
কলকাতা: আরএসএসের শতবর্ষে কলকাতায় আয়োজন করা হল বিরাট সেমিনারের। কিন্তু তার অনুমতি পাওয়া নিয়ে চাপানউতোর কম হয়নি। জল গড়ায় একেবারে কলকাতা হাইকোর্টে। অবশেষে শনিবার সন্ধ্যায় জট কাটে কলকাতা হাইকোর্টে। কোর্টের হস্তক্ষেপে অনুমতি দেয় কলকাতা পুলিশ। শেষ পর্যন্ত সায়েন্স সিটির সেই সেমিনার থেকে ভোটমুখী বাংলায় দাঁড়িয়ে একগুচ্ছ তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করতে দেখা গেল আরএসএস প্রধান মোহন ভগবতকে। আরএসএএসের কাজের আঙ্গিক, ধরন, সবটাই নিয়েই অকপটে বললেন নিজের মত। আরএসএসের হাতে যে কাউকে নিয়ন্ত্রণ করার কোনও ‘রিমোট কন্ট্রোল’ নেই তাও আরও একবার স্পষ্ট করলেন। স্বয়ংসেবকরা যে সত্য়িকারেরই স্বয়ং সেবক তাও বললেন প্রকারন্তরে।
এদিনের সেমিনার থেকে আরএসএস প্রধান বলেন, “অনেক সংস্থা আছে, অনেক মানুষ আছে যাঁরা ব্যক্তিগত কিছু কাজও করছে। এরা সবাই সংঘের স্বয়ংসেবক, ওরা সর্বদাই সঙ্ঘের। ওদের বিচার, সংস্কার, দৃষ্টি সবই সঙ্ঘ দিয়েছে। তার আধারেই ওরা স্বতন্ত্র, স্বাবলম্বী থেকে ওরা নিজেদের কাজ করবে এটাই আশা করা হয়। আর আমরা এইভাবেই চলি।” এরপরই স্পষ্টভাবে বলেন, “সংঙ্ঘের কোনও নিয়ন্ত্রণ স্বয়ংসেবকদের উপর নেই, কোনও রিমোট আমাদের হাতে থাকে না। সংঘর এটা পদ্ধতই নই। সঙ্ঘর শাখায় স্বয়ংসেবকরা আসেন। ওদের উপর কোনও কন্ট্রোল কখনওই থাকে না। আমাদের কাজ বন্ধুত্ব, শুদ্ধ সাত্ত্বিক প্রেমের পথে চলা। কিন্তু নিয়ন্ত্রণ, ব্যকসিট ড্রাইভিংয়ের অনেক ন্যারেটিভ সামনে আসে। সেগুলি কী করে আসে তা আপনাদের জানা। কিন্তু এই সব কথায় রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের দায়িত্ব পাওয়া কার্যকর্তারা কর্ণপাত করেন না।”
প্রসঙ্গত, বাংলায় ভোট হোক বা ভিন রাজ্যের ভোট, বিজেপিকে আক্রমণ করতে গিয়ে বারবারই বিরোধীদের নিশানায় থেকে আরএসএস। অন্যদিকে আরএসএস ও তাদের শাখা সংগঠনের সম্পর্ক, দোলাচল নিয়েও চাপানউতোর নেহাৎ কম নেই। এক কালের স্বয়ংসেবকরা বর্তমানে অনেকেই দাপুটে সব রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে উঠে এসেছেন। তাঁদের সঙ্গে বর্তমানে আরএসএসের সম্পর্কের রসায়ন, গতিপ্রকৃতি নিয়েও চর্চা কম নেই।
যদিও মোহন ভগবত বলছেন, “স্বয়ংসেবক হওয়ার পর তাঁরা যে ক্ষেত্রে কাজ শুরু করেন তখন তাঁরা সেখানকার অনুশাসন পালন করে কাজ করেন। তাই আমি বলছি এদের দ্বারা যদি আপনারা সংঘকে দেখবেন বলে মনে করেন তাহলে বলব বাইরে যাঁরা কাজ করেন সেখানে তো অনেক ধরনের কথা হয়, বিপরীত হাওয়ার মধ্যে দাঁড়িয়েও ওদের কাজ করতে হয়। তবে ওদের সঙ্গে শলা পরামর্শ অবশ্যই চলে। আমাদের সাহায্য চাইলে অবশ্যই আমরা ওদের সাহায্য করব। ভাল কাজের জন্য তো আমরা সব সময়ই যে কারও সাহায্য করি।”