RG Kar Hospital: আন্দোলনেই অনড় আরজি করের হবু চিকিৎসকরা, এদিকে চিকিৎসা না পেয়ে ধড়ফড়াচ্ছে রোগীরা
Student Protest: শনিবার সকাল থেকে এমার্জেন্সিতে আসা বহু রোগীকে চিকিৎসা ছাড়াই ফিরে যেতে হয়েছে। স্পষ্ট রোগী ও তাঁদের পরিজনদের বলা হচ্ছে এখানে কর্মবিরতি চলছে।
শহরের প্রথম সারির মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলির মধ্যে অন্যতম আরজি কর। প্রত্যেক দিন হাজার হাজার মানুষ এখানে চিকিৎসার জন্য আসেন। দূর দূরান্তের জেলা থেকে মুমুর্ষু রোগীকে আনা হয় শুধুমাত্র সুষ্ঠু পরিষেবার লক্ষ্যে। অথচ গত কয়েকদিন ধরে এই হাসপাতালের যা অবস্থা, তাতে বোঝার জো নেই এখানে জীব সেবা চলে।
অভিযোগ, শনিবার সকাল থেকে এমার্জেন্সিতে আসা বহু রোগীকে চিকিৎসা ছাড়াই ফিরে যেতে হয়েছে। স্পষ্ট রোগী ও তাঁদের পরিজনদের বলা হচ্ছে এখানে কর্মবিরতি চলছে। হাউজস্টাফ ইন্টার্নদের একাংশের কর্মবিরতি চলছে। চিকিৎসক নেই। অন্যত্র রোগী নিয়ে যাওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। মেডিক্যাল কলেজ থেকে যেহেতু এ ভাবে রোগী ফেরানো যায় না, তাই কোনও লিখিত দস্তাবেজ নেই। এদিকে রোগীকে বাঁচাতে অন্যত্র ছুটছেন বাড়ির লোক।
বরানগরের বাসিন্দা ঝরনা দাঁ। ৬৫ বছর বয়স। ডায়েরিয়া হয়েছে তাঁর। শনিবার সকালে ছেলে মাকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। জানালেন, এমার্জেন্সিতে ঢোকা মাত্রই বলে দেওয়া হয়েছে, এখানে কিছু করার নেই। এনআরএস বা কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
এমনও অভিযোগ, নিয়ম মেনে চিকিৎসকরা রাউন্ডে আসছেন না। ফলে রোগীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হল নাকি আরও খারাপ হচ্ছে, তাও দেখা হচ্ছে না। এদিকে অনশনকারীরা বার বার দাবি করেছেন, সবরকম চিকিৎসা পরিষেবা বহাল রেখেই তাঁরা আন্দোলন করেছেন। যদিও বাস্তবের ছবিটা মোটেই এ দাবিতে সিলমোহর দেয় না।
অন্যদিকে অনশনকারীরা কর্মবিরতি এখন বলছেন না। বলছেন, সলিডারিটি জানিয়ে সিজিপিএ, হাউসস্টাফেরা পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁদের। সিনিয়র রেসিডেন্ট, মেডিক্যাল অফিসারেরা অতিরিক্ত কাজ করে পরিষেবা সচল রেখেছেন। যদিও মুমূর্ষু রোগীদের অভিজ্ঞতা একেবারে উল্টো।
শুক্রবারই স্বাস্থ্য ভবনে স্বাস্থ্য সচিবের নেতৃত্বে ছয় সদস্যর একটি কমিটি তৈরি করা হয়। পাশাপাশি অধ্যক্ষ ও এমএসভিপি বাদ দিয়েই ছাত্র ছাত্রীদের সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দেওয়া হয়। স্বাস্থ্য ভবনে অনশনকারী প্রতিনিধিদের সঙ্গে স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্যের বৈঠক হয়। বৈঠকের পরে স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
যদিও আন্দোলনকারীরা এতে খুশি নন। তাঁদের বক্তব্য, “প্রিন্সিপ্যাল স্যার গত তিনমাস ধরে কলেজে ভয় ভীতির পরিস্থিতি তৈরি করেছেন। অগণতান্ত্রিক উপায়ে কলেজ চালিয়েছেন। আমাদের এটাই ভয়, অধ্যক্ষ যদি কলেজে থেকেই যান তা হলে এই কমিটির উপরও প্রভাব খাটাবেন।”
ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি, ‘স্বচ্ছ হাউজস্টাফশিপ কাউন্সেলিং, স্বচ্ছ স্টুডেন্ট কাউন্সিল, লেডিজ হস্টেলের ব্যবস্থা, নিরপেক্ষ হস্টেল কমিটি গঠন এগুলো তো কলেজ কর্তৃপক্ষের স্বাভাবিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। অনশনের ১২ তম দিনে এসে স্বাস্থ্য ভবনের হস্তক্ষেপে এই সব দাবি মেটানোর লিখিত আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। এখানে স্পষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং অধ্যক্ষ আমাদের দাবি দাওয়া মেটাতে অক্ষম। তাই আমরা আমাদের দাবিতেও অনড় থাকব। অধ্যক্ষের পদত্যাগ চাই।’
অথচ শুক্রবারই আরজিকরের ছাত্র ছাত্রীদের অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে অনড় থাকা নিয়ে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায়ের কড়া প্রতিক্রিয়া ছিল, ছাত্রদের অনড় অবস্থানের জন্য রোগী পরিষেবা ব্যাহত হলে তা কখনওই মেনে নেওয়া হবে না। যদিও বাস্তবে তা কতটা ফলপ্রসূ হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা শুরু।
আরও পড়ুন: Fake Voter Card: জলে ভেসেছে এলাকা, ড্রেন খুঁড়তে বেরিয়ে এল বস্তা বস্তা ভোটার কার্ড!