
কলকাতা: আর হাতে মাত্র কয়েকদিন। কলকাতা পুরভোটে পাখির চোখ সব দলেরই। এ বার, কলকাতায় ভোট প্রচারে এসে সরাসরি তৃণমূল সরকারকে নিশানা করলেন অধিকারী পুত্র। কেন্দ্রে সেই তৃণমূল সুপ্রিমোই। সদ্যই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেপাল যাত্রায় ‘না’ জানিয়েছে কেন্দ্র। সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেই এদিন, তৃণমূলকে তালিবানের সঙ্গে তুলনা করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
শুভেন্দু এদিন বলেন, “খোঁজ নিলে দেখা যাবে নেপালেও বোধহয় সংগঠন রয়েছে। আমরা ভোটে আধা সামরিক বাহিনী চাই। ইভিএম মেশিনে ভোট চাই। সব জায়গায় আমরা লড়াই করব। ভয়মুক্ত পরিবেশে অবাধ ভোট চাই। কলকাতা কর্পোরেশনকে তালিবানদের হাত থেকে বাঁচাতে হবে। ”
প্রসঙ্গত, পুরভোট নিয়ে শাসক শিবির আত্মবিশ্বাসী হলেও দলের ভাবমূর্তি যাতে কোনও ভাবেই ক্ষুন্ন না হয় সে দিকে বিশেষ নজর দিয়েছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। কিছুদিন আগেই ভোট দানে বাধা দিলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বার্তা দিয়েছিলেন অভিষেক। আর এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বুঝিয়ে দিলেন, ওয়ার্ডের বাইরের লোকের উপস্থিতি বরদাস্ত করা হবে না। কলকাতার বাইরের নেতারা শুধু প্রচারে আসতে পারবেন বলে জানিয়েছেন তৃণমূল (TMC) সুপ্রিমো। দলের অন্দরে এই বিষয়ে তিনি কড়া বার্তা দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
তৃণমূল সূত্রে খবর, আজ তিনি দলের নেতাদের উদ্দেশে বলেছেন, কলকাতার আশেপাশে যাঁরা থাকেন, তাঁরা এসে প্রচার করতে পারেন। তবে প্রচারের কাজ যেন শুধু বক্তৃতাতেই সীমাবদ্ধ থাকে, সেই বার্তাই দিয়েছেন তিনি। প্রচারে বক্তৃতা ছাড়া ওই নেতাদের আর কোনও ভূমিকা যেন না থাকে, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা। সূত্রের খবর, মমতা বলেছেন, ‘নিজের কোমরের জোরে জিততে হবে। বাইরের কোনও লোক যেন ভোটের দিন কলকাতায় না বসে থাকে।’
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, একুশের বিধানসভা মিটতেই ২০২৪-কে পাখির চোখ করেছে তৃণমূল। তাই দলের অন্দরে নজর দেওয়ার পাশাপাশি, বাংলার বাইরেও সংগঠন মজবুত করতে নজর দিচ্ছে ঘাসফুল শিবির। আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত নেপালে সফরে থাকার কথা ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সূত্রের খবর, কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এই সফরে ছাড়পত্র দিল না বিদেশমন্ত্রক।
নেপালের শাসকদল নেপালি কংগ্রেসের তরফে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সম্প্রতি সে দেশে যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। সেই আমন্ত্রণ মুখ্যমন্ত্রী গ্রহণও করেন। এরপরই নেপাল যাত্রার জন্য অনুমতি চেয়ে চিঠি পাঠানো হয় কেন্দ্রের কাছে। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই নবান্নের কাছে সে সংক্রান্ত জবাব এসেছে। জানানো হয়েছে, এই মুহূর্তে নেপালে যেতে পারবেন না মমতা। কারণ হিসাবে দেখানো হয়েছে করোনার সংক্রমণ। শুক্রবার সকালেই এই সফরে না করা হয়েছে। কারণ হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের বাড়বাড়ন্ত।
এর আগে রোম সফরেও অনুমতি দেওয়া হয়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে। মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে এই সফর ‘সঙ্গতিপূর্ণ নয়’, এমনটাই বক্তব্য ছিল বিদেশমন্ত্রকের। জানা গিয়েছিল, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের তরফে একটি সংক্ষিপ্ত চিঠি সে সময় নবান্নে পাঠানো হয়। সেখানে বলা হয়, মুখ্যমন্ত্রীর এই রোম সফরের দরকার নেই। এর বেশি কোনও ব্যাখ্যা সেখানে দেওয়া হয়নি। বিদেশমন্ত্রক সূত্রে খবর, এ ক্ষেত্রে ব্যাখ্যারও বিশেষ জায়গা থাকে না। মন্ত্রকের ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ যথেষ্ট। ফলে, রোমের পর নেপালের সফর বাতিল নিয়ে কেন্দ্রকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব।