আলিপুর: ‘কথায়-কথায় চাকরি খাবেন না।’ মঙ্গলবার ঋষি অরবিন্দ ঘোষের জন্ম সার্ধশতবর্ষে আলিপুর জাজেস কোর্টে আবক্ষমূর্তি উন্মোচন করে এমনই বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। কলকাতা হাইকোর্টের চাকরি বাতিলের রায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সবাই তৃণমূল নয়। একজন রোজ কথায় কথায় চাকরি বাদ দিচ্ছে। কালও দুজন আত্মহত্যা করেছে। যদি কেউ ভুল করে তার দায় কেন সবাই নেবে। একটু ভেবে দেখবেন। কেন হাজার-হাজার ছেলে-মেয়ে সমস্যায় পড়বে। আইন অনুযায়ীই তাদের চাকরিটা ফিরিয়ে দিন। প্রয়োজনে নতুন করে পরীক্ষা নিন। যেমন নির্দেশ দেবেন সেই মতো কাজ করব।”
স্কুল সার্ভিস কমিশন মারফত চাকরি পাওয়া হাজার-হাজার ছেলে-মেয়েj চাকরি বাতিল হয়েছে সম্প্রতি। কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে চাকরি বাতিল হয়েছে। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, “কালই শুনেছি দুজন আত্মহত্যা করেছে। চাকরি পেয়ে অনেকে সংসার করেছে। বাড়িতে মা, স্ত্রী আছে। হঠাৎ করে চাকরি চলে গেলে খাবে কি?” এপ্রসঙ্গে আদালতের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, “যারা অন্যায় করেছে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। কিন্তু একটা সুযোগ তো দিন। এমন অন্তত ব্যবস্থা করুন যাতে তারা আবার পরীক্ষা দিয়ে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারে।”
যাদের চাকরি বাতিল গিয়েছে তারা সবাই তৃণমূলের ক্যাডার নয় বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “এখন রোজ কথায় কথায় ৩ হাজার, ৪ হাজার চাকরি বাদ। সবাই তো আর তৃণমূলের ক্যাডার নয়, সরকারের ক্যাডার নয়। আমার লোকও অন্যায় করে থাকলে ব্যবস্থা নেব। কিন্তু কেউ ভুল করলে তার দায় অন্যরা নেবে কেন? আমি বলব, একটু ভেবে দেখতে। কথায়-কথায় চাকরি খাবেন না।” এপ্রসঙ্গে নাম না করে বিরোধীদেরও তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। ক্ষোভের সুরে তিনি বলেন, “চাকরি দেওয়ার লোক নেই, চাকরি নিয়ে নিচ্ছে। PIL এখন পলিটিক্যাল ইনটারেস্ট লিটিগেশন হয়ে গেছে। আমাকে আপনার পছন্দ হতে নাও পারে, আমার দলকে আপনার পছন্দ নাও হতে পারে, আমার সরকারকে আপনার পছন্দ নাও হতে পারে, আমাকে মারুন যা কিছু করুন। কিন্তু দয়া করে রাজ্যটাকে বদনাম করে ছাত্র-যৌবনের খাওয়ার অধিকার কেড়ে নেবেন না। আইনজীবীদের কাছে আবেদন করছি, দয়া করে বিষয়টি ভেবে দেখবেন।”
এদিন প্রধান বিচারপতি উপস্থিত ছিলেন না। তাই বিশিষ্ট বিচারপতি সুব্রত তালুকদারকে বিষয়টা দেখার আবেদন জানালেন মমতা। এপ্রসঙ্গেই নিজে কিছু মামলায় লড়াই করারও ইচ্ছা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু, সময়ের অভাবে সেটা তিনি করতে পারছেন না জানিয়ে মমতা আরও বলেন, “সুযোগ পেলে আমাকে সুযোগ দেবেন, তাহলে কথা দিচ্ছি পয়সা নেব না।”