Bus Service: অফিস টাইমেই ‘উধাও’ সরকারি বাস! কলকাতার রাস্তায় বাসের সংখ্যা শুনলে ভিরমি খাবেন নিত্যযাত্রীরা

TV9 Bangla Digital | Edited By: সায়নী জোয়ারদার

Apr 26, 2022 | 3:35 PM

Bus Problem: কলকাতায় মাসখানেক আগেও ৯০০টি সরকারি বাস চলত। সূত্রের খবর, এখন তা কমে ৫৭০-এ দাঁড়িয়েছে।

Follow Us

কলকাতা: করোনা গতির পথে কাঁটা হয়েছিল প্রথম থেকেই। দোসর এবার মহার্ঘ জ্বালানি। এই দুইয়ের কারণে রাস্তায় দিন দিন কমছে সরকারি বাস। কলকাতা থেকে বিভিন্ন জেলা, সর্বত্র একই ছবি। পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বারবারই জানিয়েছিলেন, রাস্তায় সরকারি বাসের কোনও অভাব হবে না। কিন্তু বাস্তব চিত্রটা মোটেই সে কথা বলছে না। এই গরমে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে বিরক্তি বাড়ছে নিত্যযাত্রীদের, বাড়ছে ক্ষোভও। কলকাতায় মাসখানেক আগেও ৯০০টি সরকারি বাস চলত। সূত্রের খবর, এখন তা কমে ৫৭০-এ দাঁড়িয়েছে। এই মুহূর্তে কলকাতায় ব্যাটারি চালিত বাসের সংখ্যা ৭৫টি। ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়েছে ৫০টি। পাইলট প্রজেক্ট হিসাবে ২টি সিএনজি বাসও চলছে শহরে। যাদবপুর এইটবি এই শহরের ব্যস্ততম বাস স্ট্যান্ড। এখান থেকে সল্টলেট, হাওড়া, বেহালার মতো রুটের সরকারি বাস ছাড়ে। কিন্তু এখন এই স্ট্যান্ডে বাসের আকাল।

ইতিমধ্যেই সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সাড়ে ৬ লক্ষ বাস, যাদের ফিটনেস সার্টিফিকেটের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে, সেগুলিকে নতুন করে রাস্তায় নামানো হবে। সাড়ে ৪০০ কোটি টাকার জরিমানা বকেয়া ছিল এই বাসগুলির। সেখান থেকে প্রায় সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা ছাড় দিচ্ছে সরকার। অর্থাৎ রাজস্বের ক্ষতি করে বাস নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে এটা কি সত্যিই কোনও সমাধান? বারবার যেখানে বলা হচ্ছে রাজ্যের তহবিল ফাঁকা, সেখানে কীভাবে এত টাকা ক্ষতি করে সাড়ে ৬ লক্ষ বাস রাস্তায় নামাচ্ছে?

আগে ভোরের দিকে বা রাত বাড়লেও যেটুকু সরকারি বাস জেলার মানুষ পেতেন, এখন সে গুড়ে বালি। যেমন ডিজেলের দাম বাড়তেই মুর্শিদাবাদে কমে গিয়েছে সরকারি বাসের সংখ্যা। এ জেলায় উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার একটি বাস ডিপো ছিল। এক বছর আগে দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ সংস্থার একটি ডিপো হয়। বর্তমানে উত্তরবঙ্গের ডিপো থেকে ২০টি রুটের আপ-ডাউন মিলিয়ে ৩০ থেকে ৪০টি বাস চলে। আগে এই সংখ্যা ছিল ৫০-এর কাছাকাছি। দক্ষিণবঙ্গের ডিপো থেকে ২৫ থেকে ৩০টি রুটে বাস চলাচল করে। এই সংখ্যায় খুব একটা হেরফের না হলেও এলাকার লোকজনের অভিযোগ, বাম জমানায় স্থানীয় রুটে বাস চলত। ধীরে ধীরে সেগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বহরমপুর ডিপো থেকে নিয়মিত বাস ধরেন এমন যাত্রীদের মত, মাসখানেক হল বাসের সংখ্যা কমে গিয়েছে। সকালের দু’টি বাস বন্ধ। দুপুর সাড়ে তিনটের পর বাস পরিষেবা মুখ থুবড়ে পড়ে। মালদহ, ধূলিয়ান থেকে কোনও বাসই পাওয়া যায় না। বেলডাঙা রুটে বড় জোর একটা বাস পাওয়া যায়।

উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতে গত চারদিনে সরকারি বাস অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। সারি সারি বাস দাঁড়িয়ে স্ট্যান্ডে। বাস চালকরা বলছেন, তেলের অভাবে বাস চালানো যাচ্ছে না। এক সময় এই বারাসত ডিপো থেকে ৭০টির উপরে বাস ছাড়ত। অথচ গত তিনদিন হল এই ডিপো থেকে তিনটি করে বাস ছাড়ছে। যাত্রী হয়রানি তো চলছেই। সন্ধ্যা বাড়লে তা মারাত্মক চেহারা নেয়। বারাসত থেকে বাদুড়িয়া, হাসনাবাদ, টাকি, বনগাঁর মতো প্রত্যন্ত এলাকায় যাওয়ার জন্য সন্ধ্যায় কোনও বাস নেই। এমনও শোনা যাচ্ছে, এই জেলা থেকে দূরপাল্লার যে সমস্ত বাস যায়, দিঘা, পুরুলিয়া, বহরমপুর সমস্ত বাসই এখন বন্ধ। ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের এক কর্মীর গলায় কার্যত ক্ষোভের সুর, “বলছে তেল নেই। তেল তো অনেকদিন হল। কর্তৃপক্ষও তো জানে। এমডি, জয়েন্ট এমডি সকলেই জানেন। এবার ডিপোতে এসে আলোচনা তো করতে হবে। জানতেও চান না কেউ কেন গাড়ি চলছে না।”

পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলেও এক ছবি। সরকারি বাস চাহিদা অনুসারে কম চলছে। আসানসোল কলকাতা, আসানসোল হলদিয়া, আসানসোল বাঁকুড়া, আসানসোল পুরুলিয়া, বা মালদহ রুটে সরকারি বাস চলে। কিন্তু সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছে। আসানসোল থেকে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগের জন্য মানুষের ভরসা বলতে বেসরকারি বাস। আসানসোল থেকে এই মুহূর্তে প্রায় ৫৫ থেকে ৬০টি সরকারি বাস বিভিন্ন রুটে চলাচল করে। সেখানে বেসরকারি বাসের সংখ্যা ২৫০। সাধারণ মানুষের দাবি, আসানসোল থেকে সরকারি বাস অন্তত ১৫০টি চলাচল করলে হয়রানি কম হয়।

রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি এই সঙ্কটের অন্যতম কারণ। ফিরহাদের কথায়, “আমরা এখন যে কোনও বাস ক্ষতিতেই চালাচ্ছি। এত দাম পেট্রোপণ্যের। খুব শিগগিরি কিছু ব্যাটারিচালিত বাস পাচ্ছি আমরা। প্রতি মাসে ১৫-১৬টা করে এই বাস পাব। কিছু সিএনজি বাস আমরা চালু করছি। ধীরে ধীরে সব বাসই সিএনজি হয়ে যাবে। আশা করছি, সিএনজি আর ব্যাটারিচালিত বাস হয়ে গেলে এই সমস্যা মিটে যাবে।”

 

আরও পড়ুন: BJP Bikash Bhawan Chalo: দাবদাহের কলকাতায় পারদ চড়াতে আজ বিজেপির বিকাশ ভবন অভিযান, অনুমতি নেই পুলিশের

কলকাতা: করোনা গতির পথে কাঁটা হয়েছিল প্রথম থেকেই। দোসর এবার মহার্ঘ জ্বালানি। এই দুইয়ের কারণে রাস্তায় দিন দিন কমছে সরকারি বাস। কলকাতা থেকে বিভিন্ন জেলা, সর্বত্র একই ছবি। পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বারবারই জানিয়েছিলেন, রাস্তায় সরকারি বাসের কোনও অভাব হবে না। কিন্তু বাস্তব চিত্রটা মোটেই সে কথা বলছে না। এই গরমে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে বিরক্তি বাড়ছে নিত্যযাত্রীদের, বাড়ছে ক্ষোভও। কলকাতায় মাসখানেক আগেও ৯০০টি সরকারি বাস চলত। সূত্রের খবর, এখন তা কমে ৫৭০-এ দাঁড়িয়েছে। এই মুহূর্তে কলকাতায় ব্যাটারি চালিত বাসের সংখ্যা ৭৫টি। ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়েছে ৫০টি। পাইলট প্রজেক্ট হিসাবে ২টি সিএনজি বাসও চলছে শহরে। যাদবপুর এইটবি এই শহরের ব্যস্ততম বাস স্ট্যান্ড। এখান থেকে সল্টলেট, হাওড়া, বেহালার মতো রুটের সরকারি বাস ছাড়ে। কিন্তু এখন এই স্ট্যান্ডে বাসের আকাল।

ইতিমধ্যেই সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সাড়ে ৬ লক্ষ বাস, যাদের ফিটনেস সার্টিফিকেটের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে, সেগুলিকে নতুন করে রাস্তায় নামানো হবে। সাড়ে ৪০০ কোটি টাকার জরিমানা বকেয়া ছিল এই বাসগুলির। সেখান থেকে প্রায় সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা ছাড় দিচ্ছে সরকার। অর্থাৎ রাজস্বের ক্ষতি করে বাস নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে এটা কি সত্যিই কোনও সমাধান? বারবার যেখানে বলা হচ্ছে রাজ্যের তহবিল ফাঁকা, সেখানে কীভাবে এত টাকা ক্ষতি করে সাড়ে ৬ লক্ষ বাস রাস্তায় নামাচ্ছে?

