POCSO Act: মিলনে সম্মতি থাকলে শুধুমাত্র শারীরিক গঠনের জন্য ‘পকসো’ আইনে অভিযুক্ত করা যায় না, পর্যবেক্ষণ হাই কোর্টের

Calcutta High Court: একটি মামলায় অভিযুক্তের বয়স ২২ আর অভিযোগকারিণীর বয়স সাড়ে ১৬।

POCSO Act: মিলনে সম্মতি থাকলে শুধুমাত্র শারীরিক গঠনের জন্য 'পকসো' আইনে অভিযুক্ত করা যায় না, পর্যবেক্ষণ হাই কোর্টের
কলকাতা হাইকোর্টে এসএসসি গ্রুপ সি নিয়োগ মামলা (ফাইল ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 22, 2021 | 3:12 PM

কলকাতা: উভয় পক্ষের সম্মতিতে যদি শারীরিক মিলন হয়, তাহলে পকসো আইনে অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা যায় না। যৌন হেনস্থার একটি মামলায় এমনই পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court)। বিচারপতির দাবি, শুধুমাত্র একজন পুরুষকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য এই ধরনের অভিযোগ আনা উচিৎ নয়। এক ২২ বছরের যুবকের বিরুদ্ধে প্রোটেকশন অব চিল্ড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্স বা পকসো (POCSO) আইনে মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় অব্যাহতি পেয়েছেন ওই যুবক।

‘শুধু শারীরিক গঠনের জন্যই দোষ পুরুষের!’

মামলার শুনানিতে বিচারপতি সব্যসাভী ভট্টাচার্য বলেন, ‘যদি মিলন হয় উভয়পক্ষের সম্মতিতে, তাহলে শুধুমাত্র পুরুষের ওপর দোষ চাপানো উচিৎ নয়। মহিলা ও পুরুষের শারীরিক গঠনে তফাৎ আছে বলেই এই অভিযোগ কেবলমাত্র পুরুষের বিরুদ্ধে আনা যায় না।’

আদালতের তরফে বলা হয়, কারও বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনার ক্ষেত্রে অভিযুক্তের মানসিক অবস্থা, মানসিক পরিণতি বা ম্যাচিওরিটি, অতীতের ঘটনা খতিয়ে দেখা দরকার। অভিযুক্ত ও অভিযোগকারিণী দু’জনের ক্ষেত্রে এগুলো দেখা জরুরি। বিচারপতি বলেন, ‘অন্য কাউকে বিয়ে করার জন্য যেন পকসো আইনকে ব্যবহার না করা হয়।’

কী ছিল সেই মামলা?

এই মামলায় অভিযুক্তের বয়স ২২ ও অভিযোগকারিণীর বয়স সাড়ে ১৬। যুবকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ ওঠে। ট্রায়াল কোর্টে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ ধারা ও পকসো আইনে দোষী সাব্যস্ত হন ওই যুবক। অভিযোগকারিণীর বয়স ১৮-র কম হওয়া পকসো আইনে মামলা হয়। এরপর হাইকোর্টে আবেদন করেন ওই যুবক। আবেদনে তিনি জানান, অভিযোগকারিণীর আগেই স্বীকার করেছেন ওই যুবকের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথা। আবেদনে আরও বলা হয় যে, ঘটনার সময় অভিযোগকারিণীর বয়স কত ছিল তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন, আর অভিযোগকারিণীর সম্মতি থাকায় এ ক্ষেত্রে হেনস্থার অভিযোগ খাটে না।

‘ম্যাচিওরিটির তফাৎ নেই’

পর্যবেক্ষণে বলা হয়, বাস্তবটাকে না বুঝতে চোখ বন্ধ করে বসে থাকতে পারে না আদালত। ঘটনার কার্য কারণ জানা প্রয়োজন। যদি অভিযোগকারিণীকে নাবালিকা বলে প্রমাণ করতেই হয়, তাহলে তার বয়স, মানসিক পরিণতি, পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে হবে।

আদালত আরও বলে যে, আইন অনুযায়ী, কারও বয়স যদি ১৭ বছর ৩৬৪ দিন হয়, তাহলেও অভিযোগ পকসো আইনের আওতায় পড়বে। কিন্তু ওই বয়সী একজনের সঙ্গে তার থেকে একদিনের বড় অর্থাৎ ১৮ বছর বয়সী কোনও মানুষের ম্যাচিওরিটির কোনও তফাৎ থাকে না।

‘সম্মতি ছিল কি?’

মিলনে উভয়ের সম্মতি ছিল কি না, তা দেখতে হবে বলে জানায় আদালত। বলা হয় ৩৭৬ ধারা তখনই কার্যকর হবে যখন অভিযোগকারিণীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে মিলনে বাধ্য করা হবে। আদালত জানায় তথ্য ও প্রমাণ বলছে এই মামলার ক্ষেত্রে ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু করা হয়নি। দু’জন পরিণত মানুষ নিজেদের ইচ্ছেয় শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েছেন। উল্লেখ্য, মামলাকারী ও অভিযুক্ত দু’জনেই বর্তমানে আলাদাভাবে বৈবাহিক জীবন যাপন করছেন।

আরও পড়ুন: Coal Case: ‘এতদিন ধরে ঘুমাচ্ছিলেন?’ বেআইনি কয়লা মামলায় ইসিএল-কে তীব্র ভর্ৎসনা হাইকোর্টের