
সুজয় পাল
কলকাতা: ২০২২ সালের জুলাই থেকে জেলে রয়েছেন। সব মামলায় জামিন পেয়েছেন। কিন্তু, একটি মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ না হওয়ায় জেল থেকে ছাড়া পাচ্ছিলেন না। অবশেষে সোমবার আলিপুর বিশেষ সিবিআই আদালতে সেই সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হল। আর সেই সাক্ষ্য গ্রহণ শেষেই জেল থেকে ছাড়া পাচ্ছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এদিন সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হলেও প্রথমে পার্থর জামিন সংক্রান্ত পরবর্তী নির্দেশ স্থগিত রেখেছিলেন বিচারক। পরে পার্থর রিলিজ অর্ডার দেন। পার্থর সঙ্গে জেল থেকে ছাড়া পাচ্ছেন এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যও।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২০২২ সালের ২৩ জুলাই গ্রেফতার করা হয়েছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। ইডি, সিবিআইয়ের সব মামলায় তিনি জামিন পেয়েছেন। গত ২৬ সেপ্টেম্বর তাঁর বিরুদ্ধে নিয়োগ দুর্নীতির শেষ মামলাতে কলকাতা হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। কিন্তু, সুপ্রিম কোর্টের একটি শর্তের জন্য জেল থেকে এতদিন বেরতে পারেননি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। গত ১৮ অগস্ট সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, চার সপ্তাহের মধ্যে চার্জ গঠন করবে নিম্ন আদালত। তার পরে ২ মাসের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের জবানবন্দি নথিবদ্ধ করতে হবে। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হলে পার্থকে জেল থেকে ছাড়া হবে।
গত শুক্রবার শেষ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ অসম্পূর্ণ থেকে যায়। এদিন ফের ওই সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ হয়। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী জামিনে মুক্ত হওয়ার আগে যতটুকু সাক্ষ্য গ্রহণ করার প্রয়োজন ছিল, সেই সাক্ষ্য গ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় এদিন। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে প্রথমে পার্থর রিলিজ অর্ডার স্থগিত রেখেছিলেন বিচারক। পরে রিলিজ অর্ডার দেন। এই মুহূর্তে অসুস্থতার জন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। রিলিজ অর্ডার প্রেসিডেন্সি জেলে জমা পড়ার পরই ছাড়া পাবেন পার্থ। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর।
তিনি যে জেল থেকে ছাড়া পেতে মরিয়া, তা আগের শুনানিতেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন পার্থ। গত ২৮ অক্টোবর মামলার শুনানিতে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে পার্থ বলেছিলেন, জেল থেকে ছাড়া পেতে প্রয়োজনে নিজেই সওয়াল করতে চান। তিনি বলেছিলেন, “আমার কেসে (গ্রুপ সি) ১৪ তারিখ (নভেম্বর) পর্যন্ত সাক্ষ্য গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু, যেভাবে সাক্ষ্য গ্রহণ প্রক্রিয়া টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তাতে কিছু বোঝা যাচ্ছে না।” সেই ১৪ নভেম্বরের আগেই অবশ্য শেষ হল সাক্ষ্য গ্রহণ। এবার জেল থেকে জামিনে ছাড়া পাওয়ার পালা। তবে রাজনীতির ময়দানে তাঁকে আগের মতো দেখা যাবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা বাড়ছে।