কলকাতা : কমেছে বাবার রোজগার। মা সামান্য গৃহবধূ। দুই কাকার রোজগারও কমতে কমতে তলানিতে এসে ঠেকেছে। অর্থকষ্ট পরিবারের ছত্রে ছত্রে। কোনও সাধারণ মানুষ নন, এ কথা বলছেন তৃণমূলের যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য (Debangshu Bhattacharya)। কিন্তু, কেন? প্রসঙ্গত, সিপিএমের হোলটাইমার শতরূপের (CPIM Leader Shatarup Ghosh) ‘অন্যরূপ’ নিয়ে জোর চর্চা সোশ্যাল মিডিয়ায়। নেপথ্যে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) টুইট। সেখানেই শতরূপ ঘোষের ‘উপার্জন’ নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন তিনি। টুইটে লিখেছেন, ২০২১ সালের নির্বাচনী হলফনামায় শতরূপের সম্পত্তির হিসেব ২ লাখ টাকা। সেই শতরূপ কীভাবে ২২ লাখ টাকার গাড়ি কিনলেন? তা নিয়েই প্রশ্ন কুণালের। নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে শতরূপের নির্বাচনী হলফনামার অংশ, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন সহ নথির ছবিও তুলে ধরেছেন কুণাল ঘোষ। পাল্টা তোপ দেগেছেন শতরূপও। রীতিমতো কটাক্ষের সুরে বলেছেন, “বিয়েতে ডাকিনি বলে রাগ হয়েছে।” এবার আসরে তৃণমূলের যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য।
ফেসবুকে লিখছেন, ‘বাবা মোটামুটি রোজগার করতেন। আজ তা অনেকটাই তলানিতে এসে ঠেকেছে। মা গৃহবধূ। বাড়ির এক কাকা ষাটের দোরগোড়ায় এসে ১৩ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে টুপি, মোজা বিক্রি করেন। অন্য এক কাকার বয়স সত্তর পেরিয়েছে। মাস ছয়েক আগে অবধিও বাজারে প্লাস্টিক বিছিয়ে বারমুডা, মাস্ক বিক্রি করতেন। শরীরের অবস্থার জন্য আজ আর পারেন না।’ এখানেই না থেমে বামেদেরও একহাত নিয়েছেন দেবাংশু। এই পোস্টেই আরও লিখছেন, ‘এসব কথা কখনও বলি না। আজ বললাম, কারণ তথাকথিত “সর্বহারা”দের চতুর্দিকে যা অবস্থা দেখছি তাতে ভিতরে একটা অদ্ভুত বাজে অনুভূতি হয়। ভাল লাগে না। যন্ত্রণা হয়। রাজনীতি নিজের ভালর জন্য, নাকি সমাজের ভালোর জন্য? আজ অবধি কোনও মন্ত্রীর কাছে অন্যায় দরখাস্ত করিনি, কোনও ভাই-বোনেদের চাকরির জন্য চিরকুট জমা দিইনি। রাত্রিবেলা তাই হয়তো শান্তিতে ঘুমাতে পারি।’
তাঁর এ পোস্ট নিয়ে জোর চর্চা রাজনৈতিক মহলে। এদিকে কুণালের টুইটের পরেই গাড়ি কেনার পিছনে পাল্টা যুক্তি দিতে দেখা গিয়েছে শতরূপকে। বলছেন, “যে গাড়িটির কথা বলা হচ্ছে, সেটি আমি জানুয়ারি মাসে কিনেছি। এই গাড়ির টাকা আমার বাবা নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের চেকে করেছেন। আমার বাবা-মা দুইজনেই কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ সংস্থার কাজ করেছেন। বাবা চেকে এই গাড়ির টাকা দিয়েছেন। তার সব নথি আমার কাছে রয়েছে।”
দেবাংশুকে কটাক্ষ করেছেন বাম নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ও। বলেন, “উনি একা নন। এ রাজ্যে অনেকেই আছেন। ভাল করে লেখাপড়া করুন। এ রাজ্যের সরকারের উপর আস্থা রাখুন। চাকরি পাবেন। যদি না পান তাহলে ওর বাবাকে বলুন লাখ লাখ টাকা জমিয়ে রাখতে। সরকার যতদিন চাকরি বেচার কাজে থাকবে ততদিনে নিশ্চয় ওনাকেও একটা চাকরি দিয়ে দেবে। কিন্তু, এই সরকার ক্ষমতায় না থাকলে তখন কিন্তু মেধার ভিত্তিতেই চাকরি হবে। ঘুরপথে হবে না। ভুল মেধা নিয়ে কেউ চাকরি পাবে না।”