Calcutta High Court: তৃণমূল সরকারের ‘পাড়ায় সমাধান’ কর্মসূচিতে ৮৭ শিক্ষক বদলি! জবাব চাইল আদালত
Calcutta High Court: বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু বুধবার রাজ্যকে এই অভিযোগের জবাব দিয়ে হলফনামা পেশ করতে বলেছিলেন। জানতে চেয়েছিলেন যে এই পাড়ায় সমাধান কী? এর সদস্যই বা কারা? বৃহস্পতিবার রাজ্য হলফনামা পেশ করে আদালতে।
কলকাতা: শিক্ষা দফতরের বিরুদ্ধে ভূরি ভূরি দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছে। বেআইনিভাবে নিয়োগের অভিযোগ থেকে শুরু করে ‘পোস্টিং দুর্নীতি’। নিত্য নতুন তথ্য তুলে ধরে মামলা হয়েছে আদালতে। এবার সামনে এল আরও এক বিস্ফোরক তথ্য। ‘পাড়ায় সমাধান’-এর মাধ্যমে বদলি করা হয়েছে শিক্ষক! একজন নয়, অন্তত ৮৭ জনকে এভাবে বদলি করা হয়েছে বলে অভিযোগ। নিয়ম মেনে উৎসশ্রী পোর্টালে আবেদন করেও কোনও বদলি হয়নি বলে অভিযোগ উলুবেড়িয়ার এক শিক্ষিকার। পূজা মণ্ডল নামে ওই শিক্ষিকার দাবি, ৮৭ জন শিক্ষকের বদলি হয়েছে ‘পাড়ায় সমাধান’ ক্যাম্পের মাধ্যমে।
বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু বুধবার রাজ্যকে এই অভিযোগের জবাব দিয়ে হলফনামা পেশ করতে বলেছিলেন। জানতে চেয়েছিলেন যে এই পাড়ায় সমাধান কী? এর সদস্যই বা কারা? বৃহস্পতিবার রাজ্য হলফনামা পেশ করে আদালতে। রাজ্যের দাবি, পাড়ায় সমাধানের মাধ্যমে বদলি হওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, তা ভুল। আরটিআই-তে লেখা থাকলেও অন্য প্রমাণ নেই বলে দাবি রাজ্যের। সেই সঙ্গে রাজ্য জানিয়েছে ‘পাড়ায় সমাধান’ হল ‘দুয়ারে সরকারে’র একটি প্রকল্প। যেখানে বাড়ির সামনে গিয়ে সরকারি পরিষেবা দেওয়া হয়।
তবে এই উত্তরে সন্তুষ্ট নয় আদালত। ক্ষুব্ধ বিচারপতি বলেন, “এই মামলায় সঠিক যুক্তি না পেলে বৃহত্তর সিদ্ধান্ত নিতে পারি।” ফের রাজ্যের কাছে হলফনামা তলব করা হয়েছে। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
এদিন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু প্রশ্ন করেন, “উৎসশ্রী প্রকল্পের ক্ষমতা আগেই তুলে নেওয়া হয়েছে। তারপরও কীভাবে এই প্রকল্পে কাজ করছে কমিশন?” বিচারপতি জানতে চান, পাড়ায় সমাধান কি কোনও সালিশি সভা? এটার কি কোনও বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়? বিচারপতি বসুর প্রশ্ন, ‘বাড়ির পরিচারিকা না এলে তারও সমাধান হয় এই ‘পাড়ায় সমাধানে’? এরপর তো ‘পাড়ায় সমাধানের’ মাধ্যমে ডিভোর্সও হয়ে দেবে। বলা হবে আদালতের কোনও দরকারই নেই।’ মানুষের সমস্যা শুনে নির্দিষ্ট দফতরে তা পাঠিয়ে দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিচারপতি। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘এরকমভাবে পাড়ায় সমাধানের মাধ্যমে সবকিছু করে দেওয়া বেআইনি। বদলির বিষয়ে কমিশন ও শিক্ষা দফতরের নিজ নিজ দায়িত্ব আছে। এরা এককভাবে কেও কাজ করতে পারেন না।’
সরকার পক্ষের আইনজীবী জানান, এটা কোনও সালিশিসভা নয়, একটি সরকারি ক্যাম্প। অন্যদিকে, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী জানান, ২০২১ সালের ওই বদলি হয়েছে, সেই রিপোর্টও পাওয়া গিয়েছে।