কলকাতা : অর্পিতা মুখোপাধ্য়ায় আধুনিকা। চলনে বলনে গ্ল্যামার জগতের সঙ্গে যুক্ত থাকার ছাপ স্পষ্ট। তিনি পার্থ-ঘনিষ্ঠ। সেই অর্পিতার বাড়ি থেকে যে পরিমাণ টাকা উদ্ধার হয়েছে, তাতেই চক্ষু চড়কগাছ আধিকারিকদের। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই টাকার ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই আলোচনার শীর্ষে অর্পিতা। স্বল্প পরিচিত মডেল তথা অভিনেত্রী যেন রাতারাতি ‘সুপারস্টার’ হয়ে উঠেছেন। ইডি সূত্রে খবর, অর্পিতার বাড়ি থেকে শুধু টাকা উদ্ধারই নয়, তাঁর সম্পর্কে আরও তথ্য জানতে কার্যত ফ্ল্যাটের আনাচে-কানাচে তল্লাশি চালানো হয়েছে। আর সেই তল্লাশিতেই পাওয়া গিয়েছে এক জোড়া সেক্স টয়। যদিও এই বস্তুটি নেহাতই ব্যক্তিগত তবুও তাঁর ফ্ল্যাট থেকে পাওয়া যে কোনও বস্তু বা নথিই এখন তদন্তকারীদের আতস কাচের নীচে।
ইডি সূত্রে খবর, বুধবার অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালানোর সময় দুটি সেক্স টয় খুঁজে পেয়েছেন আধিকারিকরা। ওই ফ্ল্যাটটি অর্পিতার, ফলে ওই সেক্স টয়গুলি কি তিনিই ব্যবহার করতেন? নাকি অন্য কারও যাতায়াত ছিল ওই ফ্ল্যাটে? তা এখনও স্পষ্ট নয়। সেগুলি কোথা থেকে আনা হয়েছিল, কে কিনেছিলেন, দামই বা কত, তা এখনও স্পষ্ট না। তবে শুধু সেক্স টয়ই নয়, ফ্ল্যাট থেকে মিলেছে একটি সোনার ও একটি হীরের আংটিও, যার গায়ে খোদাই করা রয়েছে ইংরেজির ‘পি’ অক্ষরটি।
গত শুক্রবারের আগে পর্যন্ত অর্পিতা মুখোপাধ্যায় নামটি বিশেষ পরিচিত ছিল না। হরিদেবপুরের ফ্ল্যাট থেকে টাকা উদ্ধারের পরই সার্চ ইঞ্জিন ও সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর খোঁজ পড়ে। নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘের পুজোর মুখ হওয়া অর্পিতাকে দেখে কারও কারও মনে পড়লেও, কয়েক মিনিটেই অনেকের ইনস্টা হ্যান্ডেলের সবথেকে বেশি সার্চ করা নাম হয়ে ওঠে ‘অর্পিতা’। বেলঘরিয়ার দেওয়ানপাড়ার সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে অর্পিতার জীবন যাপন যে খুব একটা সাধারণ ছিল না, সেটা স্পষ্ট হয়ে যায় সবার কাছেই। যাঁর ঘরে টাকার পাহাড় সেই অর্পিতার অত্যাধুনিক বিলাসবহুল জীবনের একটা আনুমানিক ছবি পাওয়া যায় সোশ্যাল মিডিয়া থেকে। আর ইডি-র তল্লাশিতে যা বেরিয়ে আসছে, তাতে তাঁর জীবন যাপন দেখে অবাক হয়ে যাচ্ছেন তাঁর পূর্ব পরিচিতরাও। ট্যাক্সি চেপে যিনি নিয়মিত স্ট্রাগেল করতে টলিগঞ্জে যেতেন, তাঁর জীবন মাত্র কয়েক বছরেই কী ভাবে স্বপ্নীল হয়ে উঠল, উঠছে প্রশ্ন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখ রাখলে দেখা যাবে, তিনি ঘন ঘন বদলেছেন চুলের স্টাইল। শাড়ি থেকে ট্যাঙ্ক টপ, ফ্যাশন নিয়েও সদা পরীক্ষানীরিক্ষা করে গিয়েছেন। আবার স্বাস্থ্য সচেতনও ছিলেন তিনি। তাঁর ছবিই বলে দিচ্ছে, জিম বা যোগা করার অভ্যাস ছিল তাঁর। অর্পিতার করা চটকদার ভিডিয়ো এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। নিয়মিত মডেলিং বা অভিনয়ের কাজ খুব বেশি না করলেও তাঁর ব্য়বসাতেও ছিল গ্ল্যামার জগতের ছোঁয়া। ইডি-র সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, অর্পিতার দক্ষিণ কলকাতার একটি ফ্ল্যাটে চলত প্রযোজনা সংস্থার কাজ। একাধিক নেল আর্ট পার্লারের ব্য়বসাও চালাতেন তিনি। নিজেকে নিজের প্রতিযোগী বলেও উল্লেখ করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। আপাতত ইডি হেফাজতে রয়েছেন অর্পিতা। আর তাঁর আরও সম্পত্তির হদিশ পেতে তৎপর ইডি।