কলকাতা: টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন করে নিয়মভঙ্গের অভিযোগ উঠেছিল মহুয়া মৈত্রের নামে। সংসদের এথিক্স কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে শুক্রবার মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ বাতিল ঘোষণা করেন লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা। এরপরই ইন্ডিয়া জোটের সদস্যরা পাশে এসে দাঁড়ান মহুয়ার। সংসদের বাইরে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বিরোধীরা বিক্ষোভ দেখান। আর সেখানে মহুয়ার পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় কংগ্রেস দলনেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে। দাঁড়িয়ে ছিলেন ফারুক আবদুল্লা। সংসদভবনেও মহুয়ার হয়ে গলা ফাটাতে দেখা যায় অধীর চৌধুরীকে। এদিকে সংসদভবনের ভিতরে এবং বাইরে এভাবে মহুয়ার পাশে দাঁড়ানোর জন্য বারবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইন্ডিয়া জোটের সদস্যদের ধন্যবাদ জানান। মমতার মুখে শোনা যায়, একসঙ্গে লড়ার কথাও।
এদিন লাগাতার মহুয়া মৈত্রের পাশে দাঁড়িয়েছেন কংগ্রেসের সদস্যরা। অধীর চৌধুরী কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা হয়ে তৃণমূলকে বিভিন্ন ইস্যুতে আক্রমণ শানান। তবে মহুয়া-ইস্যুতে সেই অধীরই অধ্যক্ষকে চিঠি লিখেছিলেন এবং চিঠির ছত্রে ছত্রে এথিক্স কমিটির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
আজ মহুয়াকে সাংসদ পদ থেকে বহিষ্কারের পরই বিরোধীরা ওয়াকআউট করে। বাইরে বেরিয়ে আসার পর দেখা যায় একেবারে প্রথম সারিতে ছিলেন সোনিয়া গান্ধী। গান্ধীমূর্তিতে ধরনা প্রতিবাদের সময়ও সোনিয়া গান্ধীকে মহুয়ার পাশে এসে দাঁড়াতে দেখা যায়। মহুয়ার সঙ্গে হাত মেলান তিনি। মহুয়ার লড়াইয়ের জন্য তাঁকে শুভেচ্ছাও জানান কংগ্রেস দলনেত্রী। মহুয়া এদিন এগিয়ে গিয়ে হাত মেলাতেও দেখা যায় অধীরের সঙ্গে।
জাতীয় রাজনীতি হোক বা রাজ্য রাজনীতি এই ছবিগুলো অত্যন্ত বিরল। বিশেষ করে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের পর বিরোধী দলগুলির মধ্যে যে পারস্পরিক বোঝাপড়ার একটা ঘাটতির জায়গা তৈরি হয়েছিল, ইন্ডিয়া জোটের সামগ্রিক চালচিত্র নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল, সেখানে মহুয়া ইস্যু আবারও একটা ঐক্যবদ্ধ চেহারা তুলে ধরল ইন্ডিয়া জোটের।
একদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন যখন বলেছেন, ইন্ডিয়া জোটের সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করবেন। তখন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে মহুয়ার পাশে দাঁড়িয়ে বলতে শোনা গিয়েছে, “সংসদের মধ্যে দাঁড়িয়ে মোদীজি এবং তাঁর দল মহিলাদের মহিমান্বিত করে দলের ভোটব্যাঙ্ক বাড়ায়। সেখানে বাংলার একটা মেয়েকে তাঁর অপরাধ কী না জানিয়ে ফাঁসি দিয়ে দেওয়া হল। বিচারকও ফাঁসির আগে আসামীকে জিজ্ঞাসা করে কিছু বলার আছে কি না। এখানে সেই সুযোগও দেওয়া হল না। তাঁদের পছন্দ নয় বলে একেবার খতম করে দাও।”