SSKM Hospital: হার্ট বন্ধ করে অপারেশন, মা ও গর্ভস্থ সন্তানকে বাঁচিয়ে বিরাট নজির গড়লেন SSKM-এর ডাক্তারবাবুরা
Kolkata: কোচবিহারের বাসিন্দা জবা বর্মণ। তাঁর স্বামী নিতাই বর্মণ। পেশায় তিনি টোটোচালক। গত সেপ্টেম্বরে জবার শ্বাসকষ্টের উপসর্গ দেখা দেয়। সেই সময় ইকো পরীক্ষা করে ধরা পড়ে র্যাপচার্ড সাইনাস অফ ভালসালভা (RAPTURED SINUS OF VALSALVA) রোগে আক্রান্ত বছর একুশের এই তরুণী।

কলকাতা: আবারও নজির গড়ল সুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল। অন্তঃসত্ত্বা মহিলার হার্টের সফল অস্ত্রোপচার করল SSKM। মহিলার গর্ভে ছিল পাঁচ মাসের ভ্রুণ। সেই অবস্থায় প্রসূতির হার্ট বন্ধ করে অস্ত্রোপচারে নজির সিটিভিএস ডিপার্টমেন্টের। হৃদপিন্ড-ফুসফুস যন্ত্র যোগে অপারেশনে গর্ভস্থ ভ্রূণের নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা ছিল ৯০ শতাংশ। মায়েরও প্রাণের ঝুঁকি ছিল বিস্তর। প্রসূতির চিকিৎসায় সিটিভিএস, অ্যানাস্থেসিয়া,স্ত্রীরোগের চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত হয় মেডিক্যাল বোর্ড । বৃহস্পতিবার অস্ত্রোপচারের পর মা-সন্তান সুস্থ।
কোচবিহারের বাসিন্দা জবা বর্মণ। তাঁর স্বামী নিতাই বর্মণ। পেশায় তিনি টোটোচালক। গত সেপ্টেম্বরে জবার শ্বাসকষ্টের উপসর্গ দেখা দেয়। সেই সময় ইকো পরীক্ষা করে ধরা পড়ে র্যাপচার্ড সাইনাস অফ ভালসালভা (RAPTURED SINUS OF VALSALVA) রোগে আক্রান্ত বছর একুশের এই তরুণী। রোগীকে তৎক্ষণাৎ কলকাতায় এনে এসএসকেএমের কার্ডিওলজি বিভাগে দেখানো হয়।
র্যাপচার্ড সাইনাস অফ ভালসালভা আসলে কী রোগ?
মূলত, হৃদপিন্ড দিয়ে রক্ত শরীরের বিভিন্ন অংশে যায়। তবে এই রোগে মহাধমনীর একাংশ অস্বাভাবিক ভাবে প্রসারিত হয়। ফেটে যায়। তাতে মহাধমনী থেকে রক্ত হৃৎপিণ্ডের ডান দিকের প্রকোষ্ঠে চলে আসে। এর ফলে রোগীর তীব্র শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা-সহ অন্যান্য উপসর্গ দেখা দেয়। এমনকী, এটি ফেটে গেলে হৃদপিন্ডের গতিকেও বন্ধ করতে পারে। তার জেরে শরীরের কোনও অঙ্গ রক্ত না পাওয়ার ফলে সেই অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গুলো কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
জবাও আক্রান্ত হয়েছিলেন এই একই রোগে। কার্ডিওলিজ বিভাগ প্রথমে একটি যন্ত্র বসিয়ে রক্ত যাতে ডানদিকের প্রকোষ্ঠে প্রবাহিত না হয় তা আটকানোর চেষ্টা করে।কিছুদিনের মধ্যে যন্ত্রের পাশে ফুটো তৈরি হলে রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। জ্বর, জন্ডিস, রক্ত কমে যাওয়া শুরু হয় জবার। অস্ত্রোপচার জরুরি বুঝে এরপর তাঁকে সিটিভিএসে স্থানান্তর করা হয়।
গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যুর পাশাপাশি মায়ের শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম, সেপসিস ধরা পড়ার ঘটনা চিকিৎসকদের উদ্বেগ বাড়িয়েছিল। তবে এ সবের উপরে ছিল হাল না ছাড়ার মন্ত্র। কার্ডিওথোরাসিক, কার্ডিও অ্যানাস্থেসিয়া, পারফিউশন, স্ত্রীরোগ বিভাগের চিকিসৎসকদের পাশাপাশি নার্সদের নিয়ে ১৪ জনের একটি দল গড়া হয়। বৃহস্পতিবার মা-গর্ভস্থ সন্তানকে নতুন জীবন দিয়ে সরকারি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের মুখ উজ্জ্বল করল টিম এসএসকেএম (SSKM)।
জবার স্বামী নিতাই বর্মণ বলেন, “ডাক্তারা অনেক ভাল। এখানে আসার পরই ভর্তি হন। তারপরই ভাল চিকিৎসা করে সুস্থ করে তুলল।” কার্ডিওথোরাসিক প্রফেসর-চিকিৎসক শুভেন্দু শেখর মহাপাত্র বলেন, “মায়ের প্রাণের সংশয় ছিল। ওঁর জন্ডিস ছিল সঙ্গে আরও রোগ ছিল। তবে এই অপারেশন করে আমরা ভীষণ খুশি।”
