হাওড়া: ভয়ঙ্কর একটা ঝাঁকুনি আর বিকট শব্দ। তাতেই মৃত্যুপুরী বাহানাগা। রাত পেরলেও আতঙ্ক কাটছে না যাত্রীদের। অভিজ্ঞতা নয় যেন দুঃস্বপ্নের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। শনিবার সকালে হাওড়া স্টেশনে ফিরল দুর্ঘটনাগ্রস্ত যশবন্তপুর এক্সপ্রেস। হাওড়ায় নামার পরও যেন যাত্রীরা বিশ্বাস করতে পারছেন না, যে তাঁরা সত্যিই বেঁচে আছেন। আবারও তাঁরা তাঁদের আত্মীয়-পরিজনকে দেখতে পাবেন, এ কথা ভেবেই চোখে জল চলে আসছে তাঁদের।
যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের যাত্রী খাদিজা শেখ জানান, ঘড়িতে তখন প্রায় সাড়ে ৬ টা। ঝাঁকুনিটা একটু জোর হলে যেমন হয়, তেমনটাই অনুভব করেছিলেন প্রথমে। তখনও বুঝতে পারেননি এটা দুর্ঘটনা। তারপর মারাত্মক একটা ঝাঁঁকুনি। কোনও ক্রমে বাইরে বেরিয়ে যা দেখলেন, তা বোধহয় ভুলতে পারবেন না কোনও দিন। খাদিজা বলেন, ‘চোখের সামনে কতজন মানুষকে শেষ হয়ে যেতে দেখলাম।’ যে কামরাগুলো লাইনচ্যুত হয়েছে, সেই কামরাতেই প্রথমে উঠেছিলেন খাদিজা। তারপর ভিড় বলে নেমে এসে অন্য কামরায় ওঠেন। নাহলে হয়ত…. বলতে গিয়ে গলা কেঁপে যাচ্ছে খাদিজার।
বেশিরভাগ যাত্রীই কথা বলার অবস্থায় নেই। করমণ্ডলের এক যাত্রী বলেন, ‘বার্থগুলো সব খুলে আমার ঘাড়ের ওপর পড়ে যায়। ভয়ঙ্কর… ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা। যতবার ভুলতে চাইছি, ভুলতে পারছি না। হঠাৎ দেখলাম চাকার পাশ দিয়ে আগুন বেরচ্ছে।’
যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের আর এক যাত্রী বলেন, শুধু তিরুপতির নাম নিচ্ছিলাম। শুধু বলছিলাম ঠাকুর বাঁচাও, ঠাকুর বাঁচাও। বেঁচে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু যা দেখেছেন, তা বর্ণনা করতে গিয়ে চোখ থেকে হু হু করে জল বেরিয়ে আসছে তাঁর।