বঙ্গভঙ্গ বিতর্কের মাঝে আপাতত দিল্লি সফর বাতিল শুভেন্দুর! জোর চর্চা
দিল্লি থেকে ফিরে এসেই বৈঠক করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গেও। একই ইস্যুতে তাঁদের মধ্যেও কথা হয়। এর আগে দিল্লি সফরে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে সাক্ষাতের পর শুভেন্দু টুইট করেন, "স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলাম। অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলার মানুষের জন্য আর্শীবাদ চেয়েছি।"
নয়া দিল্লি: বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) দিল্লি সফর আপাতত বাতিল। কবে তিনি ফের দিল্লি যাচ্ছেন, তা জানিয়ে দেওয়া হবে। বঙ্গভঙ্গ বিতর্কের মাঝেই শুভেন্দু অধিকারীকে দিল্লিতে তলব করা হয়েছিল। আর তা নিয়েই শুরু হয়েছিল জোর জল্পনা। তারই মাঝে পিএসসি চেয়ারম্যান পদ পাওয়া নিয়েও শুরু হয়েছে জটিলতা। বিজেপি পদ পেতে নাছোড়। এরই মাঝে শুভেন্দুর সফর বাতিল নিয়ে শুরু জোর চর্চা।
গত ২১ জুন আবারও শুভেন্দু অধিকারীকে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। কিছুদিন আগেই রাতারাতি তলব পেয়ে দিল্লি গিয়েছিলেন শুভেন্দু। দেখা করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি। সেখানে বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসা ও তার প্রেক্ষিতে আইন শৃঙ্খলা লঙ্ঘিত হওয়ার প্রশ্নের ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন তিনি।
দিল্লি থেকে ফিরে এসেই বৈঠক করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গেও। একই ইস্যুতে তাঁদের মধ্যেও কথা হয়। এর আগে দিল্লি সফরে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে সাক্ষাতের পর শুভেন্দু টুইট করেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলাম। অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলার মানুষের জন্য আর্শীবাদ চেয়েছি।” কিন্তু এবারে তাঁকে তলবের প্রেক্ষাপটটা আলাদা। বিশ্লেষকরা বলছেন, বারবার শুভেন্দু দিল্লি সফরের রাজনৈতিক তাৎপর্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
একুশের নির্বাচনে কার্যত মমতা ক্যারিশ্মার কাছে মুখ পুড়েছে পদ্ম শিবিরের। শুভেন্দুই একমাত্র মোদী-শাহর কাছে ‘প্রেস্টিজ ফেস’। নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে টেক্কা দিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে নিজের কদর অনেকটাই বাড়িয়ে ফেলেছেন শুভেন্দু। শুভেন্দু অধিকারী এখন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা হিসেবে বিধানসভার অন্দরে ঘুঁটি সাজাতে ব্যস্ত। কিন্তু এরই মাঝে বঙ্গে বিজেপির কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলা-বিভাজন বিতর্ক। জন বার্লা ও সৌমিত্র খাঁর বেলাগাম মন্তব্য। সূত্রের খবর, দলের তরফে ইতিমধ্যে নেতাদের সতর্ক করা হয়েছে। এরই মধ্যে শুভেন্দুকে তলব অন্য মাত্রা বহন করে।
আরও পড়ুন: চেয়ারম্যান কী হবে, বিধায়কই থাকবেন না মুকুল, অধ্যক্ষের সাড়া না পেলে আদালতে যাওয়ার হুঙ্কার শুভেন্দুর
বিশ্লেষকদের ধারণা, শুভেন্দুকে এগিয়ে দিয়ে বা হাইলাইট করে মমতার “ব্যক্তিগত পরাজয়” কে বার বার উস্কে দেওয়ার কৌশল নিচ্ছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। এরই মধ্যে ভিন দল থেকে আসা একের পর এক নেতা যখন ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য মমতার সামনে নাকেখত দিতেও রাজি তখন শুভেন্দু কেই খাঁটি এবং ‘দীর্ঘমেয়াদি’ বলে ধরে নিচ্ছে বিজেপি। পারিপার্শ্বিক বিষয়গুলি দলের চোখে তাঁর প্রাসঙ্গিকতা বাড়ানোর পক্ষে অনুকূল। ফলে বারবার শুভেন্দুকে দিল্লিতে তলব একদিকে যেমন বিজেপির বঙ্গ-লড়াইয়ের ভবিষ্যৎ রূপরেখা নির্ধারিত করবে, তেমনি তার রাজনৈতিক তাৎপর্যের অন্তর্নিহিত অর্থও গহীন।