Subiresh Bhattacharya: ‘প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি হয়েছে’, হাইকোর্টের রোষের মুখে সুবীরেশ, খারিজ জামিনের আর্জি

Subiresh Bhattacharya: অযোগ্যদের হাতে আগামী প্রজন্মের শিক্ষার ভার তুলে দিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।

Subiresh Bhattacharya: প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি হয়েছে, হাইকোর্টের রোষের মুখে সুবীরেশ, খারিজ জামিনের আর্জি
কলকাতা হাইকোর্টে সুবীরেশ ভট্টাচার্যের মামলা

| Edited By: শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী

Dec 21, 2022 | 12:59 PM

কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতিতে সুবীরেশ ভট্টাচার্যের জামিনের আর্জি মামলায় অত্যন্ত কড়া পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের। সুবীরেশের জামিনের আর্জি খারিজ করেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ। এই মামলায় তাঁর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ, শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে। তাতে একদিকে অযোগ্যদের চাকরি দিয়ে যোগ্যদের বঞ্চিত করা হয়েছে, অন্যদিকে অযোগ্যদের হাতে আগামী প্রজন্মের শিক্ষার ভার তুলে দিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।

বুধবার হাইকোর্টে সুবীরেশ ভট্টাচার্যের জামিনের আর্জি মামলার শুনানি ছিল। এই মামলার সওয়ার জবাবের সময়ে বিচারপতির বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ ছিল। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী বলেন, “সমাজের এক জন হিসাবে কেউ কি আশা করতে পারেন না যে অন্তত শিক্ষক নিয়োগ স্বচ্ছভাবে হবে? সেখানেও দুর্নীতির অভিযোগ। এটা তো সমাজের সঙ্গে বেইমানি করা হল।”

সুবীরেশের আইনজীবী সওয়াল করেন, তাঁর মক্কেল এসএসসির চেয়ারম্যান থাকাকালীন নিয়োগ দুর্নীতি হয়নি। চেয়ারম্যান থাকার পর তিনি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরও ছিলেন সুবীরেশ।

এরপরই বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী বলেন, “তিনি তো আর ভারতের রাষ্ট্রপতির ভাইস চ্যান্সেলর নন। অতএব, আমরা এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত নই। এই নিয়োগ দুর্নীতিতে সুবীরেশের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ, সেটা দেখতে চাই।”

সুবীরেশের আইনজীবী বলেন, ” সুবীরেশবাবু পদে থাকাকালীন এই সব ঘটনা ঘটেনি। আমি এটা বলতে চাইছি। ২১ অক্টোবরের চার্জশিট মোতাবেক অভিযোগ, মৌখিক নির্দেশে প্রোগ্রামিং অফিসার নাকি উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) পরিবর্তন করেছেন। কম নম্বর পেয়েছেন এমন প্রার্থীদের বেশি নম্বর দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এসএসসির ওয়েবসাইটে নম্বর পরিবর্তন করা হয়েছে।” তিনি যুক্তি দেন, “যে সময়কার কথা, এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য তৈরি কমিটির মাথায় ছিলেন শান্তিপ্রসাদ সিনহা। সুবীরেশকে প্রথমে সাক্ষী হিসাবে ডাকা হয়েছিল। পরে গ্রেফতার করা হয়।”

সুবীরেশের উদ্দেশে বিচারপতি বাগচী বলেন,”আপনি একটি সংস্থার সর্বোচ্চ পদে ছিলেন। সেই জায়গায় কীভাবে আপনাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ এড়িয়ে যেতে পারেন? যিনিই অভিযোগ আনুক আপনার বিরুদ্ধে, আপনি এত দিন কেন সচেতন হননি?”

আইনজীবী সওয়াল করেন, “পদে না থেকে মৌখিক নির্দেশে কি এত বড় কাজ হতে পারে?” বিচারপতির ভর্ৎসনা, “সংস্থার প্রতিনিধি হিসাবে আপনার দায়িত্ব রয়েছে। এটা কোনও পোস্ট মাস্টারের চাকরি নয়। মনে রাখবেন এখানে শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে। এখানেই যদি দুর্নীতি হয় তা সমাজের পক্ষে অনেকটা ক্ষতিকর।”

এক্ষেত্রে বিচারপতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন। বিচারপতির মন্তব্য, “শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে। সমাজের এক জন হিসাবে কেউ কি আশা করতে পারেন না যে অন্তত শিক্ষক নিয়োগ স্বচ্ছ ভাবে হবে? সেখানেও দুর্নীতির অভিযোগ। এটা তো সমাজের সঙ্গে বেইমানি করা হল।”

এক্ষেত্রে একটি বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বুধবারই আবার সুবীরেশ ভট্টাচার্যের ভাগ্নেকে তলব করেছেন তদন্তকারীরা। তদন্তকারীদের দাবি নম্বরে গড়মিল করে নিজের ভাগ্নেকেও চাকরি করিয়ে দিয়েছেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য। সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই তাঁকে তলব করা হয়েছে।