পঞ্চায়েত নির্বাচন আসন্ন। তার আগে ফের মেগা সমাবেশ তৃণমূল কংগ্রেসের। বৃহস্পতিবার সব স্তরের কর্মীদের নিয়ে সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। মঞ্চে বক্তব্য রাখবেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দলের শীর্ষ নেতারা। নির্বাচনকে সামনে রেখে বুথস্তরের কর্মীদের রণনীতি ঠিক করে দেওয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ‘এজেন্সি চাই না, চাকরি চাই’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে লড়াই করার কথা বললেন মমতা। তাঁর দাবি, তৃণমূল চায় কর্মসংস্থান, আর বিরোধীরা তা চায় না।
পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে তৃণমূল সুপ্রিমো দাবি করলেন টিকিটের জন্য লবি করতে হবে না, কাজের লোককে ঠিক খুঁজে নেবে দল। বিধানসভা নির্বাচনেও টিকিটের জন্য কোনও লবি করতে হয়নি বলে দাবি মমতার।
ফের একবার বামেদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ৩৪ বছরের একটা ফাইল পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘চাইলে সবকটাকে ধরে জেলে ভরতে পারতাম। কিন্তু তা করিনি।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে কেন ডাকা হল না বাংলাকে? শেখ হাসিনা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন মমতা। তাঁর দাবি এই প্রথমবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বাংলাকে বাদ দেওয়া হল। চিন, শিকাগোতে তাঁকে যেতে দেওয়া হয়নি বলে দাবি করেন মমতা।
‘কত বড় বড় সব নেতা… কল্যাণ কল্যাণের ভাষায় বলেছে। আমি তো ও সব ভাষায় বলতে পারি না। ওরা জানে না, কেটে দিয়ে রাজনীতি হয় না, ছেঁটে দিতে হয়।’ বিরোধীদের কড়া বার্তা মমতার
কেষ্টকে আটকাতে পারবেন না। বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তাঁর দাবি, অনুব্রত মণ্ডলকে জেলে আটকে রেখে বীরভূম থেকে লোকসভা আসন জিততে পারবে না বিজেপি। বীরভূমের নেতাদের বার্তা দেন তিনি। বলেন, ‘বীরের সম্মান দিয়ে কেষ্টকে বের করে আনতে হবে।’
অভিষেকের দাবি বিজেপি ক্ষমতায় এলে মেদিনীপুর- মোদীনীপুর হয়ে যেত আর দার্জিলিং- মোদীজিলিং হয়ে যেত।
সভা থেকে অমিত শাহকে আক্রমণ অভিষেকের। কেন ‘পাপ্পু’ প্রচার করা হচ্ছে ব্যাখ্যা দিলেন অভিষেক। তাঁর দাবি, অমিত শাহের মন্ত্রকের অধীনে থাকা এনসিআরবি বাংলাকে নিরাপদ বলে উল্লেখ করলেও বিজেপি বাংলাকে আক্রমণ করছে।
তৃণমূল গরিবের দল। আপনারা বস্তির পার্টি বলে অভিহিত করায় আমরা গর্ব বোধ করি। এই বস্তির কাছেই আপনাদের মাথা নত করে হার স্বীকার করতে হয়েছিল: অভিষেক
পুজোর অনুদান প্রসঙ্গে অভিষেকের দাবি, ১০০ বার অনুদান দেওয়া হবে। তিনি বলেন, পুজোয় ২৫০ কোটি টাকা ক্লাবগুলোকে দেওয়া হয়েছে, কেন দেবে না? ১০০ বার দেবে। গুজরাটে যদি ৩০০০ কোটি টাকার মূর্তি করতে পার, ৮০০০ কোটি টাকার প্লেন কিনতে পার, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২৫০ কোটি টাকা দিতে পারে না?
বিধানসভা নির্বাচনের আগে সমাবেশে যত মানুষ এসেছিলেন, এবার তার দ্বিগুন মানুষ এসেছেন বলে উল্লেখ করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, তৃণমূলকে যত বেশি আক্রমণ করা হয়, তৃণমূল তত বেশি শক্তিশালী হয়। ২৩-এর পঞ্চায়েতে আর ২৪-এর লোকসভায় বিরোধীদের ব্যালটে জবাব দেওয়ার বার্তা দিলেন তিনি। তাঁর কথায়, ইডি, সিবিআই-কে তোয়াক্কা না করে এগিয়ে যাবে তৃণমূল।
সভার শুরুতেই বক্তব্য রাখলেন সৌগত রায়, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। সভাস্থলে পৌঁছলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সামনে একটা বড় পরীক্ষা, লোকসভা নির্বাচন প্রসঙ্গে বললেন সাংসদ সৌগত রায়। তাঁর দাবি, সিবিআই রেড করা মানেই যে কিছু পাওয়া যাবে তা নয়। সাংসদ বলেন, ‘মলয় ঘটকের বাড়িতে কিছু পায়নি, খালি হাতে চলে গিয়েছে। ওদের পলিসি হিট অ্যান্ড মিস। অর্থাৎ ১০ জায়গাকে নিশানা করা হলে একটা জায়গায় কিছু পাওয়া যাবে।’
অন্য দলগুলোকে ধ্বংস করে দেওয়ার চেষ্টা করছে বিজেপি, আর তার সঙ্গী সিপিএম। বললেন মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, তৃণমূল কোনও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবে না। মন্ত্রী বলেন, ‘বিজেপি বাংলার মাটিতে হাজার হাজার টাকা খরচ করেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারাতে পারেনি।’ যা হচ্ছে তা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেন তিনি।
রাজ্যের সব বুথের কর্মীদের নিয়ে এই মেগা সমাবেশ করা হচ্ছে। উপস্থিত থাকছেন প্রায় ১৭ হাজার দলীয় প্রতিনিধি। ১৮৪০ জন ব্লক সভাপতিকে এই সমাবেশে থাকতে বলা হয়েছে। থাকবেন সব দলীয় সাংসদ ও বিধায়কেরা। বুথ স্তরে কর্মসূচি ঠিক করে দেওয়া হতে পারে বলে ঘাসফুল শিবির সূত্রে খবর। জনসংযোগ বাড়ানোর বার্তা দিতে পারেন মমতা।