কলকাতা: কেউ টানছেন কলার ধরে, কেউ আবার একে অপরের দিকে উদ্যত। মারমুখী তৃণমূল-বিজেপি কাউন্সিলদের এ হেন ছবি ধরা পড়ল আজ কলকাতা পুরসভার অধিবেশন কক্ষে। কিন্তু এতসবের পরও কি অনুশোচনা আছে তথাকথিত জনপ্রতিনিধিদের? এ দিন, বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষকে অধিবেশন কক্ষে মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম বসুর বিরুদ্ধে। মুখে অভিযোগ অস্বীকার করলেও বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের সামনে জানালেন, সবাই মিলে মারলে সজল ঘোষ এখন ঘুরে বেড়াতে পারতেন না। সজলবাবুকে মারার জন্য উনি একাই একশো। যদি জনপ্রতিনিধিরাই নিজেদের মধ্যে গণ্ডগোল-মারধর করেন কাজ করেন সাধারণ মানুষের অভাব-অভিযোগ শুনবে কে? ঠিক এই কারণেই কি ভোট দিয়ে আম-জনতা তাঁদের ‘জনপ্রতিনিধি’ নির্বাচন করেন? উঠছে একগুচ্ছ প্রশ্ন।
এ দিনের ঘটনার পর কক্ষের বাইরে আসনে বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ ও তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম বসু। দু’জনই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। সজল ঘোষ বলেন, “ওরা এত গালাগালি করেছে কান থেকে রক্ত বেরবে। ওরা মেরেছে। আমরা একটা বিতর্কে অংশ নিয়েছিলাম। তার জেরে সরাসরি গায়ে হাত দিয়ে দিল।” অভিযোগ উড়িয়ে সজলবাবুকে ‘ভাই সম’ বলে বসেন তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম বসু। বলেন, “সজল ছোট ভাইয়ের মতো। ওকে মারব কেন? ওকে ভালবাসি। কিন্তু মাঝেমধ্যে ওর মাথা বিগড়ে যায়।” এরপরই বদলে যায় তাঁর বাচন ভঙ্গি। সাংবাদিকরা যখন তাঁকে প্রশ্ন করেন আপনারা সবাই মিলে কেন সজল ঘোষের গায়ে হাত তুললেন। উত্তর দিতে গিয়ে অসীমবাবু বললেন, “সবাই মিলে ওকে মারলে সুস্থ হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে? সবার দরকার নেই। আমি একাই একশো।”
শনিবার কলকাতা পুরসভার অধিবেশন চলছিল। সেই সময় বিরোধীদের কোনও প্রশ্ন ছিল না। অভিযোগ, তখন তৃণমূলের মালা রায় বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষকে উদ্দেশ্য করে বলেন যে আপনাদের বিরোধীদের কেন কোনও প্রশ্ন থাকে না? তার উত্তরে বিজেপি নেতা বলেন, “বলেও কোনও লাভ হয় না। মেয়র-ডেপুটি মেয়র কোনও উত্তর দেয় না।” সেই সময় সজল ঘোষ এবং বিজয় ওঝার দিকে তৃণমূল কাউন্সিল অসীম বসু তেড়ে যান বলে অভিযোগ। তাঁর দাবি মেয়রকে নিয়ে এই ধরনের মন্তব্য করা যায় না। এরপরই শুরু হয় বাকযুদ্ধ। তারপর তা গড়ায় হাতাহাতিতে।