Gariahat Double Murder: কাঁকুলিয়াকাণ্ডে গ্রেফতার আরও দুই, এখনও অধরা মিঠুর ছেলে
Gariahat: গত রবিবার গড়িয়াহাট থানা এলাকার ৭৮ এ কাঁকুলিয়া রোডের একটি তিনতলা বাড়ি থেকে সুবীর চাকি ও তাঁর গাড়ির চালক রবীন মণ্ডলের রক্তাক্ত, ক্ষত বিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়।
কলকাতা: গড়িয়াহাটের জোড়া খুন (Gariahat Murder Case) কাণ্ডে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমা থেকে ভিকির দুই সঙ্গীকে গ্রেফতার করা হয় শুক্রবার। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন দু’জনই। একই সঙ্গে এই কাণ্ডে প্রত্যক্ষ যোগাযোগও রয়েছে তাঁদের। শনিবার ধৃতদের আদালতে তোলা হবে। ধৃতদের নাম বাপি মণ্ডল ও জহর গাজি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে তিন জনকে জোগাড় করেছিলেন মিঠু হালদার। এই দু’জন সে তালিকাতে রয়েছেন। আরও একজন আছেন, যিনি পলাতক। একই সঙ্গে ঘটনার মূল অভিযুক্ত মিঠুর ছেলে ভিকি ও তাঁর এক শাগরেদও পলাতক। অর্থাৎ এখনও অবধি তিনজন অধরা।
পুলিশ জানিয়েছে, মিঠু জেরার মুখে স্বীকার করে সুবীর চাকি ও রবীন মণ্ডলকে ভয় দেখানোর জন্য তিনজনকে টাকার বিনিময়ে আনা হয়েছিল। রবিবার খুনের ঘটনার আগের দিন শনিবার মিঠুকে তাঁর ছেলে ভিকিই এই পরামর্শ দেন। ভিকি মাকে জানান, সুবীর চাকিকে কোনও ভাবে ভয় দেখানো গেলে হাতে মোটা টাকা আসবে। এদিকে মিঠু আয়ার কাজ করেন। সেই সূত্রে ট্রেনে যাতায়াত করার সময় বহু লোকের সঙ্গে পরিচয়ও হয়েছে। এরপরই তিন যুবকের কথা তাঁর মাথায় আসে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তিনজনকে প্রস্তাব দেন, বড় কাজ! করতে পারলে ৫০ হাজার টাকা নগদ পাওয়া যাবে। তিনজন রাজিও হন।
অন্যদিকে ভিকি যেখানে কাজ করেন সেই ফার্ন রোডের কনস্ট্রাকশন সাইট থেকেও এক যুবককে নিয়ে যাওয়া হয় ঘটনার দিন। সকলে মিলে রবিবার বিকেল চারটে নাগাদ বালিগঞ্জ স্টেশনে দেখা করেন। সেখানে মিঠুর সঙ্গে কথা হয়। তবে মিঠু এলাকায় থাকলেও কাঁকুলিয়া রোডের বাড়িতে যাননি।
জেরার মুখে মিঠু পুলিশকে জানিয়েছে, খুন হয় রাহাজানিই ছিল ভিকিদের উদ্দেশ্য। ভয় দেখানোর জন্য ছুরি কিনে যায়। তবে বাধা পেলে যে মেরে ফেলতে পারেন, সে পরিকল্পনা ভিকি করেই রেখেছিল। যদিও বাকি চারজনের সঙ্গে তা তিনি আলোচনা করেননি। ঘটেও তাই। বাধা পেতেই সুবীর চাকি ও রবীন মণ্ডলকে খুন করা হয়।
গত রবিবার গড়িয়াহাট থানা এলাকার ৭৮ এ কাঁকুলিয়া রোডের একটি তিনতলা বাড়ি থেকে সুবীর চাকি ও তাঁর গাড়ির চালক রবীন মণ্ডলের রক্তাক্ত, ক্ষত বিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। তদন্তে নেমে প্রথম দিকে ধোঁয়াশা থাকলেও ধীরে ধীরে এবার বোধহয় কিছু সূত্র হাতে আসছে তদন্তকারীদের। মঙ্গলবার সকালে লালবাজারের হোমিসাইড শাখার তদন্তকারীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। থ্রিডি স্ক্যানারে ঘটনার পুনর্নির্মাণের মধ্যে দিয়েই একাধিক আততায়ীর উপস্থিতির বিষয়ে এক প্রকার নিশ্চিত হন তদন্তকারীরা। অন্যদিকে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এ কথাও স্পষ্ট হয়, এই ঘটনায় বাড়ি কেনাবেচার একটা যোগ রয়েছে।
জানা গিয়েছে মিঠু হালদার ও তাঁর দুই ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ নতুন নয়। দুই ছেলে ভিকি ও বিলাসকে নিয়ে স্বামীকে মাদক খাইয়ে ৮০ হাজার টাকা হাতানোর অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ির পর ডায়মন্ড হারবারে বিধবা পরিচয়ে ভাড়া থাকতেন মিঠু। পুলিশের দাবি, খুনের পর বালিগঞ্জ স্টেশন থেকে ছেলে ভিকির রক্তমাখা জামা নিয়ে ডায়মন্ড হারবারের বাড়িতে ফিরে যান। প্রমাণ লোপাটে সে জামা ধুতে গেলে সন্দেহ হয় বাড়ির মালিকের। এরপরই ধীরে ধীরে পর্দা ফাঁস হতে শুরু করে।
আরও পড়ুন: Chaos in Dumdum: দমদমে কালীপুজোয় বাধা, অভিযোগের আঙুল স্থানীয় তৃণমূল নেতার দিকে