কলকাতা: করোনা সংক্রমণে রেকর্ড অব্যাহত। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশজুড়ে করোনা (Corona Cases Update) আক্রান্ত প্রায় ৪৭ হাজার। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৪৬ হাজার ৯৫১ জন। বাড়ল দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যাও। এক দিনে মৃত্যু হয়েছে ২১২ জনের। রবিবার, ছুটির দিনে পরীক্ষা হয়েছে ৮ লক্ষ ৮০ হাজার। কম টেস্ট সত্ত্বেও আক্রান্তের সংখ্যায় লাফ। পজিটিভিটি রেট ছুঁল ৫.৩৪ শতাংশ! এই নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল এক কোটি ষোলো লক্ষ পঁয়তাল্লিশ হাজার সাতশো উনিশ। দেশে সক্রিয় রোগী তিন লক্ষ ছত্রিশ হাজার তিনশো বিরানব্বই। মোট মৃত্যু এক লক্ষ ষাট হাজার পার।
পশ্চিমবঙ্গেও বাড়ছে করোনা। .৭ শতাংশ থেকে পজিটিভ রেট ২.৭৫ শতাংশ হয়েছে। সংক্রমণ বুদবুদের আকার ধারণ করে রয়েছে। বিস্ফোরণ হলেই মারাত্মক আকার নেবে। তাই সময় থাকতেই সতর্ক হতে হবে। না হলেই নাগপুর, কেরলের মতো করোনার উর্ধ্বমুখী দৌড়ে নাজেহাল হতে হবে বাংলাকেও। সংক্রমণের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে এমনই হুঁশিয়ারি দিচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের একাংশ।
রাজ্যের মধ্যে সংক্রমণের শীর্ষে এখন কলকাতা। ঠিক বছর খানেক আগে বাংলায় তখন আড়মোড়া ভাঙতে শুরু করেছিল করোনা ভাইরাস। বিষের ভাইরাস একুশের প্রথম তিন মাসে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে রেখেছিল। কিন্তু গত ৭২ ঘণ্টায় স্বস্তির সেই হাওয়া কার্যত উধাও। দ্রুত বাড়তে আক্রান্তের সংখ্যা। বাংলার আক্রান্তের সংখ্যায় প্রথম কলকাতা।
১৭ থেকে ১৯ মার্চের মধ্যে কলকাতায় মোট নতুন কেসের সংখ্যা ২৯৮। তার মধ্যে ফুলবাগানে ২৩, বালিগঞ্জে ২৫, ভবানীপুরে ২১, বেহালা-পর্ণশ্রী মিলিয়ে ৩৭।
সংক্রমণ বাড়ছে মূলত ভবানীপুর, বালিগঞ্জ. রিজেন্ট পার্ক, নেতাজিনগর, কড়েয়া, বেহালা, পর্ণশ্রী, হরিদেবপুর, ফুলবাগান, মানিকতলায়।
স্বাস্থ্য দফতর বলছে, কলকাতা পুরসভার ৮৯ ও ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রায় প্রতিদিনই নতুন কেস পাওয়া যাচ্ছে। এই ওয়ার্ডগুলির মধ্যে পড়ে যাদবপুর, গল্ফগ্রিন, রিজেন্টপার্ক, গড়ফা, কসবা, নেতাজিনগর।
যদিও দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে নমুনা পরীক্ষাউর হারও বেড়েছে। ১৪ মার্চ কলকাতায় ২৩৭৮টি নমুনা পরীক্ষা হয়। উত্তর ২৪ পরগনায় ২৪০৭, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১৯৪০, হাওড়ায় ৬৬৮, হুগলিতে ৫৪৫ টি নমুনা পরীক্ষা হয়।
১৮ মার্চ কলকাতায় নমুনা পরীক্ষা হয় ৩৭২৬টি উত্তর ২৪ পরগনায় ৩৫০৬ টি, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১৯৪০টি, হাওড়ায় ৬৬৮টি ও হুগলিতে ৫৪৫টি নমুনা পরীক্ষা হয়।
সংক্রমণে বাংলার পরিস্থিতি যাতে মহারাষ্ট্র বা কেরলের মতো না হয়, তার জন্য বিশেষ সতর্ক থাকতে বলছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক সদিচ্ছাও জরুরি বলে মনে করছেন তাঁরা। জয়েন্ট ডক্টরস আহ্বায়ক পুণ্যব্রত গুণ বলেন, “ইলেকশনের সময়ে যাতে জন সমাগম না হয়, তার জন্য রাজনৈতিক দলগুলির কাছে ওপেন অ্যাপ্লাই করি।” অন্যদিকে, জন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দোলুই বলেন, “সেকেন্ড ওয়েভ যেটাকে বলি, যখন কেস বাড়তে থাকে, সেদিকটা নজর রাখতে হবে। পশ্চিমবঙ্গ একটা প্রায় সেরকমই ফেজ দিয়ে যাচ্ছে। দিনকে দিন অল্প অল্প করে কেস বাড়ছে।”
আরও পড়ুন: হু হু করে বাড়ছে সংক্রমণ, এক-দু’দিনের মধ্যেই কি লকডাউন?
ভোট আবহের মধ্যেই কি কলকাতা সেকেন্ড ওয়েভের দোড়গোড়ায়, আশঙ্কা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।