
কলকাতা: ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে উত্তপ্ত রাজ্যে বিভিন্ন জায়গা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন হবে? কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং আইনজীবী তথা বিজেপি নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি রাজা বসু চৌধুরীর স্পেশাল বেঞ্চে মামলার শুনানিতে রাজ্যের তরফে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, হাইকোর্ট কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিলে রাজ্যের অসুবিধা নেই। তবে এই মামলা রাজনৈতিক স্বার্থে করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
এদিন আদালতে শুভেন্দুর আইনজীবী হিসেবে সওয়াল করেন সৌম্য মজুমদার ও অনীশ মুখোপাধ্যায়। তরুণজ্যোতি তিওয়ারির আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য। রাজ্যের তরফে আইনজীবী হিসেবে রয়েছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় ও অর্ক নাগ। কেন্দ্রের তরফে আইনজীবী নীলাঞ্জন ভট্টাচার্য ও সিদ্ধার্থ লাহিড়ী।
শুভেন্দুর আইনজীবী সৌম্য মজুমদার বলেন, “অভ্যন্তরীণ অশান্তি। সীমান্তবর্তী এলাকা। খুবই স্পর্শকাতর। রাজ্যের কোনও ভয়াবহ ঘটনায় বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এলাকায় মানুষের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হলে কেন্দ্রের দায়িত্ব সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতেই পারে কেন্দ্র। ফরাক্কার ধূলিয়ান পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে বোমাবাজি চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। পুলিশ সামাল দিতে ব্যর্থ। সংবিধানের ৩৫৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাজ্যের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলিতেও সমস্যা হলে কেন্দ্র হস্তক্ষেপ করতে পারে। নাগরিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা প্রয়োজন।”
রাজ্যের তরফে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ৬ কোম্পানি বিএসএফ, ১০০০ পুলিশ, এডিজি, ডিআইজিরা রয়েছেন। ১৩১ জনকে গ্ৰেফতার করা হয়েছে। এক নম্বর পিটিশনার রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং দুই নম্বর পিটিশনার আইনজীবী তথা বিজেপি নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। তাই এটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক অভিসন্ধি।
তৃণমূল সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ তাঁর সওয়ালে বলেন, “আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পরিস্থিতি তৈরি হলে সেটা পুলিশের দায়িত্ব। প্যারা মিলিটারি ফোর্স নামানো হলে আমাদের কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু এখানে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করা হচ্ছে।” নিজের সওয়ালে তিনি আরও বলেন, “৩৫৫ ধারা প্রয়োগের জন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই মামলা। কয়েকদিন আগেই যাদবপুরে পুলিশকে মারা হয়েছে।” রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার মুর্শিদাবাদ গিয়েছেন বলে আদালতে তিনি জানান।
রাজ্যের আইনজীবী অর্ক নাগ বলেন, “মুর্শিদাবাদের এই এলাকার সমস্ত মানুষকে শান্তি বজায় রাখার অনুরোধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”