নীরবতা ভাঙলেন বুদ্ধদেব, ভোট বাংলায় লিখিত বিবৃতি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর

ঋদ্ধীশ দত্ত |

Mar 29, 2021 | 8:40 PM

স্বাস্থ্য পরিষেবা গরিব মানুষের আয়ত্তের বাইরে চলে গিয়েছে বলেও নিজের বিবৃতিতে লিখেছেন তিনি। একই সঙ্গে আসন্ন বিধানসভা ভোটে সংযুক্ত মোর্চাকে জয়যুক্ত করার আহ্বান তিনি জানিয়েছেন।

Follow Us

কলকাতা: নন্দীগ্রাম নিয়ে অবশেষে নিস্তব্ধতা ভাঙলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। এ দিন এক বিবৃতি প্রকাশ করে তিনি লিখেছেন, “১০ বছরে কৃষিতে রাজ্য পিছিয়ে পড়েছে। নন্দীগ্রাম-সিঙ্গুরে এখন শ্মশানের নীরবতা। সম্প্রীতির পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে পড়েছে। মহিলাদের নিরাপত্তা ও সম্ভ্রম আজ বিপন্ন। যুবকদের স্বপ্ন চুরমার হয়ে গিয়েছে। শিক্ষাঙ্গন কলুষিত।” স্বাস্থ্য পরিষেবা গরিব মানুষের আয়ত্তের বাইরে চলে গিয়েছে বলেও নিজের বিবৃতিতে লিখেছেন তিনি। একই সঙ্গে আসন্ন বিধানসভা ভোটে সংযুক্ত মোর্চাকে জয়যুক্ত করার আহ্বান তিনি জানিয়েছেন।

বুদ্ধবাবুর লিখিত বিবৃতি

২০০৭ সালের ১৪ মার্চ পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল নন্দীগ্রামের ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ১৪ জন সদস্যের। যা কাঠগড়ায় তুলেছিল তৎকালীন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আওতাধীন পুলিশ বাহিনীকে। নন্দীগ্রাম ও সিঙ্গুরের দুই জোড়া আন্দোলনই কার্যত নাড়িয়ে দিয়েছিল ৩৪ বছরের বাম শাসনের ভীত। এরপরের ঘটনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল সকলেই। কিন্তু, বছর ১৪ পর আচমকাই বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে নন্দীগ্রামের সেই ঘটনা। কারণ সেই আন্দোলনের নেত্রী তথা বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রবিবার আচমকাই বলেছেন, সেই ঘটনার দিন শিশির অধিকারী এবং শুভেন্দু অধিকারী যদি অনুমতি না দিতেন, তবে চটি পরিহিত পুলিশ নন্দীগ্রামে ঢুকতে পারত না।

মমতার এই একটি বক্তব্যই কার্যত তোলপাড় ফেলে দিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। তাহলে কি কোথাও প্রচ্ছন্নভাবে অধিকারীদের পুলিশ ঢোকানোর পদক্ষেপে সায় ছিল মমতার? বিস্ফোরক এই প্রশ্ন তুলতে শুরু করে দিয়েছেন বিরোধীরা। তারই মধ্যে বুদ্ধবাবুর এই বিবৃতি রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত অর্থবহ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

নিজের বিবৃতিতে অবশ্য নন্দীগ্রামের ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি তিনি। তবে নন্দীগ্রাম এবং সিঙ্গুরে ‘শ্মশানের নীরবতা’ বিরাজ করছে সে কথা উল্লেখ করেছেন। একই সঙ্গে কর্মসংস্থানের অভাব, সরকারি ক্ষেত্রে যথেষ্ট চাকরির সুযোগ তৈরি না হওয়া, এবং বাংলার মেধা অন্য রাজ্যে চলে যাওয়ার দিকেও তিনি আলোকপাত করেছেন। বুদ্ধবাবু লিখেছেন, “গত এক দশকে যুবদের কাজের স্বপ্ন চুরমার হয়ে গিয়েছে। দুর্নীতি, তোলাবাজি ও সিন্ডিকেট রাজ্যবাসীর জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে।” বিজেপির ‘সর্বনাশা আর্থিক নীতি এবং সাম্প্রদায়িক মেরুকরণকেও’ একহাত নিয়েছেন তিনি।  একই সঙ্গে চলতি বিধানসভা নির্বাচনে সংযুক্ত মোর্চাকে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি আশাপ্রকাশ করে লিখেছেন, “এরাই পারবে অন্ধকার থেকে রাজ্যকে বের করে আনতে।”

আরও পড়ুন: ফিরে দেখা নন্দীগ্রাম: লক্ষ্মণ শেঠের নোটিসে রাতারাতি বদলে গেল দেহাতি মানুষগুলো…তারপর

প্রসঙ্গত, ২৭ মার্চ বামেদের ব্রিগেড সমাবেশের আগের দিনও একই ধরনের লিখিত বিবৃতি দিয়েছিলেন বুদ্ধবাবু। সেখানে প্রকাশ পেয়েছিল সমাবেশে হাজির না থাকতে পেরে তাঁর মনের চাপা বেদনার কথা। প্রথম দফা ভোট মিটে যাওয়ার পর এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামের ঘটনায় শিশির-শুভেন্দুকে দোষারোপ করার পর এ বার ফের একবার  বিবৃতি দিলেন তিনি। ব্রিগেডের আগে অবশ্য তাঁর লিখিত বার্তা অনেকটাই চাঙ্গা করেছিল বাম কর্মী সমর্থকদের। তাঁর সোমবারের বিবৃতিতে দলীয় নেতৃত্ব কতটা উজ্জীবিত হলেন তা অবশ্য আগামী ২ মে পরিষ্কার হয়ে যাবে।

