কলকাতা: দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে এবার সীমান্তরক্ষী বাহিনী অথবা বিএসএফ (BSF) কে অতিরিক্ত ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। এ নিয়ে বুধবার তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায় (Sougata Roy) ও বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumder) জড়ালেন আক্রমণ ও প্রতি-আক্রমণে। সেখান থেকে দুই তরফের কটাক্ষ গিয়ে ঠেকল বাংলাদেশ প্রসঙ্গে। সৌগতের দাবি, বিএসএফের পরিধি বাড়ানো মানে রাজ্যের অধিকারের ওপর আঘাত হানা। সুকান্তের কটাক্ষ, “সৌগত রায় ফিজিক্সের লোক। ওনার লাইন এবং স্পেস সম্পর্কে ধারণা আছে বলে আমার মনে হয়।”
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকার তিনটি রাজ্যে সীমানার ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত গ্রেফতার, তল্লাশি এবং বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতা পাচ্ছে বিএসএফ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী এবার পঞ্জাব (Punjab), অসম (Asam) এবং পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ভারতীয় ভূখণ্ডে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় বিএসএফ গ্রেফতার, তল্লাশি এবং বাজেয়াপ্ত করার কাজ করতে পারবে। তবে তৃণমূলের (TMC) অভিযোগ, বিএসএফের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে আদতে রাজ্যের অধিকারে আঘাত হানা। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে এমনই মন্তব্য করেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়।
তাঁর দাবি, বিএসএফ স্মাগলার ধরার নাম করে গ্রামবাসীদের ওপর অত্যাচার করে। ওদের পরিধি বাড়ানো মানে রাজ্যের অধিকারের ওপর আঘাত হানা। শুধু তাই নয় সীমান্ত বাহনীকে নিয়ে সৌগত বলেন, “আমরা সংসদে সরব হব। বিএসএফ অমিত শাহের নেতৃত্বে একটি অপদার্থ সংগঠন। অপরাধীদের সঙ্গে গাঁটছড়া থাকে বলেই স্মাগলার ধরতে পারে না বিএসএফ।”
এদিকে এর অব্যবহিত পরে সাংবাদিক বৈঠক করেছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। সেখানে সুকান্ত মজুমদারের টিপ্পনী, “সৌগত রায় ফিজিক্সের লোক, ওনার লাইন এবং স্পেস সম্পর্কে ধারণা আছে বলে আমার মনে হয়। বর্ডার একটা সরু রেখা। সেখানে পৌঁছনোর জন্য যে এলাকা দিয়ে যেতে হয়, সেটা পুলিশের নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকা।” তারপর সুকান্ত টেনে আনেন বাংলাদেশ প্রসঙ্গ। বলেন, এ চক্রান্ত কাদের, সেটা সৌগত রায় বলতে পারবেন। কিন্তু সেখানে হিন্দু বাঙালিরা আক্রান্ত। তৃণমূল নাকি আমাদের চেয়েও বেশি বাঙালি! তৃণমূলের উচিত ছিল এর প্রতিবাদ করা। আমরা বাঙালিয়ানার টানে অত্যাচারিত বাঙালি হিন্দুর পাশে দাঁড়িয়েছি।
এদিকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনা প্রসঙ্গে এদিন রাজ্যের শাসক দলের তরফে সৌগত রায় বলেছেন, “সুকান্ত মজুমদার ৪১ বছর বয়স। এর আগে পঞ্চায়েত সদস্যও ছিলেন না। অভিজ্ঞতা নেই রাজনীতিতে। ওঁ কী বলল তার গুরুত্ব নেই। বাংলাদেশে ষড়যন্ত্র আছে। হিন্দুত্ব জাগাতে চাইছে। আমরা বিভাজনের বিপক্ষে। মোদী চুপ করে আছেন। মুখ্যমন্ত্রী কেন আন্তর্জাতিক বিষয়ে কথা বলবেন! দল প্রতিবাদ করছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হাসিনার প্রতি আস্থা আছে। বিজেপি শকুনের রাজনীতি করছে।”
এ নিয়ে সুকান্তের পাল্টা কটাক্ষ, ভারত সরকারের তরফ থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে সরকারি ভাবে কথা বলা হয়েছে। সরকারের অবস্থান লাউড অ্যান্ড ক্লিয়ার। সরকার (কেন্দ্রীয়) নিজের অবস্থান স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার কেন একটা টুইট করেও নিজের অবস্থান জানাচ্ছে না? তাঁর আরও সংযুক্তি, “প্রধানমন্ত্রী বাড়ি বাংলাদেশ থেকে অনেক দূরে। তার অনেক কাছে মুখ্যমন্ত্রী বাড়ি। তিনি তো বাংলাদেশের ঘটনা নিয়ে এখনও মুখ খোলেননি! কেন্দ্রীয় সরকার তো বাংলাদেশে সরকার কে তাদের মতামত জানিয়ে দিয়েছেন।”
আরও পড়ুন: Kanhaiya Kumar: ‘কংগ্রেসেই তো আজাদি,’ কাউচে গা এলানো কানহাইয়াকে দেদার ট্রোল নেটিজেনদেের