কলকাতা: হতে পারেন তিনি জেলা তৃণমূল সভাপতি। তবে দলের প্রথম সারির নেতাদের থেকে কোনও অংশে তাঁর পরিচিতি কম নয়। তাঁর জনপ্রিয়তা বলে বলে গোল দিতে পারে রাজ্যের কোনও মন্ত্রীকে। অনেকে বলেন, তিনি নাকি বীরভূমের ‘মুকুটহীন সম্রাট’। তিনি বীরভূম তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, বোলপুরের ‘কেষ্ট’। আপাতত শরীরের নানা সমস্যা নিয়ে ভর্তি রয়েছেন এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ব্লকে। বুধবার সেখান থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএমের অ্যানেক্স রামরিক হাসপাতালে। কিছু পরীক্ষানিরীক্ষার প্রয়োজনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল অনুব্রতকে। এরপরই একটি ছবি সামনে আসে। ছবিটির সত্যতা যাচাই করেনি টিভি নাইন বাংলা। তবে সেখানে দেখা যাচ্ছে সিটি অ্যাঞ্জিওর একটি যন্ত্রের উপর বসে আছেন অনুব্রত মণ্ডল। এই অবধি কোনও বিবাদ নেই। কারণ, সিটি অ্যাঞ্জিও করাতেই নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাঁকে। কিন্তু ছবিতে দেখা যাচ্ছে, সেই যন্ত্রের উপর বসেই হাতে ধরে রয়েছেন চায়ের কাপ। চুমুকের অপেক্ষা। তুমুল চর্চা শুরু হয়েছে এই ছবি ঘিরে।
প্রশ্ন উঠছে, সরকারি হাসপাতালের ভিতর শারীরিক পরীক্ষার যন্ত্র। সেই যন্ত্রের উপর বসে থাকা কাউকে কীভাবে চায়ের কাপ তুলে দেওয়া হল? একইসঙ্গে প্রশ্ন, অনুব্রত মণ্ডলই বা কেন সেই চায়ের কাপ হাতে নিলেন? যন্ত্রের উপর বসে চায়ের কাপ হাতে তুলে নেওয়াটা কি খুব বিবেচকের কাজ হল, প্রশ্ন তুলেছে ওয়াকিবহাল মহল। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বেশ কৌশলী অবস্থানই নিয়েছে তারা। এই ছবিটির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তারা নীরব থেকেছে। একবারের জন্যও তারা বলেনি, এই ছবির সত্যতা নেই।
গত ৬ এপ্রিল গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে তলব করেছিল সিবিআই। আগের দিনই কলকাতায় চলে আসেন অনুব্রত। চিনার পার্কের ফ্ল্যাটেই ছিলেন রাতে। পরদিন সকালে গাড়ি নিয়ে বের হন তিনি। সিবিআইয়ের অফিস নিজাম প্যালেস থেকে কিছুটা মাত্র দূরে যখন তাঁর গাড়ি, হঠাৎই তা বাঁক নেয় এসএসকেএমের দিকে। সটান গাড়ি গিয়ে দাঁড়ায় উডবার্ন ব্লকের সামনে। জানা যায়, অনুব্রত অসুস্থ বোধ করায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। সেই থেকে উডবার্নেই রয়েছেন তিনি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বুকে ব্যথা, শ্বাসেরও কষ্ট রয়েছে তাঁর। সে কারণেই সিটি অ্যাঞ্জিও করাতে বুধবার তাঁকে রামরিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এরই মধ্যে এই ছবি-বিতর্ক।