কলকাতা: প্রিভিলেজ কমিটির বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) আর্জি খারিজ। বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Biman Banerjee) বিরুদ্ধে ‘অসাংবিধানিক’ মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ আনেন তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। এদিন সেই বৈঠক হয়। সেখানে শুভেন্দুর আর্জি খারিজ হয়েছে।
প্রিভেলেজ কমিটির চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এদিনের বৈঠকে অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত, দুই পক্ষকেই তাঁদের তথ্যপ্রমাণ দিতে বলা হয়। শুভেন্দুও তথ্যপ্রমাণ জমা দেন। কিন্তু গত ৬ তারিখ চিঠি দিয়ে প্রিভেলেজ কমিটির কাছে আরও কিছু সময় চেয়েছিলেন বিধানসভার বিরোধী নেতা। চার সপ্তাহ সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু এ দিনের প্রিভেলেজ কমিটির বৈঠকে খারিজ হল শুভেন্দুর আর্জি। তাঁকে দুই সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়। অন্যদিকে চন্দ্রিমাকে আরও কিছু তথ্য দেওয়ার জন্য সময় দেওয়া হয়েছে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
উল্লেখ্য, বিধানসভার স্পিকারের বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযোগ ওঠে শুভেন্দু অধিুকারীর বিরুদ্ধে। অধিবেশন শুরুর কয়েক দিনের মধ্যেই শুভেন্দু অধিকারীরর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস আনে তৃণমূল। বিরোধী দলনেতা কয়েকদিন আগে অধিবেশন চলাকালীন আপত্তিকর মন্তব্য করেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বলে অভিযোগ। সেই অধিবেশন বয়কট করে ওয়াক আউট করেন বিজেপি বিধায়করা।
এদিকে সভাকক্ষ ত্যাগ করে এই ঘটনার প্রতিবাদে সাংবাদিক বৈঠক করেন শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে ভোটের পরও রাজ্যজুড়ে হিংসা জারি রেখেছে তৃণমূল বলে অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, ক্ষমতার সন্ত্রাস দেখাচ্ছে তৃণমূল। বিরোধী কণ্ঠস্বর বিধানসভার অন্দরেও আক্রান্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। শুভেন্দু এও বলেন, “কোম্পানির কর্মচারীদের সামনে ওদের নেত্রী হেরেছেন সেকথা বলা যাবে না। তাহলে রে রে করে উঠবেন। আমি তার পরেও বলেছি। বলেছি, ১৯৯৬ সালে করেলে অচ্যূতানন্দনজি হারেন কিন্তু এলডিএফ জেতে। এলডিএফ নতুন মুখ্যমন্ত্রী বেছে নিয়েছিল। হিমাচল প্রদেশে বিজেপি জেতেন কিন্তু প্রেমকুমার ধুমলজি ২টি আসন থেকে হারেন। তার পরও পার্টি তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন।”
সেদিন শুভেন্দুর অভিযোগ করেন, বিধানসভার অন্দরে তাঁর বাপবাপান্ত করে আক্রমণ করেন এক তৃণমূল বিধায়ক। বিষয়টি নিয়ে বিজেপি বিধায়করা প্রতিবাদ করলেও সেই মন্তব্য কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেননি স্পিকার বলে অভিযোগ করেন শুভেন্দু।
এদিকে এর পর রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে স্পিকারকে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস জমা দেন। স্পিকারের বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযোগ আনেন তৃণমূল বিধায়ক তথা মন্ত্রী। সভার কার্যবিবরণী থেকেও সেদিনের শুবেন্দুর বক্তব্যের অংশ বাদ দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, এর আগে একাধিক বিধায়কের বিরুদ্ধে বিধানসভায় স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস আনা হয়েছে। তবে বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে এমন নোটিস সম্ভবত নজিরবিহীন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
আরও পড়ুন: ইউ-টার্ন মারতে গিয়ে হলুদ ট্যাক্সিতে সজোরে ধাক্কা! মন্ত্রীর কনভয়ে দুর্ঘটনা, হাসপাতালে চালক