কলকাতা : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে (Mamata Banerjee) চিঠি পাঠালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar)। চিঠিতে রাজ্যের বর্তমান আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করতে চান তিনি। বুধবারই মমতার সঙ্গে কথা বলতে চান ধনখড়। হাঁসখালির মৃত নাবালিকাকে গণধর্ষণের যে অভিযোগ উঠেছে, তাতে নাম জড়িয়েছে স্থানীয় দাপুটে তৃণমূল নেতার ছেলের। ঘটনায় তোলপাড় হচ্ছে রাজ্য রাজনীতি। হাইকোর্ট ইতিমধ্যেই হাঁসখালির ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। উল্লেখ্য, বুধবার বিকেল চারটের সময় হাঁসখালির ঘটনার রিপোর্ট নিয়ে রাজভবনে ডেকে পাঠানো হয়েছে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্যকে। এবার এরই মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠালেন রাজ্যপাল। আজকের মধ্যেই আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা চান তিনি।
এর পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টে যে বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেছে, সেই নিয়েও যথেষ্ট উদ্বিগ্ন রাজ্যপাল। এই নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা চান তিনি। অবিলম্বে আজকেই যাতে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালের মধ্যে এই দুই বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়, সেই অনুরোধ করেছেন জগদীপ ধনখড়। তবে এই আলোচনা মুখ্যমন্ত্রী রাজভবনে গিয়ে করবেন, নাকি ফোনেও রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে আলোচনা হবে, সেই নিয়ে চিঠিতে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে রাজভবন বা নবান্নের তরফেও কিছু জানা যায়নি এখনও। তবে রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতে, যখন পশ্চিমবঙ্গের একের পর এক ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিচ্ছে হাইকোর্ট, তখন মুখ্যমন্ত্রীকে রাজ্যপালের লেখা এই চিঠি যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবারই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ এসএসসি দুর্নীতির মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আরও বলেছিলেন, হাজিরা এড়াতে তিনি কোনওভাবেই এসএসকেএম হাসপাতালে যেতে পারবেন না। এরপরই তড়িঘড়ি ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন তিনি। হাইকোর্টে বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি আনন্দ মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ পূর্বের সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দেন গতকালই। সেই স্থগিতাদেশ বুধবার আরও চার সপ্তাহের জন্য বাড়িয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। এদিকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে বসে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূলপন্থী আইনজীবীরা। হাইকোর্টের এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এবং রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, এই দুই ইস্যু নিয়েই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দ্রুত আলোচনা চান রাজ্যপাল।