কলকাতা: ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনকে পাখির চোখ করে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মেগা সমাবেশ আয়োজন করেছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের বড়মাপের কেন্দ্রীয় সভা-সমাবেশ মানেই প্রত্যাশিতভাবে তাতে প্রধান বক্তা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার বক্তব্য দিয়েই তৃণমূলের সভা শেষ হয়, এটাই দলের রীতি। বিগত কয়েক বছর ধরেই মমতা বক্তব্যের আগে দলের ‘নম্বর টু’ হিসেবে বক্তব্য রাখেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোরের সমাবেশে অভিষেকের পরে এবং মমতার ঠিক আগে বক্তব্য রাখতে আহ্বান করা হয় শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে মমতা-অভিষেকের সামনে রীতিমতো বোমা ফাটালেন বর্ষীয়াণ সাংসদ। দিলেন বিরোধীদের হাত ভেঙে দেওয়ার হুমকিও।
নেতাজি ইন্ডোরের সমাবেশে এদিন কল্যাণ বলেন, “কেউ কেউ বলছে হাত কেটে দেব, পা কেটে দেব, আয় দেখে নেব। আমি তাদের বলতে চাই শুনে রাখ, দিদি বলেছে ভাল করে থাকতে, শান্ত হয়ে থাকতে তাই শান্ত হয়ে রয়েছি। দিদি বলেছে, ‘বদলা নয় বদল চাই’ তাই চুপ করে রয়েছি। কিন্তু আজ বলে দিয়ে যেতে চাই, যদি কোনও বিজেপির লোক বলে হাত ভেঙে দেব, তবে হাত তোলার আগে আমরা তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা সেই হাত ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখি। আমি কোনও ‘ফাইন’ ভাষায় কথা বলতে পারব না। আমাকে ভাল লাগুক আর খারাপ লাগুক, আমি যা আমি তাই। আমরা কোনও কর্মীর গায়ে হাত পড়লে, আমিও লড়ে নেব, আমি ছাড়ব না।”
বক্তৃতা দেওয়ার সময় ২০১১ সালে মমতার দেওয়া ‘বদলা নয় বদল চাই’ স্লোগানের কথা মনে করিয়ে অভিষেক বলেন, আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে গণতান্ত্রিকভাবে লড়াই করে জিতবে তৃণমূল। তার ঠিক পড়েই কল্যাণের এই বক্তব্যে তৃণমূলকর্মীদের হাততালিতে ফেটে পড়ে নেতাজি ইন্ডোর। বক্তব্য শুরুর সময় এদিন তাৎপর্যপূর্ণভাবে অভিষেককে ‘অত্যন্ত প্রিয়’ ও ‘পুত্রসম’ বলে সম্বোধন করেন কল্যাণ। করোনা মোকাবিলায় ‘ডায়মন্ত হারবার মডেল’ এই কল্যাণকেই অভিষেককে কটাক্ষ করতে শোনা গিয়েছিল। এমনকী অভিষেকের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কল্যাণ। কল্যাণের সঙ্গে দলের দূরত্ব তৈরির যে জল্পনা তৈরি হয়েছিল, তা যে অনেকটাই সমাধান হয়েছেন এদিন তা স্পষ্ট। কল্যাণের বক্তব্য প্রসঙ্গে মমতা বলেন, “কল্যাণের বক্তব্য আমাকে পুরনো অনেক কথা মনে করিয়ে দিল… কল্যাণ নিজের মতো বলেছে। ওই ভাষায় আমি কথা বলতে পারি না, আমার জিভ লক লক করে। “