কলকাতা: করোনা (Covid19) অতিমারির মধ্যেও কলকাতার বেশ কিছু এলাকায় ডেঙ্গু এবং ম্যালেরিয়ার আক্রান্তের সংখ্যা রীতিমত উদ্বেগের জায়গায় রেখেছে কলকাতা পুরনিগমকে। সেই সব জায়গার পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখতে নেমে পুরনিগমের হাতে উঠে এল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে ডেপুটি মেয়র তথা স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ সেই তথ্য তুলে ধরেন। তিনি জানান, ২০২১ সালের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ৬৯টি ওয়ার্ড এখনও ম্যালেরিয়াপ্রবণ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডগুলিতে ২০২১ সালে প্রতি ১০০০ জন পিছু ১ জন করে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। অন্যদিকে ডেঙ্গুপ্রবণ ওয়ার্ড ১৬টি। এখানেও প্রতি ১০০০ জন পিছু ১ জন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। তাই এই ওয়ার্ডগুলিতে চলতি বছরে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
১ নম্বর বরোর ৫টি ওয়ার্ড
২ নম্বর বরোর ৫টি ওয়ার্ড
৩ নম্বর বরোর ১টি ওয়ার্ড
৪ নম্বর বরোর ১০ টি ওয়ার্ড
৫ নম্বর বরোর ১১টি ওয়ার্ড
৬ নম্বর বরোর ১০টি ওয়ার্ড
৭ নম্বর বরোর ৪টি ওয়ার্ড
৮ নম্বর বরোর ১১টি ওয়ার্ড
৯ নম্বর বরোর ৬টি ওয়ার্ড
১০ নম্বর বরোর ৫টি ওয়ার্ড
১৩ নম্বর বরোর ১টি ওয়ার্ড
১ নম্বর বরোর ২টি ওয়ার্ড
৬ নম্বর বরোর ৩টি ওয়ার্ড
৭ নম্বর বরোর ২টি ওয়ার্ড
৮ নম্বর বরোর ২টি ওয়ার্ড
৯ নম্বর বরোর ১টি ওয়ার্ড
১০ নম্বর বরোর ৪টি ওয়ার্ড
১১ নম্বর বরোর ১টি ওয়ার্ড
১২ নম্বর বরোর ১টি ওয়ার্ড
এই তথ্যানুযায়ী দেখা গিয়েছে, কলকাতা পুরসভার ৪, ৫, ৬, ৮ এই চারটি বরোর অন্তর্গত ওয়ার্ডগুলি সবথেকে খারাপ অবস্থায় রয়েছে। বিশেষত করোনা অতিমারির সময় এই ওয়ার্ডগুলিতে সবথেকে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল। অতীন ঘোষ এদিন সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডগুলিতে বাইরে থেকে আসা লোকজনের সংখ্যা অনেক বেশি। পাশাপাশি করোনার সময় পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা এই ওয়ার্ডগুলিতে সবথেকে বেশি দেখা গিয়েছে। এই এলাকাগুলির উপরেই আমাদের বেশি নজর রয়েছে এবার। এই বরোর ওয়ার্ড গুলি নিয়ে আমাদের বিশেষ পরিকল্পনাও রয়েছে।”
অতীন ঘোষ জানান, গতবছর এই ওয়ার্ডগুলির যেসব বাসিন্দা ম্যালেরিয়া বা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। পুরনিগমের স্বাস্থ্যকর্মীরাও সেখানে বিশেষ নজর যাতে রাখেন, তার জন্য ইতিমধ্যেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ওয়ার্ডগুলিতে পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যেই ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা সবথেকে বেশি পাওয়া গিয়েছে। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে, ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত এখানকার রোগীরা ওষুধের ডোজ় সম্পূর্ণ করছেন না। ফলে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। পাশাপাশি তাঁর যুক্তি, এই ওয়ার্ডগুলিতে বস্তি, কারখানা, চামড়া পট্টি, জনবসতি অনেক বেশি। ফলে আক্রান্তের সংখ্যাও অনেকটাই বেশি।
২০১৯ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৬১৫৭ জন, ম্যালেরিয়া আক্রান্ত ১২৮৩২ জন ( সাধারণ ১২১১৭ এবং ফ্যালসিফেরাম ৭১৫)
২০২০ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত ২৩৫৪ জন, ম্যালেরিয়া আক্রান্ত ৭২৩৪ জন ( সাধারণ ৬২৬৭ এবং ফ্যালসিফেরাম ৯৬৭)
২০২১ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত ২৪৮১ জন, ম্যালেরিয়া আক্রান্ত ১৩৩৮৭ জন ( সাধারণ ৯১০০ এবং ফ্যালসিফেরাম ৪২৮৭)
২০২২ সালে জানুয়ারি থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত ৫৬ জন, ম্যালেরিয়া আক্রান্ত ২২৮ ( সাধারণ ১৭৩ এবং ফ্যালসিফেরাম ৫৫)
এদিন ডেপুটি মেয়র তথ্য দিয়ে বলেন, গতবছর মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধ সংক্রান্ত আইন না মানার জন্য মিউনিসিপ্যাল কোর্ট সবমিলিয়ে প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা জরিমানার টাকা আদায় করেছে। যদিও তিনি জানিয়েছেন এখনও কলকাতা পুর এলাকার ২৫ শতাংশ মানুষ এই সংক্রান্ত আইন মেনে চলছে না।