কলকাতা: বাংলায় বিজেপির সরকার গঠন নিয়ে আশাবাদী রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু। সেখানেই তিনি পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সরকার গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। বর্তমানে রাজ্যে যে অবস্থা চলছে তার পরিবর্তন হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন। সেই সঙ্গে কর্মী-সমর্থকদের হতাশ হতেও নিষেধ করেছেন। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ টেনে শুভেন্দু বলেছেন এ রাজ্যে রাষ্ট্রবাদী সরকার হবেই। রাষ্ট্রবাদী বলতে নিজের দল বিজেপির কথা বলেছেন তিনি। এ ব্যাপারে শুভেন্দুর দাবি, “পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রবাদী সরকার গঠন না করা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিশ্রাম নেই।”
ন্যাসনাল লাইব্রেরি সভাগৃহে শুভেন্দু বলেছেন, “বিজেপি একমাত্র রাজনৈতিক দল যাঁরা সভার আগে ভারতকেশরী শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির ছবিতে মাল্যদান করে। তা সেই সভা লক্ষদ্বীপে হোক, কাশ্মীরে হোক বা দেশের যে প্রান্তেই হোক। বিজেপির সভা হলেই শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি ফুল পান। সেই শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির রাজ্যে বিজেপি আসবে না, তা কখনও হয়?” এর পর কর্মীদের উদ্দেশে তাঁর আশ্বাস, “আপনারা হতাশ হবেন না। সব ঠিক মতো হচ্ছে। এ রাজ্যে ডবল ইঞ্জিন সরকার হবেই। এ রাজ্যে রাষ্ট্রবাদী সরকার গঠন না করা পর্যন্ত বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিশ্রাম নেই।”
এর পরই পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান শাসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন শুভেন্দু। বলেছেন, “বাঁচাতে হবে পশ্চিমবঙ্গকে। ৭২ জায়গায় বিএসএফের পোস্ট করতে দেয়নি। বাংলাদেশ থেকে লোক ঢোকাচ্ছে হু হু করে।” বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের বিষয়ে সরব হলেও তাঁর দল মুসলিম বিরোধী নয় বলেই দাবি শুভেন্দুর। এ ব্যাপারে তিনি বলেছেন, “আমরা কোনও ধর্মের বিরোধী নই। যাঁরা ভারতীয় মুসলিম রাষ্ট্রবাদী, তাঁদের সঙ্গে আমাদের বিরোধ নেই।” অনুপ্রবেশের ব্যাপারে বাঙালির জাগরণ আশা করছেন শুভেন্দু। এ নিয়ে তিনি বলেছেন, “এখন যদি বাঙালি না জাগে বিপদ। না জাগলে অনেক জেলা আর থাকবে না আমাদের হাতে।”
নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ভোটের ধরনে কী পরিবর্তন হয়েছে, তা নিয়েও নিজের মতামত ব্যক্ত করেছেন শুভেন্দু। তিনি বলেছেন,”মোদীজি আসার আগে ভারতে বেশিরভাগ জায়গায় ভোট হত পরিবারবাদ, তোষণ ও জাতপাতের ভিত্তিতে। মোদীজি আসার পর ৯০ শতাংশ জায়গায় আর তোষণ, জাতপাত ও পরিবারবাদের নিরিখে ভোট হয় না। এখন আর কেউ বলেন না আমরা ওবিসি হিন্দু, এসটি হিন্দু, ব্রাহ্মণ বা রাজপুত। এখন সবাই বলে আমরা ভারতীয় সনাতন সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী।” এর পরই সভাস্থল মুখরিত হয় বিজেপি কর্মীসমর্থকদের জয় শ্রীরাম ধ্বনিতে।