
কলকাতা: ১ হাজার ৩৪৭ কোটি টাকা। ফের রাজ্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ইস্যুতে সরব বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কেন্দ্রের টাকা নয়ছয় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁর। আর এই অভিযোগ তিনি কখন করলেন? যখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গেলেন উত্তরবঙ্গ সফরে। কিন্তু এই দুই ঘটনার কি কোনও যোগ রয়েছে? শুভেন্দুর কথায়, রয়েছে।
সোমবার উত্তরবঙ্গে পৌঁছছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিলিগুড়িতে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক রয়েছে তাঁর। এদিন বন্যায় মৃতদের পরিবারের হাতেও ক্ষতিপূরণ তুলে দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রীর। খোঁজ নিতে পারেন কতটা বদলাল পরিস্থিতি। আর এই আবহেই মমতাকে কাঠগড়ায় টানলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। অবৈধ ভাবে টাকা এক দফতর থেকে অন্য দফতরে ‘হস্তান্তর’ হচ্ছে বলে অভিযোগ তুললেন তিনি।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতার অভিযোগ কেন্দ্রের পাঠানো এসডিআরএফ-র টাকা রাজ্যের পিএনআরডি দফতরে পাঠিয়ে দিয়েছে সরকার। বলে রাখা প্রয়োজন, প্রতিটি রাজ্যকে বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য একটি তহবিল প্রদান করে থাকে কেন্দ্রীয় সরকার। তাকেই বলা হয় স্টেট ডিজ়াস্টার রেসপন্স ফান্ড বা এসডিআরএফ। এই তহবিলে গোটা টাকাটাই যে কেন্দ্র দেয় এমনটা নয়, তাতে রাজ্যেরও অনেকটাই শেয়ার থাকে।
শুভেন্দুর দাবি, চলতি অর্থবর্ষে বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য এসডিআরএফ-এ কেন্দ্রীয় সরকার ৯৮৩ কোটি টাকা দিয়েছে। আর গত পাঁচ বছরে তাঁরা মোট ৪ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা দিয়েছে। কিন্তু এই টাকা ‘নয়ছয়’ করছে রাজ্য। বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিলের টাকা রাজ্য সরকার অন্য দফতরে পাঠিয়ে দিচ্ছে বলেই অভিযোগ তাঁর। বিরোধী দলনেতার কথায়, “এই টাকা অন্য কোনও দফতরে পাঠানো যায় না। কিন্তু উনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) এই টাকা পিএনআরডি বা পঞ্চায়েত দফতরে পাঠিয়ে দিয়েছেন। ওখানে একজন ‘ভাইপো ম্যান’ রয়েছেন। মনোজ পন্থ নিজে সই করেছেন। এগুলো হতে পারে না।”
কত টাকা ‘অবৈধ’ ভাবে হস্তান্তর হয়েছে? শুভেন্দুর কথায়, “এই হস্তান্তরিত ১ হাজার ৩৪৭ কোটি টাকা বন্যাকবলিত দুর্গতদের জন্য। তারপরেও এই টাকা কীভাবে ট্রান্সফার করা হচ্ছে? এটা সম্পূর্ণ অবৈধ। ভোটের আগে এই টাকা দিয়ে বাংলার বাড়ি কর্মসূচিতে বিতরণ করতে চাইছে রাজ্য সরকার। নরেন্দ্র মোদী ৩০ হাজার কোটি টাকা বাড়ি তৈরির জন্য দিয়েছিল, আপনি তো সবটাই খেয়ে ফেলেছেন।”
অভিযোগ তুলে ক্ষান্ত হননি তিনি। দাবি জানিয়েছেন ক্যাগ রিপোর্টেরও। শুভেন্দুর কথায়, ‘ইতিমধ্যে এই ঘটনায় একটা ক্যাগ অডিট করানো হোক। পাশাপাশি, উনি আজ যখন দুর্গতদের জন্য ক্ষতিপূরণ বিলি করবেন, তখন যেন উত্তর ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামকে বিপর্যস্ত হিসাবে ঘোষণা করেন। তা না হলে তো গাইডলাইন লঙ্ঘন করা হচ্ছে। আর বাংলার বাড়ি তৈরির জন্য যে টাকা দিচ্ছেন, সেটাও ১ লক্ষের বদলে ৩ লক্ষ করা হোক। কারণ, বালি চুরি কারণে যে দশা তৈরি হয়েছে। তাতে এই ক’টা টাকা অন্তত বাড়ি তৈরি হবে না।’