কলকাতা: গত কয়েকদিন ধরেই দলের বিরুদ্ধে একের পর এক ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। দলের বিরুদ্ধে তুলেছেন একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ। বঙ্গ রাজনীতিতে চর্চিত ইস্যু হয়ে উঠেছে দলের তাঁর নারী ও অর্থকেন্দ্রীক খোঁচার ইস্যুটি। তাঁর দলছাড়া নিয়েও তৈরি হয়েছে একাধিক জল্পনা। সেই জল্পনাকে জিইয়ে রেখেই তা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিলেন বিজেপির বর্যীয়ান নেতা তথাগত রায় (Tathagata Roy)। টুইটে লিখলেন, ‘আপাতত বিদায়, পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি!’। এর অন্তনির্হিত অর্থ একাধিক। তবে দল ছাড়ছেন কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার স্পষ্ট বললেন, “ওঁ সিনিয়র লিডার। কী লিখেছেন তা ওঁর ব্যক্তিগত মত। ওঁ বর্তমানে বড় কোনও পদে নেই। সাধারণ সদস্য।”
তথাগত রায়ের একাধিক টুইট নিয়ে ইতিমধ্যেই বিড়ম্বনায় দল। সূত্রের খবর, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও তা নিয়ে অত্যন্ত বিরক্ত। তবে যেহেতু তথাগত রায় দলের বর্যীয়ান নেতা। তাই সহজেই তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে চায়নি দল। শনিবার সকালে পর পর তিনটি টুইট করেন তথাগত রায়। একটিতে লেখেন, ‘কারো কাছ থেকে বাহবা পাওয়ার জন্য আমি টুইটগুলো করছিলাম না। দলের কিছু নেতৃস্থানীয় লোক যেভাবে কামিনী-কাঞ্চনে গা ভাসিয়েছিলেন সেটা সম্বন্ধে দলকে সজাগ করার জন্য করছিলাম। এবার ফলেন পরিচীয়তে। পুরভোটের ফলের জন্য প্রতীক্ষায় থাকব। আপাতত বিদায়, পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি !’
কারুর কাছ থেকে বাহবা পাবার জন্য
আমি টুইটগুলো করছিলাম না। দলের কিছু নেতৃস্থানীয় লোক যেভাবে কামিনী-কাঞ্চনে গা ভাসিয়েছিলেন সেটা সম্বন্ধে দলকে সজাগ করার জন্য করছিলাম।
এবার ফলেন পরিচীয়তে। পুরভোটের ফলের জন্য প্রতীক্ষায় থাকব।
আপাতত বিদায়, পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি !— Tathagata Roy (@tathagata2) November 20, 2021
অপরটিতে লেখেন, ‘সলিল চৌধুরীর জন্মদিন উপলক্ষ্যে একটি টিভি চ্যানেলে এক গায়ক তাঁর একটি পুরোনো গান গাইছিলেন, যার কথা, “চাকা ঘুরবে না….ধোঁয়া উড়বে না …হরতাল…হরতাল”! আহা, পশ্চিমবঙ্গের জন্য কি উপযুক্ত গান ! ঝাল আন্ডা কি জয় !’
রাজ্য সভাপতির পদ থেকে দিলীপ ঘোষকে সরানোকে ‘সময়োচিত পদক্ষেপ’ বলে জানিয়েছিলেন তথাগত। সেই বিজেপি নেতা টিভি নাইন বাংলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে দিলীপ ঘোষ সম্পর্কে বললেন, ওঁনাকে নিয়ে কথাই বলতে চান না। কারণ উনি রবীন্দ্রনাথ ও রামকৃষ্ণকে নিয়ে খারাপ মন্তব্য করেছেন। তাঁর কথায়, “রাজ্য বিজেপিতে যে নতুন সভাপতি এসেছেন (সুকান্ত মজুমদার) তিনি আলাদা। ওঁর মানসিক গঠন আলাদা। উচ্চশিক্ষিত মানুষ।” তাঁর খোঁচা, ‘শিক্ষা-দীক্ষার তো একটা দাম আছে, অস্বীকার করার উপায় নেই।’
দু’জনেই সামলেছেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতির পদ। তবে বারংবার দিলীপ ঘোষকে আক্রমণ করে দলের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন তথাগত। আবার তথাগত রায়কে উদ্দেশ্য করে তির্যক মন্তব্য করেছেন দিলীপ ঘোষও। তাঁকে দল ছাড়ার নিদান দিয়েছেন। হাসতে হাসতেই দিলীপ ঘোষ তথাগতর উদ্দেশে বলে দিয়েছিলেন ‘দল ছেড়ে দিন।’ তথাগতর প্রতি তাঁর এই নিদান কি সত্য হতে চলেছে? বলবে সময়ই।
আরও পড়ুন: বাইকের পিছনে বসা হাত বাঁধা দুই নাবালিকা, পুলিশ ধরতেই কান্না শুরু! চাঞ্চল্যকর ঘটনা খাস কলকাতায়