কলকাতা : মানহানি হয়েছে। চাইতে হবে ক্ষমা। ক্ষমা না চাইলে শতরূপের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের হুশিয়ারি কুণালের। ইতিমধ্যেই শতরূপের (CPIM Leader Shatarup Ghosh) কাছে আইনি নোটিসও পাঠিয়ে দিয়েছেন কুণালের আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী। যা নিয়েই ফের চর্চা বঙ্গ রাজনীতির অঙিনায়। বাম আমলে সত্যিই কী চিরকুটে চাকরি হয়েছিল? মমতার নির্দেশে বাম দুর্নীতির ময়নাতদন্ত শুরু হতেই তা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে চায়ের ঠেক, সর্বত্রই চর্চায় বাম চিরকুট। তৃণমূলের (Trinamool Congress) নিশানায় সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakraborty) থেকে সুশান্ত ঘোষের মতো একের পর এক তাবড় তাবড় বাম নেতারা। লাগাতার উঠতে থাকে স্বজনপোষণের অভিযোগ। যদিও সেই জল গিয়ে দাঁড়ায় একেবারে শতরূপের ২২ লাখের গাড়িতে।
২০২১ সালের নির্বাচনী হলফনামায় শতরূপের সম্পত্তির হিসেব ২ লাখ টাকা। সেই শতরূপ কীভাবে ২২ লাখ টাকার গাড়ি কিনলেন? প্রশ্ন তুলেছিলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। পাল্টা কুণালকে আক্রমণ করতে গিয়ে ‘বিতর্কিত মন্তব্য’ করতে দেখা গিয়েছে বাম যুব নেতা শতরূপ ঘোষকে। এই ইস্যুতেই এবার শতরূপকে আইনি নোটিশ পাঠাতে দেখা গেল কুণাল ঘোষকে। এদিকে কুণাল প্রশ্ন তুলতেই শতরূপের স্পষ্ট উত্তর ছিল, “যে গাড়িটির কথা বলা হচ্ছে, সেটি আমি জানুয়ারি মাসে কিনেছি। এই গাড়ির টাকা আমার বাবা নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের চেকে করেছেন। আমার বাবা-মা দুইজনেই কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ সংস্থার কাজ করেছেন। বাবা চেকে এই গাড়ির টাকা দিয়েছেন। তার সব নথি আমার কাছে রয়েছে।” এর পরেই রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, “কেন্দ্রের যেমন আয়কর দফতর ও ইডি রয়েছে, তেমনই রাজ্যের হাতেও ইকোনমিক অফেন্স উইং বলে একটি সংস্থা রয়েছে। যদি কোথাও টাকা পয়সা নিয়ে কোনও সন্দেহ থাকে তাদের, তাহলে সোশ্যাল মিডিয়ায় না বলে সেই সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করাতে পারে।” একই সুর শোনা গিয়েছিল বাম নেতা সুজন চক্রবর্তীর গলাতেও। বলেছিলেন, বাবা কিনে দিলে পার্টি কী করতে পারে! আর টাকা-পয়সা নিয়ে সন্দেহ থাকলে তদন্ত করুক সরকার। কিন্তু, কুণালের রাগটা কোথায়? তাঁর ব্যখ্যা আইনি নোটিশে করেছেন কুণালের আইনজীবী।
যে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে শতরূপকে তাতে লেখা হয়েছে, “২২ মার্চ আপনার গাড়ি নিয়ে করা কুণাল ঘোষের ফেসবুক পোস্টের পরেই আপনি একটি প্রেস কনফারেন্স করেন। যা রাজ্যের একাধিক বড় বড় সংবাদমাধ্যমে দেখানো হয়। যেখানে আপনি কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে একাধিক অপমানজনক কথা বলেছেন। আপনি বলেছেন, আমি জানি না, হতে পারে কুণাল ঘোষের বাবার হয়তো কুণাল ঘোষ ছাড়াও অনামে বেনামে আরও এদিকে-ওদিকে সন্তান ছড়িয়ে ছিলেন। ওনার বাবা হয়তো যখন কিছু কিনতেন আমি জানি না, হতে পারে, ওনার প্রশ্ন শুনে মনে হচ্ছে, অফিসিয়াল আনঅফিসিয়াল, কোন সন্তানের নামে কিনবেন বুঝতে না পেরে নিজের নামেই কিনতেন। আমি জানি না উনি টেস্ট টিউব বেবি কিনা।” এই চিঠি পাওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে শতরূপে তাঁর করা মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে। প্রেস রিলিজ, প্রেস কনফারেন্স করে নিজের ভুল স্বীকার করতে হবে শতরূপকে। যদি এই সময়ের মধ্যে ক্ষমা না চান তাহলেও তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে কুণালের আইনি চিঠিতে। যদিও এ প্রসঙ্গে শতরূপ ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “এখনও পর্যন্ত আমি কিছু পাইনি। মিডিয়ার মাধ্যমে শুনেছি। উনি নাকি ৭২ ঘণ্টা নাকি ৪৮ ঘণ্টা নাকি কিসব বলেছেন শুনছি। উনি পাঠান। দেখা হবে আদালতে।” বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “কী পাঠিয়েছে জানি না। উনি পাঠাতে পারেন। এর আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে পাঠিয়েছিলেন কিন্তু, উনি বেশিদূর এগোননি।”