সকাল থেকে বৃষ্টি ধরেছে! ওরা স্বামীর দেহ নিয়ে এল বলে! ঠায় দাওয়ায় বসে অপর্ণা

বৃহস্পতিবার রাতে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে হরিদেবপুরের (Haridebpur) মানিক বারুইয়ের গায়ে। মৃত্যু হয় তাঁর।

সকাল থেকে বৃষ্টি ধরেছে! ওরা স্বামীর দেহ নিয়ে এল বলে! ঠায় দাওয়ায় বসে অপর্ণা
নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: Jun 18, 2021 | 6:40 PM

কলকাতা: গাড়ি চালিয়ে সংসার চালাতেন হরিদেবপুরের মানিক বারুই (৩৬)। সংসারের একমাত্র রোজগেরে তিনিই ছিলেন। স্ত্রী, ছোট্ট মেয়ের সব দায়িত্ব তাঁরই কাঁধে। বৃহস্পতিবার মানিকের চলে যাওয়ার খবরে দিশাহারা পরিবার। প্রিয়জনকে হারানোর শোক, একইসঙ্গে অনিশ্চিত আগামীর হাতছানি। কী ভাবে সামলাবেন, ভাবনার কূল কিনারা পাচ্ছেন না স্ত্রী অপর্ণা বারুই।

বৃহস্পতিবার রাত তখন ১১টার কাছাকাছি। তুমুল বৃষ্টি বাইরে। চারদিক মনে হচ্ছে ভেসে যাচ্ছে। এরই মধ্যে বাইক চালিয়ে কুলতলি থেকে বাড়ি ফিরছিলেন মানিক। হরিদেবপুর থানার নবপল্লির গোপালনগরে বাড়ি তাঁর। এলাকায় ঢোকার মুখেই পড়ে নবপল্লি ২২ বিঘা। সেখানেই রাস্তার ধারে একটি বিদ্যুতের খুঁটি থেকে তার ছিঁড়ে পড়ে মানিকের গায়ের উপর। হাতে জড়িয়ে বাইক উল্টে সোজা মাটিতে তিনি। চারদিক জলে থই থই। কেউ কোত্থাও নেই! ততক্ষণে মানিকও নেই আর।

রাতে বাড়িতে এসে যখন পড়শিরা খবর দেয়, অপর্ণার মাথায় বাজ পড়ে! হাসিখুশি মানুষ, খেয়েদেয়ে বাড়ি থেকে বেরোল, বলে গেল তাড়াতাড়ি ফিরবে। প্রতিবেশীরা এখন কি না বলছে সব শেষ! ছ’ বছরের মেয়েকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্ত্রী। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত দেহ মর্গেই রাখা রয়েছে। বৃদ্ধ বাবা গিয়েছেন সেখানে। অপর্ণা ছোট্ট মেয়ে ভূমিকে নিয়ে ঘরের দাওয়ায় বসে। বাড়ি ভর্তি লোক।

আরও পড়ুন: বৃষ্টির রাতে বাড়ি ফিরছিলেন, গায়ের উপর পড়ল বিদ্যুতের তার! মুহূর্তে শেষ বছর ছত্রিশের প্রাণ

নিজেকে পাথর করে রেখেছেন অপর্ণা। তিনিই জানালেন, “গতকাল রাতে কুলতলি থেকে ডিউটি করে ফিরছিল। রাতে পাড়ার লোকজনের কাছ থেকে খবর পেলাম ও রাস্তায় পড়ে রয়েছে।” স্থানীয় একটি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলে নার্সারি-টু তে পড়ে মানিকবাবুর বছর ছয়েকের মেয়ে ভূমি। মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে চোয়ালে চোয়াল চেপে স্বামীর অপেক্ষায় স্ত্রী। হাসপাতালের সমস্ত নিয়ম মিটলে তার পর দেহ ছাড়বে ওরা!