‘পৃথক উত্তরবঙ্গ’ বিতর্কে সুর সপ্তমে তৃণমূলের, পদ্মকে তুলোধোনা করে শুরু #BengalStandsUnited প্রচার

শাসকদলের তামাম নেতারা বিরোধী শিবিরের বিরুদ্ধে 'চক্রান্তের' অভিযোগ তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো ঝড় তুলেছেন। ঘাসফুলের তরফে টুইটারে হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ড করানো হচ্ছে, #BengalStandsUnited। অর্থাৎ,'একতার বাংলা।'

'পৃথক উত্তরবঙ্গ' বিতর্কে সুর সপ্তমে তৃণমূলের, পদ্মকে তুলোধোনা করে শুরু #BengalStandsUnited প্রচার
অলংকরণ-অভিজিৎ বিশ্বাস
Follow Us:
| Updated on: Jun 18, 2021 | 9:02 PM

কলকাতা: বিতর্কের আগুনে ঘি ঢেলেই নতুন করে ‘পৃথক উত্তরবঙ্গের’ দাবিতে সুর চড়িয়েছেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা। ফলে গত দু’দিন আগে পর্যন্ত যে দাবিকে শুধুই সোশ্যাল মিডিয়ার গুঞ্জন বলে মনে হচ্ছিল, তা এখন কিছুটা জমি পেতে শুরু করেছে। আর এই দাবি উঠতেই আবারও গর্জন করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। শাসকদলের তামাম নেতারা বিরোধী শিবিরের বিরুদ্ধে ‘চক্রান্তের’ অভিযোগ তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো ঝড় তুলেছেন। ঘাসফুলের তরফে টুইটারে হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ড করানো হচ্ছে, #BengalStandsUnited। অর্থাৎ,’একতার বাংলা।’

বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য দলের তরফে এমন কোনও দাবি তোলা হয়নি বলেই জানিয়েছেন। কিন্তু, সম্প্রতি বিজেপি সাংসদ জন বার্লাকে বলতে শোনা যায়, উত্তরবঙ্গকে ‘পৃথক রাজ্য’ অথবা ‘কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল’ ঘোষণা করার দাবি দিল্লিতে তুলবেন উত্তরবঙ্গের বিজেপি সাংসদরা। আলিপুরদুয়ার থেকে নির্বাচিত হওয়ার পর সংসদেও তিনি এই সংক্রান্ত বিষয় উপস্থাপন করেছিলেন ‘মানুষের ইচ্ছার’ অছিলায়। যদিও দিলীপ ঘোষ এই নিয়ে পালটা তৃণমূলের বিরুদ্ধেই তোপ দেগেছেন। তিনি জানান, বিজেপির এজেন্ডায় এমন কোনও উদ্দেশ্য নেই। সঙ্গে বলেন, “বিজেপিকে দোষ দেওয়া তৃণমূলের অভ্যাস।”

দিনদুয়েক আগে নবান্ন সভাঘরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনেও বিষয়টির উত্থাপন হয়। সেই সময় কড়া প্রতিক্রিয়া দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “মনে হচ্ছে যেন মহারানি নিজেই যেন নিজের ঘরের অলঙ্কার বিলি করছেন। যেন দেশটাকে এমন মনে করছে বিজেপি। এত সহজ?” সঙ্গে তিনি আরও যোগ করেন, “দক্ষিণবঙ্গ পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে। উত্তরবঙ্গও পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে। কোনওরকম ভাগাভাগি আমি করতে দেব না। রাজ্য সরকারের অনুমতি ছাড়া এসব হবে না। বিজেপি যদি মনে করে জলপাইগুড়ি বিক্রি করে দেব, অত সস্তার নয়, বিজেপি যদি মনে করে আমি আলিপুরদুয়ার বিক্রি করে দেব, কোচবিহার বিক্রি করে দেব, দার্জিলিং বিক্রি করে দেব, অত সস্তার নয়। আমি বাংলাকে পরাধীন করতে দেব না। নিজেরা দিল্লি সামলাতে পারে না।”

গোটা বিতর্কের রেশ যাতে জাতীয় স্তরেও ছড়িয়ে দেওয়া যায় তা সুনিশ্চিত করতেই এ বার বিষয়টি নিয়ে টুইটারে প্রচার শুরু করেছে তৃণমূল। একের পর এক টুইট করেছেন শাসকদলের নেতারা। পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেতে ফিরহাদ হাকিম, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য থেকে কাকলি ঘোষ দস্তিদার। সকলেই টুইটে একসুরে লিখেছেন, ‘বাংলার একতা বজায় থাকবে।’

শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন, “বিজেপির শাসনে বিষ উগরে দেওয়ার অভাব নেই। মে মাস থেকে শিক্ষা নিন, বাংলার মানুষের সঙ্গে এসব করে লাভ হবে না। জন বার্লা আপনি, এবং বন্ধুরা আবার নিজেদের অপদস্থ করবেন না।”

পুরমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য লেখেন, “বিজেপি নেতাদের দাবি তাদের ভবিষ্যতের মতোই অবাস্তব এবং সংশয়ে ভরপুর। আপনারা যদি ২ মে পরিষ্কারভাবে না বুঝে গিয়ে থাকেন তবে আরও একবার মনে করিয়ে দেই, বাংলার একতা বজায় আছে।”

আরও পড়ুন: ‘কৌশিক চন্দ সক্রিয় বিজেপি সমর্থক ছিলেন’, পক্ষপাতদুষ্ট রায়ের আশঙ্কায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে চিঠি মমতার

তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারও টুইট করে লিখেছেন, “উত্তরবঙ্গের মানুষের প্রতি বাংলার বিজেপি নেতাদের ভিত্তিহীন মন্তব্য এবং অসংবেদনশীল মনোভাব তাঁদেরই ক্ষতি করবে। বাংলার একতা বজায় রয়েছে। আমরা কেন্দ্রের অপশাসনকে আমাদের সুন্দর পাহাড়ের ক্ষতি করতে দেব না।” একই সুরে টুইট করেছেন তৃণমূলের বাকি নেতারাও।