‘কৌশিক চন্দ সক্রিয় বিজেপি সমর্থক ছিলেন’, পক্ষপাতদুষ্ট রায়ের আশঙ্কায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে চিঠি মমতার

বিচারপতি কৌশিক চন্দের ইতিহাস টেনে মমতা দাবি করেছেন, আইনজীবী থাকাকালীন কৌশিক চন্দ সক্রিয় বিজেপি কর্মী ছিলেন। তিনি এই মামলার বিচার করলে রায় পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারে, এমন দাবি তোলা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর তরফে।

'কৌশিক চন্দ সক্রিয় বিজেপি সমর্থক ছিলেন', পক্ষপাতদুষ্ট রায়ের আশঙ্কায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে চিঠি মমতার
বিচারপতি কৌশিক চন্দ (ডানদিকে)
Follow Us:
| Updated on: Jun 18, 2021 | 5:38 PM

কলকাতা: ভোটের লড়াই এখন পৌঁছে গিয়েছে সোজা হাইকোর্টে। নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর জয়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী করা মামলায় এ বার বিচারপতিকে নিয়ে প্রশ্ন উঠল। এবং যে বিচারপতির এজলাসে এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে তা সরানোর আবেদন জানালেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী। বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাস থেকে মামলা সরানোর আবেজন জানিয়ে হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দালকে একটি চিঠি দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী।

বিচারপতি কৌশিক চন্দের ইতিহাস টেনে মমতা দাবি করেছেন, আইনজীবী থাকাকালীন কৌশিক চন্দ সক্রিয় বিজেপি কর্মী ছিলেন। তিনি এই মামলার বিচার করলে রায় পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারে, এমন দাবি তোলা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর তরফে।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে দেওয়া চিঠিতে মমতা মনে করিয়ে দিয়েছেন, কোনও আইনজীবী বিচারপতি হওয়ার সময় মুখ্যমন্ত্রীর সম্মতি প্রয়োজন হয়। কৌশিক চন্দ আইনজীবী থেকে বিচারপতির পদে উন্নীত হওয়ার সময় মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও এই বার্তা গিয়েছিল এবং সেই সময় তিনি আপত্তি তুলেছিলেন। যেহেতু কৌশিক চন্দ সক্রিয় বিজেপি সমর্থক ছিলেন তাই মুখ্যমন্ত্রীর তাঁকে বিচারপতির পদে উন্নীত করা নিয়ে আপত্তি ছিল।

যদিও তারপর বিচারপতির পদে শপথ নেন কৌশিক চন্দ। ঠিক এখানেই মমতার প্রশ্ন, যেখানে স্পর্শকাতর মামলাটি খোদ একজন বিজেপি প্রার্থীর জয়ের বিরুদ্ধে, সেখানে এই বিচারপতি কী ভাবে মামলাটি শুনতে পারেন! তিনি শুনলেও রায় পক্ষপাতদুষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। প্রসঙ্গত, শুক্রবার মামলাটি এজলাসে উঠলে আইনজীবীদের একাংশও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলেন। এ দিন দেখা যায়, যখন হাইকোর্টে মামলাটি দায়ের হয় সেদিনই আপত্তি তোলেন মমতা।

আরও পড়ুন: দিলীপ ঘোষের মঞ্চে ইনি কে? নন্দীগ্রাম মামলার বিচারপতি কৌশিক চন্দকে নিয়ে উঠল প্রশ্ন

গোটা বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিশিষ্ট আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তাঁর স্পষ্ট কথা, “এই ধরনের কথা যারা বলছেন তাঁরা কিন্তু বিচার ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। ছাত্র জীবনে অনেকেই রাজনীতি করেন। কিন্তু বিচারপতি হওয়ার পর শপথ নিয়ে তিনি কী ভূমিকা পালন করছেন সেটাই বিচার্য। তিনি আগে কী করেছেন সেটা বিচার্য হতে পারে না। কৌশিক চন্দ বিচারপতি হওয়ার পর কোনও রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশ নিয়েছেন বলে আমার জানা নেই। আজ মুখ্যমন্ত্রী যেটা করছেন এটা মারাত্মক ঝোঁক। এক সাংবিধানিক ব্যবস্থার প্রধান অন্য একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করছেন, এর পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে।”

আরও পড়ুন: শুধু নন্দীগ্রাম নয়, ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা পাঁচ তৃণমূল প্রার্থীর