কলকাতা : সরকারি হাসপাতালগুলিতে অক্সিজেনের অপচয়(Misuse of liquid oxygen) ? প্রশ্ন উঠছে, কারণ অপচয় রোধে ইতিমধ্যেই রাজ্যের সমস্ত সরকারি হাসপাতালগুলিকে কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব এই নির্দেশ রূপায়ণের জন্য বলা হয়েছে স্বাস্থ্য ভবনের তরফে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের তুলনায় তৃতীয় ঢেউয়ে কোভিড আক্রান্তদের সেই অর্থে অক্সিজেন (Demand of liquid oxygen) দিতে হচ্ছে না। হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে। সারা রাজ্যে দু’হাজারের কিছু বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাঁদের সকলকে যে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে, এমনটাও নয়। এরপরও অক্সিজেনের খরচ সেই অর্থে কমেনি। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, এই পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে প্রতিটি হাসপাতালে নজরদারি কমিটি গড়ে অক্সিজেন অপচয় বন্ধ করতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় চারিদিকে প্রাণবায়ুর হাহাকার পড়ে গিয়েছিল। অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে কালাবাজারির এক ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখা গিয়েছিল কলকাতা সহ গোটা রাজ্যে। অনেক সময় তো টাকা দিয়েও পাওয়া যাচ্ছিল না অক্সিজন। শুধু বাংলাই নয়, সব রাজ্যেই একই ছবি। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছিল দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়। পরে সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সহ গোটা দেশ। কিন্তু এখন সেই প্রাণবায়ুরই অপচয়? আপাতত করোনা আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে অক্সিজেনের চাহিদা সেভাবে নেই। কিন্তু যদি পরে পরিস্থিতি জটিল হয়? তাই অক্সিজেনের অপচয় রুখতে আগেভাগে সতর্ক স্বাস্থ্য ভবন। কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সরকারি হাসপাতালগুলিকে, কোনওভাবেই অক্সিজেনের অপচয় বরদাস্ত নয়। সেই কারণে, প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে কমিটি গঠন করে নজরদারি চালাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে যা খবর, হাসপাতালগুলিকে অক্সিজেনের অপচয় রোধে একটি কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য ভবন থেকে জানা গিয়েছে, দ্বিতীয় ঢেউয়ের তুলনায় এখন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা কমেছে। রোগীদের অক্সিজেনের চাহিদাও কমেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও আগে দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় যতটা অক্সিজেন খরচ হচ্ছিল, এখনও তেমনই অক্সিজেন খরচ হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, রোগীদের যদি অক্সিজেনের প্রয়োজন না হয়, তাহলে এই অতিরিক্ত অক্সিজেন কোথায় খরচ হচ্ছে? তাহলে কি অক্সিজেনের অপচয় হচ্ছে হাসপাতালগুলিতে? কী কারণে এই পরিস্থিতি, তা খতিয়ে দেখার জন্যই এই কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্য ভবনের তরফে জানা গিয়েছে, অনেক ক্ষেত্রেই রোগীর অক্সিজেনের চাহিদা শেষ হয়ে যাওয়ার পর সেই অক্সিজেনের নল ঠিকভাবে বন্ধ করা হচ্ছে না। যে স্বাস্থ্যকর্মীরা সেখানে কর্তব্যরত রয়েছেন, তাদেরও বিষয়টি নজর এড়িয়ে যাচ্ছে। আবার হয়ত অনেক সময় কত স্যাচুরেশন লেভেলে কতটা অক্সিজেন দিতে হবে – সেই প্রোটোকল অনেক সময় মানা হচ্ছে না। এই সবের কারণেই অক্সিজেনের খরচ আগের মতোই রয়ে গিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।