
কলকাতা: একজন বৈধ ভোটারের নাম বাদ পড়লেই আন্দোলনে নামবে তারা। জাতীয় নির্বাচন কমিশন বিশেষ নিবিড় সমীক্ষার (SIR) ঘোষণার পরই হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। এই নিয়ে কী বলছেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (CEO) মনোজ কুমার আগরওয়াল? মঙ্গলবার সর্বদলীয় বৈঠকের পর সাংবাদিক বৈঠকে এই নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে CEO স্পষ্ট করে দিলেন, স্বচ্ছ ভোটার তালিকা প্রস্তুত করাই তাঁদের লক্ষ্য। এসআইআর নিয়ে আশঙ্কার কিছু নেই বলেও আশ্বাস দিলেন তিনি।
সোমবার বাংলা-সহ ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এসআইআর শুরুর কথা ঘোষণা করেছে কমিশন। তারপরই এদিন পশ্চিমবঙ্গের সিইও অফিসে সর্বদলীয় বৈঠক করেন মনোজ কুমার আগরওয়াল। ওই বৈঠকের পরই সাংবাদিক বৈঠক করেন তিনি। এসআইআর প্রক্রিয়া কীভাবে হবে, তা তুলে ধরেন।
সাংবাদিক বৈঠকে সিইও জানান, নির্বাচন কমিশনের ঘোষণার পর গতকাল রাতে বাংলায় ভোটার তালিকা ফ্রিজ হয়েছে। আর সেই তালিকা হিসেবে এখন রাজ্যে ভোটার রয়েছেন ৭ কোটি ৬৬ লক্ষ ৩৭ হাজার ৫২৯। এনুমারেশনের জন্য বিএলও অ্যাপ তৈরি হয়েছে। ৩ নভেম্বর পর্যন্ত বুথ লেভেল অফিসারদের (BLO) প্রশিক্ষণ হবে। এরপর ৪ নভেম্বর থেকে বিএলও-রা বাড়ি বাড়ি এনুমারেশন ফর্ম নিয়ে যাবেন। খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে ৯ ডিসেম্বর। আর ৯ ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত দাবি ও অভিযোগ জানানো যাবে। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে ৭ ফেব্রুয়ারি।
২০০২ সালের ভোটার তালিকার সঙ্গে ২০২৫ সালের ম্যাপিংয়ের কথা উল্লেখ করে সিইও বলেন, “বাংলায় এসআইআর শুরুর আগে ম্যাপিং হয়েছে। ফলে নির্দিষ্ট কোনও বুথে ২০০২ সালে কতজন ভোটার ছিলেন, তা জানা গিয়েছে। এটা নিয়ে অনেক ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। ২০০২ সালের পর অনেকে ভোট কেন্দ্র বদলেছেন। ২০০২ সালের পর অনেকের নাম উঠেছে।”
এরপরই তিনি বলেন, “খসড়া তালিকায় কেন কারও নাম বাদ যাবে তা জানানো হবে। পঞ্চায়েত অফিস, পৌরসভায় তালিকা টাঙানো হবে। হেল্প ডেস্ক থাকবে। বিএলও অ্যাপেও আপনি জানাতে পারেন। কোনও বৈধ ভোটার বাদ যাবেন না।” এদিন রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠকের কথা উল্লেখ করে সিইও বলেন, “আটটি রাজনৈতিক দলের ৪ জন করে প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছি।”
পশ্চিমবঙ্গের অনেক সাধারণ মানুষ এসআইআর নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন বলে বিভিন্ন মহলের দাবি। এই নিয়ে সিইও মনোজ কুমার আগরওয়াল বলেন, “এটা তো সরকারি কর্মসূচি। নির্বাচন কমিশন করছে। এর আগেও বেশ কয়েকবার এসআইআর হয়েছে। প্রথমবার এসআইআর হচ্ছে না। আশঙ্কার কিছু নেই। প্রত্যেক ব্যক্তির কাছে আমরা ৩-৪ বার যাব। পরিযায়ী শ্রমিকরা কিউআর কোডের মাধ্যমে এতে অংশ নিতে পারবেন। পরিবারের লোকেরা করতে পারে।”
এরপরই রাজনৈতিক দলগুলিকে বার্তা দিয়ে সিইও বলেন, “আজ রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠক করলাম। তাদের অনুরোধ করলাম, আপনারা বুথ লেভেল এজেন্ট (BLA) নিয়োগ করুন। প্রতি বুথের রাজনৈতিক দলগুলির বিএলএ-দের সঙ্গে আমাদের বিএলও-রা ধাপে ধাপে বৈঠক করবেন। এনুমারেশনের আগে বৈঠক করবেন। ফর্ম তুলতে পারবেন বিএলএ-রা।”