কলকাতা: নন্দীগ্রাম নিয়ে অবশেষে নিস্তব্ধতা ভাঙলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। এ দিন এক বিবৃতি প্রকাশ করে তিনি লিখেছেন, “১০ বছরে কৃষিতে রাজ্য পিছিয়ে পড়েছে। নন্দীগ্রাম-সিঙ্গুরে এখন শ্মশানের নীরবতা। সম্প্রীতির পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে পড়েছে। মহিলাদের নিরাপত্তা ও সম্ভ্রম আজ বিপন্ন। যুবকদের স্বপ্ন চুরমার হয়ে গিয়েছে। শিক্ষাঙ্গন কলুষিত।” স্বাস্থ্য পরিষেবা গরিব মানুষের আয়ত্তের বাইরে চলে গিয়েছে বলেও নিজের বিবৃতিতে লিখেছেন তিনি। একই সঙ্গে আসন্ন বিধানসভা ভোটে সংযুক্ত মোর্চাকে জয়যুক্ত করার আহ্বান তিনি জানিয়েছেন।

বুদ্ধবাবুর লিখিত বিবৃতি

২০০৭ সালের ১৪ মার্চ পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল নন্দীগ্রামের ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ১৪ জন সদস্যের। যা কাঠগড়ায় তুলেছিল তৎকালীন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আওতাধীন পুলিশ বাহিনীকে। নন্দীগ্রাম ও সিঙ্গুরের দুই জোড়া আন্দোলনই কার্যত নাড়িয়ে দিয়েছিল ৩৪ বছরের বাম শাসনের ভীত। এরপরের ঘটনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল সকলেই। কিন্তু, বছর ১৪ পর আচমকাই বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে নন্দীগ্রামের সেই ঘটনা। কারণ সেই আন্দোলনের নেত্রী তথা বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রবিবার আচমকাই বলেছেন, সেই ঘটনার দিন শিশির অধিকারী এবং শুভেন্দু অধিকারী যদি অনুমতি না দিতেন, তবে চটি পরিহিত পুলিশ নন্দীগ্রামে ঢুকতে পারত না।

মমতার এই একটি বক্তব্যই কার্যত তোলপাড় ফেলে দিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। তাহলে কি কোথাও প্রচ্ছন্নভাবে অধিকারীদের পুলিশ ঢোকানোর পদক্ষেপে সায় ছিল মমতার? বিস্ফোরক এই প্রশ্ন তুলতে শুরু করে দিয়েছেন বিরোধীরা। তারই মধ্যে বুদ্ধবাবুর এই বিবৃতি রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত অর্থবহ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

নিজের বিবৃতিতে অবশ্য নন্দীগ্রামের ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি তিনি। তবে নন্দীগ্রাম এবং সিঙ্গুরে ‘শ্মশানের নীরবতা’ বিরাজ করছে সে কথা উল্লেখ করেছেন। একই সঙ্গে কর্মসংস্থানের অভাব, সরকারি ক্ষেত্রে যথেষ্ট চাকরির সুযোগ তৈরি না হওয়া, এবং বাংলার মেধা অন্য রাজ্যে চলে যাওয়ার দিকেও তিনি আলোকপাত করেছেন। বুদ্ধবাবু লিখেছেন, “গত এক দশকে যুবদের কাজের স্বপ্ন চুরমার হয়ে গিয়েছে। দুর্নীতি, তোলাবাজি ও সিন্ডিকেট রাজ্যবাসীর জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে।” বিজেপির ‘সর্বনাশা আর্থিক নীতি এবং সাম্প্রদায়িক মেরুকরণকেও’ একহাত নিয়েছেন তিনি।  একই সঙ্গে চলতি বিধানসভা নির্বাচনে সংযুক্ত মোর্চাকে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি আশাপ্রকাশ করে লিখেছেন, “এরাই পারবে অন্ধকার থেকে রাজ্যকে বের করে আনতে।”

আরও পড়ুন: ফিরে দেখা নন্দীগ্রাম: লক্ষ্মণ শেঠের নোটিসে রাতারাতি বদলে গেল দেহাতি মানুষগুলো…তারপর

প্রসঙ্গত, ২৭ মার্চ বামেদের ব্রিগেড সমাবেশের আগের দিনও একই ধরনের লিখিত বিবৃতি দিয়েছিলেন বুদ্ধবাবু। সেখানে প্রকাশ পেয়েছিল সমাবেশে হাজির না থাকতে পেরে তাঁর মনের চাপা বেদনার কথা। প্রথম দফা ভোট মিটে যাওয়ার পর এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামের ঘটনায় শিশির-শুভেন্দুকে দোষারোপ করার পর এ বার ফের একবার  বিবৃতি দিলেন তিনি। ব্রিগেডের আগে অবশ্য তাঁর লিখিত বার্তা অনেকটাই চাঙ্গা করেছিল বাম কর্মী সমর্থকদের। তাঁর সোমবারের বিবৃতিতে দলীয় নেতৃত্ব কতটা উজ্জীবিত হলেন তা অবশ্য আগামী ২ মে পরিষ্কার হয়ে যাবে।

Next Article