
কলকাতা: বাংলা ভাষা ও বাঙালিদের ওপর অত্যাচারের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতা। আর সে সময়ে বিধানসভায় তুলকালামকাণ্ড। বিজেপি বিধায়কদের বিক্ষোভ, কাগজ ছেড়া, স্পিকারের সাসপেনশন, বিধানসভার নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে বিজেপি বিধায়কদের ধস্তাধস্তি, মার্শাল দিয়ে রীতিমতো চ্যাংদোলা করে তাঁর বার করানো- এককথায় বৃহস্পতিবার বিধানসভাকক্ষে নজিরবিহীন ছবি। সবশেষে বিধানসভার বাইরে প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু।
২ ঘণ্টার মধ্যে একে একে সাসপেন্ড বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, অগ্নিমিত্রা পাল, অশোক দিন্দা, মিহির গোস্বামী, বঙ্কিম হাজরা। গোটা বিষয়ের তীব্র নিন্দা রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়েই শুভেন্দু বলেন, “যেভাবে বিজেপি বিধায়কদের প্রহার করা হয়েছে, তা নিন্দনীয়। ইতিমধ্যেই শঙ্কর ঘোষকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছে। বঙ্কিম ঘোষের বুকে দুটো স্টেইন রয়েছে। তিনি হাসপাতালে। স্বৈরাচারী রাজত্ব শেষ হবে। বাংলার মানুষ আমাদের পাঠিয়েছিলেন বিধানসভায়।”
আগেই শুভেন্দু অধিকারীকে সাসপেন্ড করেছিলেন স্পিকার। তা নিয়েই বিজেপি বিধায়কদের মধ্যে প্রশ্ন ছিল। তাদের দাবি, প্রথমে নির্দিষ্ট একদিনের জন্য সাসপেন্ড করা হলেও, পরে গোটা অধিবেশনেই সাসপেন্ড করা হয়। কেন স্পিকারের দু’রকমের সিদ্ধান্ত নিলেন স্পিকার, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। তবে বৃহস্পতিবার সকালেই শুভেন্দু স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, “একজন শুভেন্দুকে বার করেছেন। আমাদের বিধায়করা ভিতরে ঢুকে বুঝিয়ে দেবেন, বিজেপিতে একজন শুভেন্দু নেই।” আর এদিন আক্ষরিকঅর্থেই বিজেপি বিধায়কদের নজিরবিহীন বিক্ষোভ। শুভেন্দু বলেন, ” ভেবেছিল, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতার সামনে বাইরে রাখব। বাংলাদেশি সংখ্যালঘুদের প্রোটেকশন দিয়ে বাঙালি অস্মিতার কথা বলে গোল খাওয়াব। কিন্তু আমরা ১০ গোল দিয়েছি। এই ধরনের বিরোধিতার সামনে পড়েননি।
এদিন বিধানসভায় মমতা বলেন, “স্বাধীনতার পর একটা দল, যাদের স্বাধীন করার জন্য কোনও ভূমিকা ছিল না, তারা এখন দেশের সবথেকে বড় ডাকাত। মানুষে মানুষে ভাগাভাগি করেন। ব্রিটিশদের সঙ্গে মিশে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। সাম্প্রদায়িক বিভাজন করেছিল। আগামী দিন বিজেপির কেউ নির্বাচিত হবেন না। স্বৈরাচারী শক্তি।” তার প্রেক্ষিতে শুভেন্দু বলেন, “দেশভাগের জন্য বিজেপি দায়ী করে, কেবল সংখ্যালঘু তোষণ করার জন্য, আর নিন্দার ভাষা নেই।”
এদিন প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তা নিয়ে শুভেন্দু বলেন, “এই কারণেই রাহুল গান্ধীর মেম্বারশিপ গিয়েছিল। আমি মোদী কমিউনিটি অন্তর্গত লোকেদের বলব BNS-এ FIR করতে।”