কলকাতা: এক দলে থেকে কাজ করলে মান অভিমান হবে। আর যারা অভিমানী, তাঁরা যদি দলের মূল্যবান সম্পদ হন তবে মান ভাঙানোর কাজটাও শীর্ষ নেতৃত্বই করবেন। এতে তো ভুল কিছু নেই। নন্দীগ্রামের শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ বিজেপি (BJP) নেতাকে মমতা যে ফোন করেছিলেন, সেই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এমন সুরই শোনা গেল সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের (Subrata Mukherjee) মুখে। এমনকি, এই নিয়ে মন্তব্য রাখতে গিয়ে খোদ দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর (Indira Gandhi) উদাহরণও টেনে আনেন বাংলার বরিষ্ঠ এই রাজনীতিক।
ভারতীয় রাজনীতিতে অভিজ্ঞতার দিক থেকে হাফ সেঞ্চুরি পার করে ফেলেছেন সুব্রত। কংগ্রেসী ঘরানার এই নেতা নিজের রাজনৈতিক জীবনের মধ্যাহ্নে দেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। প্রণব মুখোপাধ্যায় এবং প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সির মতো বাংলার কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গেও তাঁর নিয়মিত ওঠাবসা ছিল। আজ মমতার সেই ফোন নিয়ে কথা বলার সময় অতীতের সেই নস্ট্যালজিয়া প্রকাশ পেল সুব্রতর কথায়।
তৃণমূল ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোনের প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমার রাজনৈতিক জীবনে আমিও দেখেছি। বহুবার যখন অভিমান করে বাড়িতে বসেছিলাম, তখন কখনও প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সি, কখনও ইন্দিরা গান্ধী পর্যন্ত লোক পাঠিয়েছেন আমার মান ভাঙানোর জন্য। হয়তো চেষ্টা করে কখনও পেরেছেন কখনও পারেননি।” মমতাকে সমর্থন করে ঠিক এখানেই সুব্রতর প্রশ্ন, “একজন নিষ্ঠাবান কর্মী যদি অন্য জায়গায় চলে যায়, তখন কি একজন নেত্রী তাঁকে ফোন করে সুন্দরভাবে অনুরোধ করতে পারবেন না?”
আরও পড়ুন: ‘মমতার প্রতি শ্রদ্ধা বেড়ে গেল’, প্রশংসা সুব্রতর, কুণাল বললেন, ‘কোনও ভুল করেননি নেত্রী’
কিন্তু, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোন করার বিষয়টি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, তা কখনই কাম্য নয় বলে দাবি করেন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী। সুব্রতর পাশে বসে থাকা তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে আবার বলতে শোনা যায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন বিজেপি নেতাকে ফোন করেননি। তিনি একজন প্রাক্তন তৃণমূলের নেতাকে ফোন করেছিলেন। এটা কোনও ভাবেই ভুল নয়।” একজন কর্মীর সঙ্গে দলীয় নেতৃত্বের এমন সম্পর্কই হওয়া উচিত বলে মনে করছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন: ‘এটা দেউলিয়াপনার প্রকাশ’, অডিয়ো ক্লিপ বিতর্কে মমতাকে নিশানা শুভেন্দুর