কলকাতা: রবিবার রাত থেকে শুরু হয়েছিল ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। সোমবার সকালে আর চোখ খুলতেই দেখা গেল না সূর্যকে। গোটা দক্ষিণবঙ্গের (South Bengal) আকাশই কার্যত মেঘে ঢাকা। উদ্বেগ বেড়েছে রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে। অন্যদিকে সিত্রাং (Cyclone Sitrang) ভয়ে কাঁপছে বাংলাদেশ। আবহাওয়া দফতরের (Meteorological Department)পূর্বাভাস বলছে মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশের (Bangladesh) তিনকোনা দ্বীপ ও সন্দ্বীপের মধ্যবর্তী স্থানে স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড়টি।
শেষ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং সাগর দ্বীপ থেকে ২২০ কিলোমিটার দূরে এবং বাংলাদেশের বরিশাল থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।
সোমবার রাত বাড়তেই দীঘার সমুদ্র সৈকত বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়তে শুরু করেছে। রাত বাড়লে সমুদ্র সৈকত আরও রুদ্র রূপ ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ।
“সাইক্লোন বাংলাদেশে চলে গিয়েছে৷ বাংলায় হালকা বৃষ্টি হবে। যাঁদের অন্যত্র সরানো হয়েছে তাঁদের সবাইকে অনুরোধ এখনও ফিরবেন না। আপনারা রিলিফ সেন্টারে থাকুন। সরকার যা ব্যবস্থা নিয়েছে, সেটা মেনে চলুন। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা জারি থাকবে। সবাই দেখে নেবেন, ঝড়-বৃষ্টি হলে বেরোবেন না৷ আবহাওয়া কাল থেকে ভাল হবে।” বললেন মমতা।
এখন পর্যন্ত ৬৭ হাজার ৯৭৩ জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেই ২৩ হাজার ৪৫৭ জনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ১৯ হাজার ৩২৪ জনকে সরানো হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনায়। পূর্ব মেদিনীপুর থেকে সরানো হয়েছে ২৪ হাজার ৯২২ জনকে।
কলকাতা পৌরসভার আধুনিক কন্ট্রোল রুমে গোটা শহরের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
রাজ্যের জন্য স্বস্তি। কলকাতায় সিত্রাংয়ের সে ভাবে প্রভাব পড়বে না। এ রাজ্যে যা কিছু হবে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায়।
রবিবার রাতে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি শুরু হতেই অনেকটা কমেছে তাপমাত্রা। ঘূর্ণিঝড়ের পরে আরও কমবে তাপমাত্রা। রাতের দিকে ১-২ ডিগ্রি তাপমাত্রা কমতে পারে বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া দফতর।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে শুধু দুই ২৪ পরগনার উপকূলবর্তী এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। পূর্ব মেদিনীপুর, কলকাতা, হাওড়া, হুগলির উপকূল বর্তী এলাকায় মূলত মাঝারি বৃষ্টি।
২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে মানা। ২৫ অক্টোবর দুপুর থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সাগর থেকে ৩২০ কিমি দূরে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। আগামী ১২ ঘণ্টায় মারত্মক ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে সিত্রাং। ২৫ অক্টোবর সাত সকালে আছড়ে পড়বে বাংলাদেশে।
ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়। আর সেই পূর্বাভাস বুকে নিয়েই যেন ফুঁসছে মাতলা নদী। এদিকে নদীতে নামতে মৎসজীবীদের নিষেধ করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। ক্ষয়ক্ষতি এড়াতেও রাখা হচ্ছে কড়া নজর।
ভারত ও বাংলাদেশ জল সীমান্তে নদী গুলিতে জল বাড়তে থাকায় সুন্দরবনের গোসাবাতে সমস্ত ফেরি সার্ভিস বন্ধ l এমনটাই জানালেন গোসাবার বিডিও বিশ্বনাথ চৌধুরীl সেই সঙ্গে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ এলাকার পরিস্থিতি জানতে গোসাবা বিডিও অফিসের কন্ট্রোল রুমের তৎপরতা তুঙ্গেl
ইতিমধ্যেই সুন্দরবনে ঝড়ের সঙ্গে বৃষ্টির দাপট বাড়তে শুরু করেছে l বিশেষ করে রাঙাবেলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত, কুমিরমারি, ছোট মোল্লাখালি, কঁচুখালি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার নদী বাঁধের অবস্থা বেশ খারাপ l NDRF-র ২৬ সদস্যের দলকে নিয়ে গোসাবার বিডিও বিশ্বনাথ চৌধুরী পাখিরালয় পর্যটন কেন্দ্রের নদী বাঁধের অবস্থা সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন l