টাকা না দেওয়ায় আটকে রাখা হল মরদেহ, এসএসকেএমের নজিরবিহীন আচরণে হতভম্ব ওয়াকিবহাল মহল
SSKM Hospital: ৩৮ হাজার টাকা বাকি রয়েছে। সেই টাকা না দিতে পারলে দেহ ছাড়া হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয় রোগী পরিবারকে। দেহ না পেয়ে মৃতার ৮০ বছরের বৃদ্ধ বাবা বসে থাকলেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
তন্ময় প্রামাণিক: কলকাতার এসএসকেএমের (SSKM) উডবার্ন ওয়ার্ডে ২০২ নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন এক রোগীর মৃত্যুর পর তাঁর দেহ ছাড়তে নারাজ কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ৩৮ হাজার টাকা বাকি রয়েছে। সেই টাকা না দিতে পারলে দেহ মর্গে পাঠানো হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয় রোগী পরিবারকে। দেহ না পেয়ে মৃতার ৮৭ বছরের বৃদ্ধ বাবা বসে থাকলেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। রাজ্যের অন্যতম প্রধান সরকারি হাসপাতালে এমন বেনজির ঘটনায় হতবাক ওয়াকিবহল মহল। সর্বস্তরে উঠেছে নিন্দার ঝড়।
জানা গিয়েছে, গড়িয়ার বাসিন্দা ৪৭ বছরের জনৈক বর্ণালী মণ্ডল গত ৪ জুন গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। শ্বশুরবাড়ি নয়, বাপের বাড়িতেই গার্হস্থ হিংসার শিকার হন বর্ণালী, এমনই অভিযোগ। শরীরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যাওয়া বর্ণালী দেবীকে চিকিৎসার জন্য আনা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। সেই হাসপাতাল থেকেই তিনি বাবা-মায়ের অত্যাচারের কথা লিখেছিলেন তাঁর বন্ধুদের।
এহেন বর্ণালী দেবীর মৃত্যু হয় রবিবার। কিন্তু সরকারি হাসপাতাল টাকার জন্য আটকে রাখা হয় তাঁর দেহ।এমন ঘটনায় হতভম্ব আত্মীয়-বন্ধুরা। পরিবারের দাবি, টাকা না দিলে মর্গে পাঠানো হবে না দেহ, এমন হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় হাসপাতালের তরফে। সরকারি হাসপাতালে যেখানে সুস্পষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে যে, টাকার জন্য দেহ আটকে রাখা যাবে না, সেখানে এমন ঘটনা নজিরবিহীন। যদিও কয়েক ঘণ্টা পর টাকা দেওয়ার পরই দেহ ছাড়া হয়। এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
সিপিএম নেতা তথা চিকিৎসক ফুয়াদ হালিম বলেন, এমন ঘটনা আইনত এটা অপরাধ। পরিবার মামলা করুন, তাহলে দোষীরা শাস্তি পাবেন। তিনি আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে আর্থিক ভাবে সকলেই প্রায় বিপর্যস্ত। সেই অবস্থায় বেসরকারি হাসপাতালে দেহ আটকে রাখার কথা হামেশাই শোনা যায়। কিন্তু এখন একই অপবাদ পাচ্ছে সরকারি হাসপাতালও। একে ব্যতিক্রমী এবং নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেন তিনি। বিজেপি নেতা তথা চিকিৎসক ইন্দ্রনীল খাঁনের কথায়, ‘রাজ্য কি বিবেক বন্ধ রেখেছে?’
আরও পড়ুন: Sultan Singh: প্রয়াত প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক সুলতান সিংহ, শোকজ্ঞাপন মুখ্যমন্ত্রীর
এদিকে এই ঘটনায় স্বাস্থ্য দফতরের এসএসকেএমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে বলে খবর। কারা এই ঘটনায় যুক্ত এবং ঘটনার সত্যাসত্য জানতে চেয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। তৃণমূল মন্ত্রী ও চিকিৎসক নির্মল মাঝির কথায়, মুখ্যমন্ত্রী এমন সব ঘটনা বরদাস্ত করেন না। কারা এর সঙ্গে যুক্ত খতিয়ে দেখা হচ্ছে।