কলকাতা : পার্থ চট্টোপাধ্যায় আর অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) ক্ষেত্রে দলের অবস্থানের অনেক তফাত ছিল বরাবর। গ্রেফতারির পর পার্থর মন্ত্রিত্ব বা পদ সরাতে বেগ পেতে হয়নি তৃণমূলকে (TMC)। কিন্তু, ইডি-সিবিআই পেরিয়ে প্রায় ৭ মাস পর আজও নিজ পদে বহাল বীরভূমের কেষ্ট মণ্ডল। তবে অনুব্রতর তিহাড় যাত্রায় কি সুর বদলাচ্ছে ঘাসফুল শিবিরের? মঙ্গলবার আদালত যে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে, তার কিছুক্ষণের মধ্যেই তৃণমূলের গলায় শোনা গেল কড়া সুর! ‘মন্ত্রীর বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, আর জেলা সভাপতি তো ছোট বিষয়’, সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এমনটাই বললেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা।
শশী পাঁজা এদিন বলেন, ‘তৃণমূল হল এমন একটি দল, যারা একজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী জেলে যাওয়ার পর তাঁকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়েছে। দলীয় পদ থেকেও সরানো হয়েছে। একজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আর জেলা সভাপতি তো ছোট বিষয়।’ সেই সঙ্গে তিনি আরও একবার স্পষ্ট করে দেন, কোনও নেতা না কর্মীর দুর্নীতির দায় দলের নয়। শশী পাঁজা বলেন, ‘দল কাউকে বলেনি দুর্নীতি করতে। তারপরও কারও অভিযোগ উঠলে, তার দায় তাকেই নিতে হবে। সেই দুর্নীতির দায় দল নেবে না।’
এতদিন ঠিক কী বলছিল তৃণমূল? গত বছরে ফিরে যাওয়া যাক! অগস্ট মাসে অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার কিছুদিন পর মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘কেষ্টকে বীরের সম্মান দিয়ে জেল থেকে বের করে আনতে হবে।’ সেখানেই শেষ নয়, অতি সম্প্রতিও মমতাকে বলতে শোনা গিয়েছে, পঞ্চায়েতের আগে অনুব্রতকে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া নাকি আদতে বিরোধীদের চক্রান্ত। এছাড়া ফিরহাদ হাকিমকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘অনুব্রত আজও বীরভূমের বাঘ।’ মমতা নিজে হাতে বীরভূমের দায়িত্ব সামলাবেন বলেছেন, তবু অন্য কোনও নেতার হাতে বীরভূমের সভাপতি পদ তুলে দেননি। এত মাস পরও সেই পদে স্বমহিমায় রয়েছেন অনুব্রত। বিরোধীদের কটাক্ষ সত্ত্বেও পারতপক্ষে কেষ্ট সম্পর্কে কোনও নেতিবাচক মন্তব্যও করতে শোনা যায়নি তৃণমূলের কোনও সদস্যকে। তবে শশী পাঁজা মন্তব্যে কী ইঙ্গিত মিলছে? তা নিয়েই বাড়ছে জল্পনা।