্যাটা আরও বাড়ে, তাঁদের নাম তো নেই এই তালিকায়। অযোগ্যরা পরীক্ষায় বসলেই নতুন পরীক্ষা ঘিরে সমস্যা। সেক্ষেত্রে ফের আইনি জটে আটকে যেতে পারে নতুন পরীক্ষা। মামলার গেঁরোয় অনিশ্চিত হবে না তো শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া, প্রশ্ন বিরোধীদের।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গত শনিবার দাগি শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশ করেছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। সেই তালিকা নিয়েই এবার প্রশ্ন তুলে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। অনেক দাগির নাম নেই কেন তালিকায়, প্রশ্ন শীর্ষ আদালতের। কমিশনকে ফের খতিয়ে দেখার নির্দেশ বিচারপতির। ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে প্যানেল বাতিল করে দাগিদের নাম প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। সেই নির্দেশ না শুনে সুপ্রিম কোর্টে যায় এসএসসি। এবছরের এপ্রিলে হাইকোর্টের নির্দেশই বলবৎ রাখে শীর্ষ আদালত। তারপর দাগিদের নাম প্রকাশ্যে আনেনি। তারপর আবারও মামলা হয়। শেষমেশ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গত শনিবার তালিকা প্রকাশ।
সেখানেই গোলোযোগ। প্রথম তালিকা আপলোড করে উড়িয়ে দেয় কমিশন। দ্বিতীয় তালিকায় নাম ছিল ১৮০৪ জনের। শনিবার গভীর রাতে বিধায়ক কন্যার নাম জুড়ে ১৮০৬ জনের তালিকা প্রকাশ করে এসএসসি। সেই তালিকা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ শীর্ষ আদালতের। বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও বিচারপতি সতীশ চন্দ্র শর্মার বেঞ্চের প্রশ্ন, সিবিআই-এর তালিকায় আরও নাম ছিল, এখানে এত কম কেন? কমিশনের বক্তব্য ছিল, সিবিআই-এর তালিকায় যাঁদের নাম ছিল, তাঁদের সবাইকে নিয়োগ করা হয়নি। যে দাগিরা নিযুক্ত হয়েছিলেন, তাঁদের নামই তালিকায় রয়েছে।
আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “রাজ্য সরকার বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে আসল কিছু অপরাধীকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে।” আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, “প্রথম যে তালিকা বার করেছে, সেটাকে তালিকা ১ বলে উল্লেখ করেছে, সেই রাতেই আমরা বলি, এক বিধায়কের মেয়ের নাম দেওয়া হয়নি। তারপর আবার আরেকটা সংযুক্তিকরণ আসে। ফলে পরিস্কার, কমিশনের পক্ষ থেকে যতটা পারছে, সংখ্যাটি কমিয়ে দেখানো হচ্ছে।” আইনজীবী বিকাশরঞ্জন বলেন, “আমরা মামলা করতে গিয়ে যতটা দেখেছি, তাতে অনুমান, সংখ্যাটা হাজার ছয়েকের ওপর হবে।” তাই এই নিয়োগ দুর্নীতি মামলার যবনিকা পতন কবে হবে, সেটাই দেখার।