কলকাতা: ছানি অপারেশন করতে দৃষ্টি শক্তি খোয়াতে বসেছেন একাধিক বৃদ্ধ। এ খবর প্রকাশ্যে আসতেই গতকাল ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছিল নাগরিক মহলে। স্বাস্থ্য মহলের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। স্বাস্থ্য ভবনের চাপেই অত্যধিক প্রেশার নিতে গিয়ে অঘটন ঘটেছে সার্জেনদের? জোরালো হয়েছে এই প্রশ্নও। অবশেষে বর্ধমানে ছানি-কাণ্ডে চাপে পড়ে গলদ খুঁজতে তৎপর স্বাস্থ্য ভবন। চোখের আলো প্রকল্পে সরকারি পরিকাঠামোয় ছানি অপারেশন করাতে গিয়ে কী কারণে ১৫ জনের দৃষ্টিশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হল? তা জানতে বর্ধমান মেডিকেল কলেজের (Burdwan Medical College) পাশাপাশি রিজিওনাল ইন্সটিটিউট অব অবথার্মোলোজির কাছে রিপোর্ট তলব করল স্বাস্থ্য ভবন।
সূত্রের খবর, চোখের আলো প্রকল্পে ১৮ জনের চোখের ছানি অপারেশন হয়েছিল তারমধ্যে ১৫ জনের চোখের দৃষ্টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২ জনের চোখ কার্যত বাদ দিতে হবে বলে অভিযোগ করেছেন রোগীর পরিজনরা। পাশাপাশি ১০ জনের চোখের দৃষ্টিশক্তি ফেরা নিয়ে সন্দিহান রয়েছেন চিকিৎসকরা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চিকিৎসক সংগঠনগুলি বলছে অগস্টে স্বাস্থ্য ভবনের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়। যাতে বলা হয় ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের জুন-জুলাই পর্যন্ত ছানি অপারেশনের যে লক্ষ্যমাত্র ছিল তা পূর করতে পারেনি হাসপাতালগুলি। ১০৪টি সরকারি চক্ষু হাসপাতালের উপরেই ছিব এই লক্ষ্যমাত্রা। সূত্রের খবর, তারপরেই প্রতিমাসে সার্জেন পিছু ৬০টি অপারেশন বেঁধে দেওয়া হয়। চিকিৎসক সংগঠনগুলির দাবি দুটো শিফটে চোখের আলো প্রকল্পে ছানি অপারেশন করতে গিয়ে কার্যত রোগীদের অন্ধত্বের দিকে ঢেলে দেওয়া হচ্ছে। এর দায় স্বাস্থ্য ভবনের বলেই দাবি তাঁদের।
যদিও স্বাস্থ্য কর্তাদের বক্তব্য এমন কিছু লক্ষ্যমাত্র সার্জেনদের দেওয়া হয়নি যার কারণে রোগীরা অন্ধত্বের শিকার হতে পারে। কিন্তু এই টানাপোড়েন মধ্যে বারবারই একটিই প্রশ্ন উঠছে। ঠিক কী কারণে রোগীরা অন্ধত্বের শিকার হচ্ছেন? স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী প্রাথমিকভাবে বলছেন সলিউশনের হেরফেরে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তবে চূড়ান্ত আসা পর্যন্ত আসল কারণ জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু ওটি রুমে অপারেশনের সামগ্রিক পরিকাঠামো চূড়ান্ত না করে কেন অপারেশন করা হল? এই প্রশ্নের কোনও উত্তর মেলেনি স্বাস্থ্য ভবনের তরফে। বেশ কয়েকদিন আগে এই ঘটনা ঘটলেও কেন রিজিওনাল ইন্সটিটিউট অব অবথার্মোলোজি স্বাস্থ্য ভবনে ঘটনার কথা জানাল না সেই প্রশ্নও উঠছে। কেন টিভি-৯ বাংলার ক্যামেরায় ঘটনার কথা ধরা পড়ার পর তা সামনে এল? এই প্রশ্নও উঠছে।