কলকাতা: একসময় তাঁকে দলের ‘তাজা নেতা’ বলেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সেই পার্থ এখন জেলে। আর তাঁর ‘তাজা নেতা’-র সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছে তৃণমূল। তবে দলকে ‘ভালবেসে’ তৃণমূলের শহিদ দিবস পালনে ধর্মতলায় পৌঁছে গেলেন ভাঙড়ের ‘তাজা নেতা’ আরাবুল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন তাঁর ছেলে। মঞ্চের নিচ থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য শুনলেন।
রবিবার সকাল থেকে ধর্মতলায় তৃণমূলের শহিদ দিবসে দলের কর্মী-সমর্থকদের ভিড় উপচে পড়ে। তারই মাঝে দাঁড়িয়ে আরাবুল ইসলাম। শরীর খানিকটা ভেঙেছে। দেখে কে বলবে, তিনিই একদিন ভাঙড়ে তৃণমূলের শেষ কথা ছিলেন। পাশে দাঁড়িয়ে ছেলে। আরও কয়েকজন রয়েছেন। কিছুদিন আগেই জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। খুন-সহ একাধিক মামলায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তাঁকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। প্রায় পাঁচ মাস পর জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে জামিন পান আরাবুল। কিন্তু, জামিন পেলেও তৃণমূলে ‘ব্রাত্য’ হয়ে যান তিনি। জেলে থাকার সময়ই তাঁকে ভাঙড়-২ ব্লক তৃণমূলের আহ্বায়ক পদ থেকে সরানো হয়। তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় মন্তব্য করেছেন ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লা।
এদিন সেসব নিয়ে কথা বলতে চাইলেন না আরাবুল। একুশে জুলাই এবং দলের প্রতি তাঁর ভালবাসার কথা শোনালেন। ভাঙড়ের ‘তাজা নেতা’ বলেন, “২১ জুলাই একটা আবেগপূর্ণ দিন। সেই কারণে ধর্মতলায় এসেছিলাম। আমার সঙ্গে প্রচুর মানুষ এসেছিলেন।” তারপরই বললেন, “আমি দলকে ভালবাসি। দল যদি মনে করে আরাবুলকে দরকার নেই, সেদিন থেকে দল করব না।”
দলের কোনও শীর্ষ নেতার সঙ্গে দেখা গেল না তাঁকে। তা নিয়ে কোনও আক্ষেপ নেই ভাঙড়ের প্রাক্তন এই বিধায়কের। বললেন, “আমি মঞ্চের নিচেই ছিলাম। মঞ্চে উঠিনি। কারও সঙ্গে কথা হয়নি। দিদি ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য শুনে চলে এসেছি। আমার নেতাদের সঙ্গে দেখা করিনি। কারণ, আমার এমনিতে শরীর খারাপ। হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা রয়েছে। তবে বিভিন্ন জেলার নেতাদের সঙ্গে কথা হয়েছে।”
তাঁর বিরুদ্ধে যাঁরা বলছেন, এখনই তাঁদের নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চান না আরাবুল। সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে চান। বললেন, “কে কার বিরুদ্ধে বলছে, তা নিয়ে আমি এখন কিছু বলব না। আমার সময় হলে ঠিক বলব।” সেই ঠিক সময়ের অপেক্ষা নিয়েই ধর্মতলা ছাড়লেন আরাবুল।