কলকাতা: রাজ্যপালের পাশেই দাঁড়ালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। জাতীয় ভোটার দিবসে রাজ্যের গণতন্ত্র কোথায় আছে সেটাই রাজ্যপাল মঙ্গলবার তাঁর বক্তব্যে তুলে ধরেছেন। তাঁর কোনও মন্তব্য সংবিধানের বাইরে গিয়ে নয় বললেন শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর কথায়, কী করতে হবে, কোথায় কী বলতে হবে তা রাজ্যপাল ভালই জানেন। উনি অনেক অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে আজ এখানে এসেছেন। ওনার আইন জ্ঞান নিয়েও গোটা ভারতে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেন বলে মনে হয় না।
Paid floral tributes to the architect of Indian Constitution; Dr. Bhim Rao Ambedkar ji at the WB Assembly premises in the august presence of Hon’ble Governor @jdhankhar1 ji on the solemn occasion of National Voters’ Day.#NationalVotersDay pic.twitter.com/D4XQ6pCnCg
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) January 25, 2022
শুভেন্দু অধিকারী এদিন বলেন, “রাজ্যপাল সুপ্রিম কোর্টের একজন কৃতী আইনজীবী। প্রবীণ আইনজীবী। দ্বিতীয়ত রাজ্যপাল রাজ্য বিধানসভার সদস্য থেকে শুরু করে ভারতবর্ষের লোকসভার সদস্য, সংসদীয় মন্ত্রী তাঁর যে অতীত অভিজ্ঞতা সেগুলি নিয়ে এই জায়গায় এসেছেন। সেখানে তিনি ভাল করেই জানেন হোয়াট টু ডু হোয়াট নট টু ডু। তিনি তাঁর অধিকারের মধ্যে থেকেই যা বলার বলেছেন।”
ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে আম্বেদকরের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিধানসভায় গিয়ে আচমকাই ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’ নিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় কেন সরব হলেন। সে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন শুভেন্দু। বিরোধী দলনেতার কথায়, “আমাদের দেশে বহুদলীয় রাজনীতি চলে। আমেরিকার মতো দু’টো দল না। অথচ বাংলায় তৃণমূলকে ভোট দিলে সরকার। বিজেপি বা অন্যদের ভোট দিলে বাদ। এটাকেই রাজ্যপাল চ্যালেঞ্জ করেছেন। ভোট পরবর্তী হিংসায় রাজ্যে ৫৫ জন খুন হয়েছেন। কয়েকশো মহিলা নির্যাতিত হয়েছেন। ভোটারদের অধিকার মনে করাতে গিয়ে রাজ্যপাল যদি ভোট পরবর্তী হিংসার কথা বলে থাকেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কথা উল্লেখ করে থাকেন, আমার মনে হয় আজকের দিনে খুব সঠিক বক্তব্য উনি রেখেছেন। তিনি একটা শব্দও সংবিধানের বাইরে বলেননি। তাঁর সংবিধান ও আইন সম্পর্কে জ্ঞান নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারবেন না।”
যদিও শুভেন্দুর এই মন্তব্যের পরই কটাক্ষ করেছেন সৌগত রায়। সৌগত রায় বলেন, “এসব দেখে বলতে হয় রাজ্যপালের জামাই হচ্ছে বিরোধী দলনেতা। বিরোধী দলনেতা সপ্তাহে দু’দিন করে গিয়ে দেখা করে আসেন। উনি দেখা করার পরই রাজ্যপাল কিছু একটা বিবৃতি দেন বা চিঠি লেখেন।”
এদিন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় বিধানসভায় দাঁড়িয়ে রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগেন। তিনি বলেন, রাজ্যে গণতন্ত্র বিপন্ন। পশ্চিমবঙ্গে ভোটারদের কোনও স্বাধীনতা নেই। রাজ্যে অবাধে চলছে হিংসা। বিধানসভায় দাঁড়িয়ে রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের। রাজ্যপালের কড়া আক্রমণের মুখে পড়েন বিধানসভার অধ্যক্ষও। বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাশে নিয়েই তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ তোলেন ধনখড়। একাধিক রিপোর্ট চাইলেও তিনি পাননি বলে দাবি করেন। রাজ্যপালকে এড়িয়ে কোনও পদক্ষেপ হলে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থার হুঁশিয়ারিও এদিন দেন ধনখড়।
এ বিষয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের কটাক্ষ, “বিজেপির বাংলার নেতাদের যে চূড়ান্ত সংঘাত চলছে, সেদিক থেকে নজর ঘোরাতে বিজেপি নেতারা ফেল করেছে। উনি এখন শেষ চেষ্টায় নেমেছেন। দেখছেন যদি নজর ঘোরানো যায় এসব বলে। বিজেপির নেতাদের উনি দেখাচ্ছেন তোমাদের দল ব্যর্থ কিন্তু আমি কেমন লড়াই করে যাচ্ছি। আসলে উনি আগামী নিরাপদ করার জন্য এসব করছেন। এর বাইরে এসবের কোনও গুরুত্ব নেই। উনি রাজ্যপাল পদের অবমাননা করছেন আসলে।”
আরও পড়ুন: ‘উনি যেটা করলেন অত্যন্ত অসৌজন্যমূলক’, জোর তরজায় রাজ্যপাল-অধ্যক্ষ