কলকাতা: গত কয়েকদিন ধরে রাজ্য়ের একাধিক জায়গায় মিলেছে অস্ত্র কারখানার হদিশ। এবার কলকাতার (Kolkata) কাছেই একাধিক অস্ত্রসহ এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল রাজ্য পুলিশের এসটিএফ (STF)। আজ সোমবার বরানগর (Baranagar) এলাকা থেকে এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ৯টি ওয়ান শটার পিস্তল। সেগুলি বিহার থেকে বাংলায় নিয়ে আসা হচ্ছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে পুলিশ।
গত কয়েক দিন ধরে আসানসোলের একাধিক জায়গায় অস্ত্র কারখানার হদিশ পাওয়া গিয়েছে। তবে একেবারে শহরের উপকন্ঠে এ ভাবে একগুচ্ছ অস্ত্র উদ্ধার হওয়ায় তৈরি হয়েছে চাঞ্চল্য। ধত ব্যক্তিকে জেরা করে তথ্য বের করে আনার চেষ্টা করছে পুলিশ। কোথা থেকে ওই অস্ত্র আসছিল, কী কাজে লাগানোর পরিকল্পনা ছিল, সে সবই জানার চেষ্টা করবে পুলিশ।
গত মাসের শুরুর দিকেই আসানসোলের কুলটির দিশেরগড়ে অস্ত্র কারখানার হদিশ পান তদন্তকারীরা। অভিযান চালিয়ে ওই গোপন কারখানা থেকে সাতটি তৈরি ৭.৬২ পিস্তল, ২০টি অসম্পূর্ণ পিস্তল, ১৪টি তৈরি ম্যাগাজিন আর পাঁচটি অসম্পূর্ণ ম্যাগাজিন, ১৩ রাউন্ড গুলি ও অন্যান্য কিছু অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। তবে এই কারখানায় অস্ত্র পাচারের কারবার ছড়িয়ে ভিনরাজ্যেও বলে দাবি করেছেন গোয়েন্দা কর্তারা। পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২৩ সেপ্টেম্বর নাকা চেকিংয়ের সময়ে বরাকর চেকপোস্টে বিপুল অস্ত্র-সহ ধরা পড়েছিলেন আশ মহম্মদ নামে এক ব্যক্তি। ওই ব্যক্তিকে জেরা করে উঠে আসেএকের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, যোগীরাজ্য উত্তর প্রদেশেও ছড়িয়ে রয়েছে এই অস্ত্র কারবারের জাল। নাকা চেকিংয়ে ধৃত আশ মহম্মদের থেকে প্রথমে উদ্ধার হয়েছিল মোট ২৬টি পিস্তল আর ৪৬টি ম্যাগাজিন। তাকে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের পর এই কারবারের সঙ্গে যুক্ত উত্তর প্রদেশের ফিরোজাবাদের দুই ব্যক্তির সম্পর্কে জানতে পারে পুলিশ।
এরপর হীরাপুরেও মেলে বেআইনি অস্ত্র কারখানার হদিশ। হীরাপুর থানার রহমতনগর নয়াবস্তি এলাকায় অস্ত্র কারখানার খোঁজ পায় পুলিশ। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে, সোমবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় দু’জনকে আটক করা হয়।
কয়েকদিন আগে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলায় অস্ত্র কারখানার হদিশ পাওয়া যায়। জীবনতলা থানা এলাকার তাম্বুল দাহ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিবিরাবাদে কারখানার হদিশ মিলেছে গত শনিবার। দৃশ্যত গ্রিল কারখানা। কিন্তু তারই আড়ালে কুঠুরিতে তৈরি হত অস্ত্র। প্রতিবেশীরা তা টেরও পাননি। কিন্তু গোপন সূত্রে খবর পায় পুলিশ। বেশ কিছু দিন নজর রাখা হয় ওই কারখানার ওপর। বারুইপুর পুলিশ জেলার স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ ও জীবনতলা থানার যৌথ অভিযানে কারখানা থেকে প্রচুর পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করেছে। উদ্ধার হয়েছে প্রচুর অস্ত্র বানানোর সামগ্রীও। গ্রিল কারখানার আড়ালে এতদিন ধরে যে অস্ত্র তৈরি হত, তা ঘুনাক্ষরেও টের পাননি প্রতিবেশীরা।
আরও পড়ুন: Rosevalley Scam: রোজভ্যালি-কাণ্ডে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করল সিবিআই