Post Poll Violence Case: ‘এতটা সিরিয়াস ইস্যুতে এত ক্যাজুয়াল অ্যাটিটিউড’, চরম ভৎর্সনার মুখে সিট
Post Poll Violence Case: ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় রাজ্যের 'ক্যাজুয়াল অ্যাটিটিউড' প্রশ্নে প্রথম থেকেই আদালতে ডিভিশন বেঞ্চের চরম ভতর্সনার মুখে পড়তে হয় সিটের আইনজীবীকে।
কলকাতা: ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা দিল সিট। আদালতে সোমবার পুলিস কমিশনার-সহ দুই আইপিএস রণবীর কুমার ও সুমন বালা সাহু উপিস্থিত ছিলেন। তবে হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দালের ডিভিশন বেঞ্চ তাঁদের স্পষ্ট করে দেন, “শুধু স্বচ্ছ তদন্ত করুন। আদালত না ডাকলে আসার প্রয়োজন নেই।”
ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় রাজ্যের ‘ক্যাজুয়াল অ্যাটিটিউড’ প্রশ্নে প্রথম থেকেই আদালতে ডিভিশন বেঞ্চের চরম ভতর্সনার মুখে পড়তে হয় সিটের আইনজীবীকে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল প্রশ্ন করেন, “কারা এই সিটের অফিসার নির্বাচন করেছেন? সিট না রাজ্য?” রাজ্যের তরফে জানানো হয়, “উভয়ের সঙ্গে কথা বলেই নির্বাচিত হয়েছেন আধিকারিকরা।”
ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল ফের প্রশ্ন করেন, “এটা কি বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে? কার পরামর্শে আইনজীবী নিয়োগ হয়েছেন?” রাজ্যের তরফে জানানো হয়, “রাজ্য পরামর্শ দিতে নিয়োগ করেছে।”
এদিন সওয়াল জবাব চলাকালীন আদালতে সিটের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। চরম ভৎর্সনার মুখে পড়তে হয়। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি এদিন প্রশ্ন করেন, “হিংসা মামলায় কত কেসে ক্ষতিপূরণ দিয়েছে রাজ্য? আমায় জানতে হবে। জিপি কোন ভাবে মিস করেছেন এই মামলা!” ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল ফের সিটের আইনজীবীকে বলেন, “তার মানে এই মামলার আপনাদের কাছে কোনো গুরুত্ব নেই?” সিটের আইনজীবী আপাতত এই মামলাটিতে স্থগিতাদেশ চান। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল বলেন, “কোনওভাবে স্থগিতাদেশ দেব না। ১০ জন সিনিয়র অফিসার নিয়োগ করা হয়েছিল।”
আদালত সিটের আইনজীবীকে বলেন, “রাজ্য অত্যন্ত ক্যাজুয়াল অ্যাটিটিউড দেখিয়েছে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে।” পাশাপাশি আদালত সিবিআই-এর তদন্তের অগ্রগতি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। আইনজীবী এএসজি দস্তুর জানান, সিবিআই ৪ টি টিম করেছে। ৪ জন জয়েন্ট ডিরেক্টরের অধীনে রয়েছেন ২১ জন ডিএসপি। ৪ টি জোনে ভাগ করে তদন্ত চলছে। সব অফিসাররাই রাজ্যের বাইরের।
ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় সিটের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত মহিলা বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর। তদন্তকারী দলে ১০ জন দক্ষ আইপিএস আধিকারিক রয়েছেন। যারা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। এই মুহূর্তে মঞ্জুলা চেল্লুর রয়েছেন কর্ণাটকে। তাঁকে নিরাপত্তা দিতে এদিন রাজ্যকে নির্দেশ দেন হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর। ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার পরবর্তী শুনানি ৮ নভেম্বর।
ভোট পরবর্তী হিংসায় খুন ও ধর্ষণের মামলাগুলির তদন্তভার সিবিআই-এর হাতে তুলে দিয়েছে হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশ মতো, অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্ত করছে সিট। আদালতের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। সেই মামলার শুনানি চলাকালীন সোমবার রাজ্যের পক্ষ থেকে মানবাধিকার কমিশনের সদস্যদের রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব নিয়ে সওয়াল তোলা হয়।
তদন্তের স্বার্থে রাজ্যকে চারটি জোনে ভাগ করেছে সিট। রয়েছে নর্থ জোন, সাউথ জোন, ওয়েস্ট জোন। এ ছাড়া সিটের সদর দফতরে থাকবেন দু’জন। কলকাতা পুলিশের দু’জন আধিকারিককেও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। হেড কোয়ার্টারের দায়িত্বে থাকছেন রেলের ডিআইজি সোমা দাস মিত্র, ডিসি শুভঙ্কর ভট্টাচার্য। নর্থ জোনে থাকবেন উত্তরবঙ্গের আইজিপি ডিপি সিং ও মালদা রেঞ্জের ডিআইজি প্রবীন কুমার ত্রিপাঠি। ওয়েস্ট জোনের দায়িত্বে থাকছেন পশ্চিমাঞ্চলের এডিজি সঞ্জয় সিং, বর্ধমান রেঞ্জের আইজিপি বি এল মীনা। সাউথ জোনে তদন্তের ভার থাকবে দক্ষিণবঙ্গের এডিজি সিদ্ধনাথ গুপ্ত ও বারাসত রেঞ্জের ডিআইজি প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। কলকাতা পুলিশের ক্ষেত্রে তদন্তে দায়িত্ব নেবেন আইপিএস তন্ময় রায় চৌধুরী ও আইপিএস নীলাঞ্জন বিশ্বাস।
আরও পড়ুন: Flood in Bengal: মাথার ওপর ত্রিপলটুকুও জোটেনি, নিজেদের ঘরের শেষ রসদ দিয়েই পেট চলছে, কোথায় প্রশাসন?