আগে ভোরের দিকে বা রাত বাড়লেও যেটুকু সরকারি বাস জেলার মানুষ পেতেন, এখন সে গুড়ে বালি। যেমন ডিজেলের দাম বাড়তেই মুর্শিদাবাদে কমে গিয়েছে সরকারি বাসের সংখ্যা। এ জেলায় উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার একটি বাস ডিপো ছিল। এক বছর আগে দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ সংস্থার একটি ডিপো হয়। বর্তমানে উত্তরবঙ্গের ডিপো থেকে ২০টি রুটের আপ-ডাউন মিলিয়ে ৩০ থেকে ৪০টি বাস চলে। আগে এই সংখ্যা ছিল ৫০-এর কাছাকাছি। দক্ষিণবঙ্গের ডিপো থেকে ২৫ থেকে ৩০টি রুটে বাস চলাচল করে। এই সংখ্যায় খুব একটা হেরফের না হলেও এলাকার লোকজনের অভিযোগ, বাম জমানায় স্থানীয় রুটে বাস চলত। ধীরে ধীরে সেগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বহরমপুর ডিপো থেকে নিয়মিত বাস ধরেন এমন যাত্রীদের মত, মাসখানেক হল বাসের সংখ্যা কমে গিয়েছে। সকালের দু’টি বাস বন্ধ। দুপুর সাড়ে তিনটের পর বাস পরিষেবা মুখ থুবড়ে পড়ে। মালদহ, ধূলিয়ান থেকে কোনও বাসই পাওয়া যায় না। বেলডাঙা রুটে বড় জোর একটা বাস পাওয়া যায়।

উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতে গত চারদিনে সরকারি বাস অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। সারি সারি বাস দাঁড়িয়ে স্ট্যান্ডে। বাস চালকরা বলছেন, তেলের অভাবে বাস চালানো যাচ্ছে না। এক সময় এই বারাসত ডিপো থেকে ৭০টির উপরে বাস ছাড়ত। অথচ গত তিনদিন হল এই ডিপো থেকে তিনটি করে বাস ছাড়ছে। যাত্রী হয়রানি তো চলছেই। সন্ধ্যা বাড়লে তা মারাত্মক চেহারা নেয়। বারাসত থেকে বাদুড়িয়া, হাসনাবাদ, টাকি, বনগাঁর মতো প্রত্যন্ত এলাকায় যাওয়ার জন্য সন্ধ্যায় কোনও বাস নেই। এমনও শোনা যাচ্ছে, এই জেলা থেকে দূরপাল্লার যে সমস্ত বাস যায়, দিঘা, পুরুলিয়া, বহরমপুর সমস্ত বাসই এখন বন্ধ। ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের এক কর্মীর গলায় কার্যত ক্ষোভের সুর, “বলছে তেল নেই। তেল তো অনেকদিন হল। কর্তৃপক্ষও তো জানে। এমডি, জয়েন্ট এমডি সকলেই জানেন। এবার ডিপোতে এসে আলোচনা তো করতে হবে। জানতেও চান না কেউ কেন গাড়ি চলছে না।”

পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলেও এক ছবি। সরকারি বাস চাহিদা অনুসারে কম চলছে। আসানসোল কলকাতা, আসানসোল হলদিয়া, আসানসোল বাঁকুড়া, আসানসোল পুরুলিয়া, বা মালদহ রুটে সরকারি বাস চলে। কিন্তু সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছে। আসানসোল থেকে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগের জন্য মানুষের ভরসা বলতে বেসরকারি বাস। আসানসোল থেকে এই মুহূর্তে প্রায় ৫৫ থেকে ৬০টি সরকারি বাস বিভিন্ন রুটে চলাচল করে। সেখানে বেসরকারি বাসের সংখ্যা ২৫০। সাধারণ মানুষের দাবি, আসানসোল থেকে সরকারি বাস অন্তত ১৫০টি চলাচল করলে হয়রানি কম হয়।

রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি এই সঙ্কটের অন্যতম কারণ। ফিরহাদের কথায়, “আমরা এখন যে কোনও বাস ক্ষতিতেই চালাচ্ছি। এত দাম পেট্রোপণ্যের। খুব শিগগিরি কিছু ব্যাটারিচালিত বাস পাচ্ছি আমরা। প্রতি মাসে ১৫-১৬টা করে এই বাস পাব। কিছু সিএনজি বাস আমরা চালু করছি। ধীরে ধীরে সব বাসই সিএনজি হয়ে যাবে। আশা করছি, সিএনজি আর ব্যাটারিচালিত বাস হয়ে গেলে এই সমস্যা মিটে যাবে।”

 

আরও পড়ুন: BJP Bikash Bhawan Chalo: দাবদাহের কলকাতায় পারদ চড়াতে আজ বিজেপির বিকাশ ভবন অভিযান, অনুমতি নেই পুলিশের

Next Article