বীরভূম: বীরভূম সফরে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরইমধ্যে সামনে এল বীরভূম জেলার নতুন কোর কমিটির খবর। সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন বীরভূম জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। এরপরই এদিন বীরভূম তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয় বলে সূত্রের খবর। আগে ছিলেন চারজন, এবার সেই সংখ্যাটা বেড়ে হল সাতজন। এর আগে এই কোর কমিটিতে ছিলেন সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী , লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ, বোলপুরের বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিংহ ও রামপুরহাটের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার কমিটিতে যুক্ত হলেন বোলপুর লোকসভার সাংসদ অসিত মাল, বীরভূম লোকসভার সাংসদ শতাব্দী রায়। নাম রয়েছে নানুরের দাপুটে তৃণমূল নেতা কাজল শেখেরও। রাজনৈতিক মহলের মতে, ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোটের আগে সংগঠনকে জেলায় ঢেলে সাজাতে উদ্যোগী দল। বিশেষ করে অনুব্রত মণ্ডলের অনুপস্থিতিতে সংগঠনে যাতে কোনও আঁচ না আসে, তা নিশ্চিত করতে চায় নেতৃত্ব। ঢেলে সাজাতে চায় স্থানীয় সংগঠনকে।
বীরভূমে তৃণমূলের কোর কমিটিতে কাজল শেখের আসার বিষয়টি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। জেলার রাজনৈতিকমহলে কান পাতলে শোনা যায়, এ জেলার কেষ্ট-কাজলের অম্লমধুর সম্পর্কের কথা। নানুরে কাজল শেখের দাপট সর্বজনবিদিত। এদিকে এই নানুরেরই আরেক নেতা গদাধর হাজরা। বলা হয়, তিনি নাকি ‘কেষ্টপ্রসাদ’ ধন্য। জেলার লোকেরা বলেন, এ নিয়েই কাজল-গদাধরের টক্কর। পরোক্ষভাবে সে টক্কর অনুব্রত-কাজলের মধ্যেও। অনুব্রত মণ্ডল যেদিন গ্রেফতার হলেন, এর পর পরই কাজল শেখ ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘চেহারা, দাপট, অবস্থান, ক্ষমতা ও শক্তি চিরস্থায়ী হয় না। দুঃখের বিষয় অনেকেই এটা ভুলে যায়।’ সঙ্গে কঙ্কালসার এক সিংহের ছবি। সে পোস্ট হইচই ফেলে দিয়েছিল। সেই কাজল এবার পঞ্চায়েত ভোট সামলাবেন জেলার।
কোর কমিটিতে এসেছেন শতাব্দী রায়ও। শতাব্দীর সঙ্গেও অনুব্রতর সম্পর্কের সমীকরণ সর্বজনবিদিত। বিধানসভা ভোটের আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শতাব্দী লিখেছিলেন, ‘বহু কর্মসূচির খবর আমাকে দেওয়া হয় না। মনে হয় কেউ কেউ চায় না আমি আপনাদের কাছে যাই।’ বীরভূমে কর্মসূচি কে দেন, কার দিকে ইঙ্গিত করেছিলেন শতাব্দী, তা নিয়ে মুখ খোলেননি কখনও। তবে নিজের মতো করে অনেকেই হিসাব মিলিয়ে নিয়েছিলেন সেদিন।
সোমবার বীরভূমে সাংগঠনিক বৈঠকে ছিলেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী তথা বীরভূম তৃণমূলের পরিদর্শক ফিরহাদ হাকিম। তিনি জানান, এই কোর কমিটিই নির্বাচনে কাজ করবে। একইসঙ্গে তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী একটা ‘গেট টুগেদার’ চেয়েছিলেন, সেইমতোই সকলের সঙ্গে দেখা করলেন। ফিরহাদ আশাবাদী, পঞ্চায়েত নির্বাচন শান্তিপূর্ণই হবে। বীরভূমে সব আসন তৃণমূলই জিতবে।