কলকাতা: তিলজলায় শিশুকন্যা খুনের ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভ, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর। সেই ঘটনায় আরও ২০ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা হয়েছে। রাতভর তল্লাশিতে এলাকা থেকেই গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত। সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। কেন উন্মত্ত জনতা হঠাৎ করে পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরাল, অভিযুক্তদের উদ্দেশ্য জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। শিশুকন্যা খুনে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সোমবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে তিলজলা, পার্ক সার্কাস, বন্ডেল রোড, পিক গার্ডেন এলাকা। প্রতিবেশীদের অভিযোগ ছিল, শনিবার সকাল থেকে শিশুটিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। থানায় সে খবরটি জানানোও হয়েছিল। তবুও পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ করতে ঢিলেমি করেছে। দীর্ঘক্ষণ পর খানাতল্লাশি শুরু করেছে। শিশুটি যে আবাসনে থাকে, তারই এক তলায় প্রতিবেশীর ঘর থেকে উদ্ধার হয় হাত পা বাঁধা দেহ। অভিযোগ, সকালে নিখোঁজ ডায়েরি করে আসার পর দুপুরে ফের থানায় গিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু সে সময় কর্তব্যরত এক পুলিশ কর্মী বলেছিলেন, “এখন লাঞ্চ টাইম চলছে। তারপর দেখা যাবে…” এই গোটা বিষয়টি সোমবার বিক্ষোভের সময়ে উচ্চ পদস্থ কর্তাদের কাছে জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে সে সঙ্গে শনিবার পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ প্রদর্শনের জন্য আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাতেই ক্ষোভ চড়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের। সোমবার তার আঁচ পড়ে তিলজলা, বন্ডেল রোড, পার্কসার্কাস ও পিকনিক গার্ডেনে। বিক্ষোভকারীরা একাধিক দলে বিভক্ত হয়ে দিকে দিকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। প্রথমে বন্ডেল রোড অবরোধ করেন তাঁরা। সেখানে যান চলাচলে সমস্যা হয়। সেখানে পুলিশ কর্তাদের কথা শুনে চলে আসেন তাঁরা। তারপর শুরু হয় পার্ক সার্কাস ও বালিগঞ্জ স্টেশনের মাঝে অবরোধ। শিয়ালদা দক্ষিণ শাখার ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সেখানে পুলিশের উচ্চ পদস্থ কর্তারা আসেন। তাঁদের কাছে ক্ষোভ উগরে দেন বিক্ষোভকারীরা, পুলিশরাও পাল্টা বোঝানোর চেষ্টা করতে থাকে। এসবের মধ্যেই হঠাৎ করে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় পিকনিক গার্ডেন এলাকা। বিক্ষোভকারীদের একাংশের সঙ্গে পুলিশের রীতিমতো ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি করতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাসের সেল ফাটান পুলিশকর্মীরা। পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। উন্মত্ত জনতা পুলিশের গাড়িতেই আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে RAF নামাতে বাধ্য হয় পুলিশ।
এই ঘটনায় রাতেই সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে পুলিশ। ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।