
কলকাতা: কলেজে ভর্তি নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। মানিকতলার বিধায়ক সুপ্তি পাণ্ডে ও তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষের অনুগামীরা দ্বন্দ্বে জড়ান। এবার তা নিয়ে তৃণমূল বিধায়ক ও দলের রাজ্য সম্পাদক পরস্পরকে খোঁচা দিলেন।
ঘটনার সূত্রপাত ক্ষুদিরাম বোস সেন্ট্রাল কলেজে ভর্তিকে কেন্দ্র করে। কামাল হাসান নামে এক পড়ুয়া অনলাইন পোর্টালে দু’বার আবেদন করেছিলেন। সেই নিয়েই যত গন্ডগোল। দিন তিনেক আগে কুণাল ঘোষের সমর্থকরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলে সুপ্তী পাণ্ডের অনুগামীরা পেপার স্প্রে করে বলে অভিযোগ। ঘটনায় কুণাল অনুগামীরা থানায় অভিযোগ করতে আসলে তাদের মধ্যে তিন জনকে আটক করে বড়তলা থানার পুলিশ। খবর পেয়ে কুণাল ঘোষ বড়তলা থানায় উপস্থিত হন। ঘটনায় কলেজের প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে সরব হন তিনি। বলেছিলেন, “কারও কারও নির্দেশে প্রিন্সিপালের চেয়ার বসে কাউকে ফাঁসানোর চেষ্টা করবেন, এটা হতে পারে না।” রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, কুণালের নিশানায় মানিকতলার বিধায়ক সুপ্তি পাণ্ডে।
মানিকতলায় উপনির্বাচনে সুপ্তি পাণ্ডের কোঅর্ডিনেটর ছিলেন কুণাল। কিন্তু, সেই কুণাল এরকম মন্তব্য করায় সুপ্তি পাণ্ডে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কুণালবাবু নির্বাচনের সময় আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। অনেক সাহায্য করেছেন। তিনি ১০০ শতাংশ আমার শুভাকাঙ্ক্ষী। তবে মাঝে মাঝে কুণালের কী হয়, আমাকে বুঝে দেখতে হবে। সেটা সামনাসামনি বলব। টিভিতে বলব না। তাঁর যদি কোনও কনফিউশন থাকে, তাহলে সবসময় এসে আমাকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন, বৌদি এটা আমার ভাল লাগছে না।”
এখানেই না থেমে তিনি বলেন, “কুণাল থানায় গিয়েছেন, ভাল করেছেন। তবে আমার সঙ্গে একবার আলোচনার প্রয়োজন ছিল। বলতে পারতেন, বৌদি যেটা শুনছি, সেটা কি ঠিক? কুণাল তো আমার ঘনিষ্ঠ। উল্টে যাঁরা ওই কলেজের নন, তাদের কথা শুনলেন। দুটো জিনিস হল। এক আমাকে অপমানিত করা। দুই প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে অপমানিত করা।”
একইসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “আমার ছাত্রদের নিয়ে কিছু বলার নেই। কিন্তু, আমার বিরোধী গোষ্ঠীর ছাত্র, এ কথাটা প্রমাণ করতে চাইলেন কে? যিনি এটা চাইছেন, তিনি কি দলের আদৌ ভাল চান? এলাকার শান্তি চান?”
অন্যদিকে, সুপ্তি পাণ্ডের মন্তব্য নিয়ে কুণাল ঘোষের জবাব, “বৌদিকে আমি শ্রদ্ধা করি। সম্মান করি। ঘরের লোক।” একইসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “যাঁরা আমার মিটিং, মিছিলে আসেন, আমাকে দাদা বলে ডাকেন, তাঁরা কোনও বিপদে পড়লে আমায় ডাকলে যাব। যতবার ডাকবে, ততবারই যাওয়ার চেষ্টা করব।”
থানায় যাওয়ার আগে তাঁর সঙ্গে আলোচনা করার প্রয়োজন ছিল বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্তি পাণ্ডে। এই নিয়ে কুণালের জবাব, “ওখানে গিয়ে আমি তো কোনও অন্যায়কে সমর্থন করছি না। সটান ওসির কাছে গিয়েছি। কী হয়েছে কথা বলে জেনে নিচ্ছিলাম।”